কাউনিয়ায় নরসুন্দর পেশা ছেড়ে দিচ্ছেন অনেকই
প্রকাশ : 2024-09-02 16:21:42১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
কাউনিয়া উপজেলায় একটা সময় ছিল, যখন গ্রামে গ্রামে ঘুরে, বিভিন্ন হাট বাজারে চুল-দাড়ি কাটতেন অসংখ্য নরসুন্দর কর্মী, এখন তেমন একটা দেখা মিলেনা সেই নরসুন্দর কর্মীদের। আধুনিকতার ছোঁয়ায় পেশা বদল করতে বাধ্য হচ্ছেন নরসুন্দর কর্মীরা। প্রতিটি হাট বাজারে উন্নত আধুনিক মানের সেলুন গড়ে উঠায় ও মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতিতে আধুনিকতার ছোঁয়ায় হাটে পিড়িতে বসে মানুষ আর চুল- দাড়ি কাটতে চায় না। এছারা সেলুন গুলোতে উন্নত মানের প্রসাধনী ব্যবহারের ফলে বহুকালের ঐতিহ্যগত চুলকাটার কারিগরদের খুব কমই দেখা যায় হাটে-ঘাটে, চর ও গ্রামাঞ্চলে। অনেকেই পিড়িঁতে বসে চুল কাটতে লজ্জাবোধ করেন, অথচ সেই ছোট বেলায় বাবার হাত ধরে কে না গিয়েছে নিকটতম হাটে পিড়িঁতে বসে চুল কাটতে। আবার কিছু ছিল গ্রামে গ্রামে বিভিন্ন গৃহস্থ বাড়িতে গিয়ে চুল- দাড়ি কাটতো এবং মৌসুমে মৌসুমে তার বিনিময়ে ধান নিত। সরেজমিনে কাউনিয়া তকিপল হাটে গিয়ে কয়েকজন বয়োজ্যেষ্ঠ নরসুন্দরের সাথে কথা হলে তারা জানান, এখন আর আগের মতো হাটে কাজ হয় না। আধুনিকতা ও অর্থনৈতিক উন্নতির ফলে মানুষ হাটে এসে পিড়িতে বসে চুল-দাড়ি কাটতে চায় না। নরসুন্দর শাহ আলম জানান, তারা এখন ১৫ টাকায় চুল- দাড়ি কাটেন। তবুও আগের মতো আয় রোজগার হয় না। নরসুন্দর ধরনী শিল জানান তার বাড়ী বালাপাড়া ইউনিয়নের হরিচরনলস্কর গ্রামে, তিনি প্রায় ৩০ বছর ধরে বিভিন্ন হাট বাজারে, গ্রামে গ্রামে ঘুরে নরসুন্দরের কাজ করেন। শুরুতে ১টাকায় চুল, ২৫ পয়সায় দাড়ি গোঁফ কাটতেন, তখনই ভালো আয় রোজগার হতো আর এখন বাজার মূল্য বাড়লেও সারাদিন ঘুরে ক্লান্ত হয়ে বাড়ী ফিরেন রোজগার ভাল হয়না। তিনি বহু বছরের ঐতিহ্য বাব-দাদার পেশাটা ছাড়তে পারছেন না। নরসুন্দও রনজিৎ জানান গ্রামে গঞ্জে কাজ করলে সকল বয়সের প্রিয় মানুষের দেখা মিলে যা এই বৃদ্ধ বয়সে মনের প্রশান্তি আনে। অন্য পেশায় যাওয়ার কোন উপায় নাই। অর্থেও অভাবে ভাল একটি সেলুনের দোকান দিতে পারেন না। তাদের যন্ত্রাংশ রাখার পাত্রটি একটি বাজারের ব্যাগে করে ঘুরে বেড়ান গ্রামে গ্রামে। তাদেও দুঃখ কষ্টের কথা কেউ শুনে না। এই পেশায় আয় কমে যাওয়ায় দিনদিন অন্য পেশায় চলে যাচ্ছে। এই পেশা কে টিকিয়ে রাখতে সরকারী ভাবে উদ্যোগ গ্রহন করা প্রয়োজন বলে বিজ্ঞ মহল মনে করেন।