কোটা আন্দোলন: বৃহস্পতিবার সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা
প্রকাশ : 2024-07-17 20:39:17১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সারাদেশে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ঘোষণা করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। প্রধানমন্ত্রীর জাতির উদ্দেশ্য ভাষণের পর বুধবার (১৭ জুলাই) সন্ধ্যা ৭টা ৫৫ মিনিটে তাদের ফেসবুক পেজে পোস্টের মাধ্যমে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।
এর আগে, সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জাতির উদ্দেশ্য ভাষণে আদালতে শিক্ষার্থীরা ন্যায়বিচার পাবে এমন প্রত্যাশার কথা জানিয়ে সর্বোচ্চ আদালতের রায় পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এছাড়া কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে হত্যা ও সংঘর্ষের ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত হবে বলে জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, কোটা আন্দোলনের শুরু থেকেই সরকার ধৈর্যের সঙ্গে বিষয়টি মোকবিলা করে। কিছু মহল আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হয়। এর ফলে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ঘিরে যে সব ঘটনা ঘটেছে তা খুবই বেদনাদায়ক ও দুঃখজনক। অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝরে গেল। আপনজন হারানোর বেদনা যে কত কষ্টের তা আমার থেকে আর কে বেশি জানে।
সরকারপ্রধান বলেন, কিছু মহল এই আন্দোলনের সুযোগ নিয়ে উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করার সুযোগ নিয়েছে, অহেতুক কতগুলো মূল্যবান জীবন ঝরে গেছে। প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাই। যারা উসকানি দিচ্ছে তাদের চিহিৃত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়ে সরকারপ্রধান নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা ও পাশে থাকার আশ্বাস দেন তিনি।
উল্লেখ্য, চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলন গত সোমবার (১৬ জুলাই) বেশ সহিংস রূপ নেয়। এদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের সঙ্গে কোটাবিরোধীদের তুমুল সংঘর্ষ হয়। এতে উভয়পক্ষের তিনশর মতো শিক্ষার্থী আহত হয়। বিশেষ করে গতকাল মঙ্গলবার (১৭ জুলাই) কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সারাদেশের পরিস্থিতি ছিল বেশি উত্তপ্ত।
এদিন বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে ছয়জন মারা যায়। আহত হয় কয়েকশ আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী। এ অবস্থায় শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনায় সারাদেশের সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং অধিভুক্ত কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধের নির্দেশনা দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। একইসঙ্গে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও তাদের সব কলেজ বন্ধ ঘোষণা করেছে।
আজ দুপুরে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে প্রথম দফায় ও দ্বিতীয় দফায় ভিসি চত্বরের সামনে গায়েবানা জানাজা পড়েন। এরপর তারা কফিন মিছিল নিয়ে ভিসি চত্বর থেকে টিএসসির দিকে রওনা দিলে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে।
তারও আগে, টিএসসি এলাকা থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আক্তার হোসেনসহ দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। তাকে আটক করার সময় অন্তত ৫টি সাইন্ড গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটায় পুলিশ।
এদিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেটের জরুরি সভায় বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পাশাপাশি সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে সব আবাসিক শিক্ষার্থীদের হল ছাড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে ঢাবি কর্তৃপক্ষের নির্দেশ প্রত্যাখ্যান করেছে আন্দোলনকারীরা। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বাসভবনের সামনে শিক্ষার্থীরা সমবেত হয়ে হল না ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন।