কিংবদন্তী অভিনেতার প্রয়াণ দিবস

প্রকাশ : 2022-12-04 15:17:04১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

কিংবদন্তী অভিনেতার প্রয়াণ দিবস

বলবীর রাজ কাপুর (জন্ম: ১৮ মার্চ, ১৯৩৮ - মৃত্যু: ৪ ডিসেম্বর, ২০১৭), যিনি শশী কাপুর নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন বিখ্যাত ভারতীয় অভিনেতা ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। এছাড়াও, হিন্দি চলচ্চিত্র অঙ্গনে চলচ্চিত্র পরিচালক ও সহকারী পরিচালকের দায়িত্ব পালন করেছেন শশী কাপুর।

ভারতের বলিউডের চলচ্চিত্রে মুখ্য ভূমিকা পালনকারী বিখ্যাত কাপুর পরিবারের অন্যতম সদস্য তিনি। ব্যাপকসংখ্যক হিন্দিভাষী চলচ্চিত্রের পাশাপাশি স্বল্পসংখ্যক ইংরেজি ভাষার চলচ্চিত্রেও তার অংশগ্রহণ রয়েছে।

২০১১ সালে চলচ্চিত্র শিল্পে অসামান্য অবদান রাখার প্রেক্ষিতে ভারত সরকার কর্তৃক পদ্মভূষণ পদকে ভূষিত হন। ২০১৫ সালে দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার লাভ করেন। পৃথ্বীরাজ কাপুর ও রাজ কাপুরের পর কাপুর পরিবারের তৃতীয় সদস্যরূপে ভারতীয় চলচ্চিত্রের সর্বোচ্চ সম্মাননা পান।

পোস্ট বক্স ৯৯৯-এ সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার সুযোগ পান। উল্লেখ্য যে, এ চলচ্চিত্রটি সুনীল দত্তের অভিষেক চলচ্চিত্র ছিল। ১৯৬১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ধর্মপুত্র চলচ্চিত্রে নায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। এরপর থেকে ১১৬টি হিন্দি চলচ্চিত্রে অংশ নিয়েছেন। তন্মধ্যে, ৬১টিতে একক নায়ক, ৫৫টিতে বহুনায়কের অংশগ্রহণ এবং ২১টিতে পার্শ্ব অভিনেতা ও ৭টি চলচ্চিত্রে বিশেয দৃশ্যে হাজির হন।

১৯৬০-এর দশক থেকে শুরু করে ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত বলিউডের অত্যন্ত জনপ্রিয় তারকায় পরিণত হয়েছিলেন। ১৯৬৩ সালে দ্য হাউজহোল্ডার ও শেক্সপিয়ার-ওয়াল্লার ন্যায় ইংরেজি ভাষার চলচ্চিত্রসমূহে অংশ নেন। ভারতের অন্যতম প্রথম অভিনেতাদের একজনরূপে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র অঙ্গনে অংশ নিয়েছেন তিনি। অভিনেত্রী নাদিরার সাথে আবেগময় চলচ্চিত্র চার দিওয়ারি এবং মেহেন্দি লাগি মেরে হাতের ন্যায় সামাজিক চলচ্চিত্রে অংশ নিয়ে সাড়া জাগান। ১৯৬০-এর দশকে অভিনেত্রী নন্দা সাথেও বেশ কয়েকটি চলচ্চিত্রে জুটি গড়েন। ১৯৯০-এর দশকে এক স্বাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, নন্দা তার প্রিয় নায়িকা এবং অন্যতম পরামর্শদাত্রী ছিলেন। অন্যদিকে, নন্দাও শশী কাপুরকে তার প্রিয় নায়করূপে স্বীকার করেছেন।

১৯৬০-এর দশকের শেষভাগ থেকে আশির দশকের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত রাখী, শর্মিলা ঠাকুর, জিনাত আমানের সাথে জুটি গড়েন। এছাড়াও, হেমা মালিনী, পারভিন ববি ও মৌসুমি চট্টোপাধ্যায়ের সাথেও নায়কের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন তিনি। তন্মধ্যে, হেমা মালিনীর বিপরীতে ১০টি চলচ্চিত্রে ছিলেন। বহুনায়ক নিয়ে গড়া প্রেম কাহানীতে রাজেশ খান্নার সাথেও কাজ করেছেন।

১৯৭৮ সালে নিজস্ব চলচ্চিত্র নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ফিল্ম ভালাস প্রতিষ্ঠা করেন। এ প্রতিষ্ঠান থেকে জুনুন, কলিযুগ, ৩৬ চৌরঙ্গী লেন, বিজেতা ও উৎসব নির্মাণ করেন। ১৯৯১ সালে তার নির্দেশনায় ও পরিচালনায় আজুবা মুক্তি পায়। এতে তিনি সহনায়ক হিসেবে অমিতাভ বচ্চন ও ভাইপো ঋষি কাপুরের সাথে অংশ নেন।

চলচ্চিত্র জীবনের শুরু থেকে নন্দা, প্রাণ, ধর্মেন্দ্র, দেব আনন্দ, ইসমাইল মার্চেন্ট, রাজেশ খান্না, সঞ্জীব কুমার তার নিকটতম বন্ধু ছিলেন। এছাড়াও, অমিতাভ বচ্চন, যশ চোপড়া, এমজিআর, কিশোর কুমার, মোহাম্মদ রফি, লতা মঙ্গেশকরসহ অনেকের সাথেই জানাশোনা ছিল তার।

১৯৮৭ সাল থেকে খুব কমই অভিনেতা হিসেবে কাজ করেছেন। ১৯৮৮ সালে পিয়ার্স ব্রসনানের সাথে দ্য ডিসিভার্স চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।[১১] ১৯৯৪ সালে মুহাফিজ চলচ্চিত্রের জন্য জাতীয় পুরস্কার বিশেষ লাভ করেন। ১৯৯৬ সালে গালিভার্স ট্রাভেলসের টেলিভিশন সংস্করণে রাজা চরিত্রে ছিলেন। চলচ্চিত্রে তার সর্বশেষ ও সাম্প্রতিক অংশগ্রহণ ছিল ১৯৯৮ সালের মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ'র আত্মজীবনীভিত্তিক চলচ্চিত্র জিন্নাহ। ঐ চলচ্চিত্রে তিনি অনুবাদক ছিলেন। এছাড়াও, মার্চেন্ট আইভরি প্রোডাকশন্স থেকে একই সালের মুক্তিপ্রাপ্ত সাইড স্ট্রিটসেও একই ভূমিকায় ছিলেন। ১৯৯০-এর দশকের শেষদিকে চলচ্চিত্র জগৎ থেকে পুরোপুরিভাবে অবসর নেন। এরপর থেকে তাকে আর কোন চলচ্চিত্রে অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়নি।

১৯৮৪ সালে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে জেনিফারের দেহাবসান ঘটে। ২০ জুলাই, ২০১২ তারিখে আন্ধেরির কোকিলাবেন হাসপাতালে তার অস্ত্রোপচার হয়। একইদিন তিনি হাসপাতাল থেকে মুক্তি পান।