কাউনিয়ায় গনাই গবরার দোলায় শতশত একর জমি আনাবাদি

প্রকাশ : 2023-10-13 18:09:54১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

কাউনিয়ায় গনাই গবরার দোলায় শতশত একর জমি আনাবাদি

কাউনিয়ার টেপামধুপুর ইউনিয়নের গনাই গ্রাম। এ গ্রামটি কৃষি নির্ভর। গ্রামবাসীর আয়ের উৎস কৃষি ফসল। এই গ্রামের গোবরার দোলায় পানি নিস্কাশনের অভাবে প্রায় ৩শত একর জমিতে আমন ধান চাষা করতে পারছেন না কৃষক। দেশের চালিকা শক্তি হিসেবে কৃষি অগ্রণী ভূমিকা রাখলেও কাউনিয়া পিছিয়ে যাচ্ছে। কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একইি  জমি যেন খালি না থাকে সে নির্দেশ দিলেও কাউনিয়া তা মানা হচ্ছে না। 

সরেজমিনে গনাই গ্রামের গবরার দোলায় গিয়ে দেখাগেছে পানি নিস্কাশনের অভাবে প্রায় ৩শ একর জমি অনাবাদী থেকে যাচ্ছে বছরের পর বছর। এই দোলার অনেক জমি এখনো পানিতে তলিয়ে রয়েছে। পানি নিষ্কাশনের সুষ্ঠু কোনো ব্যবস্থা না থাকায় বছরের পর বছর বর্ষা মৌসুমে তলিয়ে যাওয়া তিন ফসলি জমি গুলোতে আমন ধানসহ অন্য ফসল উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। নিজের জমিতে ধান চাষ করতে না পারায় কৃষকদের বুকে চাপা আর্তনাদ। জমির ফসল পানি নিষ্কাশনের অভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। উঁচু কিছু জমির ফসল ঘরে তুলতে পারার আশা থাকলেও নিচু জমিগুলোর ফসল সম্পুর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। ভুক্তভোগী কৃষক এনতাজ, এনামুল বলেন জলাবদ্ধতার জন্য আমরা প্রায় ১৫ বছর ধরে দোলায় আবাদ করতে পাচ্ছি না। একটি ক্যানেল করে দিলে জমি গুলো চাষের আওতায় আসবে। দেশের খাদ্য ঘাটতি পূরনে সহয়তা হবে। কৃষক বক্কর, কাদের, জয়নাল, শহিদুলসহ কৃষকরা বলেন, গবরার দোলার পানি বাহির হওয়ার কোন ব্যবস্থা নাই। পার্শ্বেই তিস্তা নদী। দোলা থেকে যদি পাইপের মাধ্যমে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা যায় তাহলে সমস্যাটি স্থায়ীভাবে সমাধান হবে। বর্ষা, শরত, অতিবাহিত হলেও গবরার দোলায় পানি নিষ্কাশনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না থাকায় কৃষকের শত শত হেক্টর কৃষি জমি পানির নিচে। জমিতে পানি থাকায় ধান সহ অন্যান্য ফসল উৎপাদন থেকে বি ত কৃষকরা। ফলে ক্ষতির মুখে পড়েছেন তারা। 

কৃষক নুরুল আমিন, আঃ রহমান, মকবুল, বাবুলু বলেন, আমাদের গবরার দোলায় প্রায় ৩শ একর কৃষি জমি রয়েছে। কিন্তু পানি জমে থাকায় আমন চাষ করা যায় না। এতো জমি অনাবাদী অবস্থা দেখে বুকটা ফেটে যায়। গনাই গ্রামের কৃষকের অভিযোগ, গবরার দোলায় কৃষিজমিতে পানি জমে থাকায় অনাবাদি পড়ে রয়েছে। তাই আমরা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ইউএনও বরাবরে লিখিতভাবে একটি আবেদন দিয়েছি। কিন্তু কোনো প্রতিকার পাচ্ছি না। টেপামধুপুর ইউপি চেয়ারম্যান রাশেদুল ইসলাম বলেন, জলাবদ্ধতায় কৃষকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জলাবদ্ধতা দুর করা গেলে কৃষকেরা বাঁচবে, উৎপাদন বাড়বে। তাই দ্রুত পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করার জন্য প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি। 

কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহানাজ পারভীন জানান, গবরার দোলায় পানি নিস্কাশনের জন্য চেয়ারম্যান সাহেবের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মহিদুল হক বলেন, লিখিত একটি আবেদন পেয়েছি বিষয়টি সরেজমিনে দেখে উপজেলা চেয়ারম্যান, স্থানীয় চেয়ারম্যানসহ এলাকাবাসীদের সঙ্গে কথা বলে একটি সুষ্ঠু নর ব্যবস্থা করা হবে। 

উপজেলা চেয়ারম্যান আনোয়ারুল ইসলাম মায়া বলেন, স্থায়ীভাবে পানি নিষ্কাশনের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আসন্ন খাদ্য সংকট মোকাবেলায় অপচয় হওয়া জমির বড় অংশে চাষাবাদ করা গেলে তা ভবিষ্যৎ খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিতে ভূমিকা রাখবে।