কাউনিয়ায় লাভবান হওয়ার সোনালী স্বপ্ন দেখছেন কৃষক
প্রকাশ : 2024-08-21 18:06:27১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
দেশের নানা অস্থিরতার মাঝেও বসে নেই আমাদের কৃষক। ফসলকে পোকামাকর থেকে রক্ষা করতে লাইফ পাচিং ও ডেট পাচিং স্থাপন করছেন জমিতে। আর কিছু দিন পরেই সবুজ মাঠ থেকে সোনলী ধান ঘরে আসবে তাই রংপুরের কাউনিয়ার কৃষক-কৃষাণী এখন সোনালী স্বপ্নে বিভোর। চলতি আমন মৌসুমে প্রকৃতির বৈরিতার পরেও সম্পুরক সেচ দিয়ে আমন চারা রোপণ করেছেন চাষিরা। প্রখর রোদ আর ঝিরঝিরে বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ক্ষেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। চারা রোপণের পরপরই দফায় দফায় বৃষ্টি আর কৃষকের নিবিড় পরিচর্যায় রোপণ করা চারা দ্রুত বেড়ে উঠেছে। সবুজে ছেঁয়ে গেছে মাঠের পর মাঠ। ভাদ্রের তালপাকা গরম ও হাল্কা হাওয়ায় দোল খাচ্ছে দিগন্ত জুড়ে সবুজের চাদরে ঢাকা ধান ক্ষেত যেনো কৃষকের সোনালী স্বপ্নে হাতছানি।
কৃষকের স্বপ্ন পূরণে নিরলস কাজ করছে কৃষি বিভাগ। তাদের আন্তরিকতায় কৃষিতে লেগেছে আধুনিকতার ছোঁয়া। যান্ত্রিক পদ্ধতিতে জমিতে ধানের চাষা রোপনে কাজ করেছেন কৃষকেরা। উপজেলাজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে ৭হাজার ৫৯৭ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে। শাহাবাজ ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মোহর আলী জানান তার ব্লকে পাচিং হয়েছে ৪৫০ হেক্টর, নিজপাড়া ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা বাদল চন্দ্র বর্মন জানান, তার ব্লকে ৫২০ হেক্টর, হলদীবাড়ি ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ মাহফুজ আলম জানান, তার ব্লকে ২৬০ হেক্টর, হারাগাছ পৌরসভা ব্লকের উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মোঃ সাইয়েদুল ইসলাম জানান, তার ব্লকে ৬৬০ হেক্টর জমিতে পাচিং করা হয়েছে। এপর্যন্ত উপজেলায় ৫৫০০ হেক্টর জমিতে কৃষক পার্চিং পদ্ধতিতে প্রকৃতিক উপায়ে মাজরা ও পাতা মোড়ানো পোকা দমন করছেন।
সরজমিন বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে আমন ধান চাষের বিষয়ে জানতে চাইলে নিজপাড়া গ্রামের ধান চাষী প্রহলাদ চন্দ্র বলেন, এ বছর চারা রোপণের সময় পানির অভাবে সেচ দিয়ে চারা রোপণ করছি। এখন অবশ্য দু’এক দিন পরপর বৃষ্টি হচ্ছে। ক্ষেতের অবস্থা আপাতত ভালোই দেখা যাচ্ছে। তবুও যাকে কোনো রকম ক্ষতি না হয় সে জন্য নিয়মিত কীটনাশক স্প্রে করছি তা ছাড়া কৃষি বিভাগের পরামর্শে পাচিং করায় পোকার হাত থেকে বাঁচা গেছে। টেপামধুপুরের চর গনাই গ্রামের কৃষক মোঃ দুদু মিয়া, হলদীবাড়ি গ্রামের আলহাজ¦ মজিবর রহমান বলেন, চলতি আমন মৌসুমে কৃষি অফিস থেকে আমাদেরকে বিনামূল্যে সার ও স্বল্পমেয়াদী উচ্চফলনশীল হাইব্রিড ধানবীজ দিয়েছে। আমরা কৃষি অফিসের পরামর্শ মত বীজ বপন ও রোপন করেছি। বর্তমানে ক্ষেতের চেহারা খুব ভালো। আশা করি অন্যান্য বারের চেয়ে অধিক ফসল ঘরে তুলতে পারবো।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ মনিরুজ্জামান জানান, আমি নিজে এবং সকল উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ ও সেবা দিয়ে যাচ্ছি। চলতি মৌসুমে লাইফ পার্চিং করা হয়েছে ২হাজার ৫’শ হেক্টর এবং ডেড পার্চিং করা হয়েছে ৫ হাজার ৯৭ হেক্টর জমিতে। তিনি জানান বর্তমানে জমির যে অবস্থা যদি কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হবে তবে উৎপাদন লক্ষ্য মাত্রা অর্জন হবে।