কাউনিয়ায় উৎপাদিত পিঁয়াজ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করা সম্ভব

প্রকাশ : 2024-04-09 19:11:21১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

কাউনিয়ায় উৎপাদিত পিঁয়াজ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রপ্তানি করা সম্ভব

পেঁয়াজ ছাড়া বাঙ্গালির রান্নায় যেন পূর্ণতা পায় না। স্বাদ বাড়ানোর পাশাপাশি পেঁয়াজ পুষ্টি সরবারহ করতেও সাহায্য করে। পেঁয়াজ নিয়মিত খেলে সুবিধা হল এটা ক্যান্সার থেকে দুরে রাখতে সাহায্য করে। কারণ এতে আছে সালফারের যৌগ ও ফ্লাভানয়েড নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। কাউনিয়ায় উৎপাদিত পিঁয়াজ স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে রপতানি করা সম্ভব। চলতি মৌসুমে পিয়াজের বাম্পার ফলন হলেও সংরক্ষণ নিয়ে দুঃচিন্তায় কৃষক।

সরেজমিনে তিস্তার জেগে উঠা চরসহ উপজেলার বিভিন্ন  ইউনিয়ন ঘুরে দেখা গেছে তিস্তা নদী বেষ্টিত গ্রাম গুলোতে পিয়াজের ব্যাপক চাষ হয়েছে। চলতি মৌসুমে তিস্তার জেগেউঠা চরে অধিক পরিমান জমিতে পিয়াজ চাষ ও বাম্পার ফলন হয়েছে। তবে পিয়াজ সংরক্ষণ নিয়ে দুঃচিন্তায় কৃষকগদাই গ্রামের পিয়াজ চাষী আলামিন, শাহজাহান, পাঞ্জর ভাঙ্গা গ্রামের জসিম, আনারুল জানায় এবার মৌসুমে ফলন ও দাম ভাল পেয়েছি কিন্তু সংরক্ষণ করার কোন ব্যবস্থা না থাকায় ফসল তোলার সাথে সাথে বিক্রি করতে চচ্ছে। বর্তমানে কৃষকেরা সনাতন পদ্ধতিতে পেঁয়াজ সংরক্ষণ করেন। এতে অনেক পরিমাণ পেঁয়াজ নষ্ট হয়। কাউনিয়ার স্থানীয় কৃষকেরা দীর্ঘদিন ধরে একটি আধুনিক সংরক্ষণাগারের দাবি জানিয়ে এলেও তার বাস্তবায়ন নেই। দীর্ঘদিন ধরে মসলা জাতিয় একটি বিশেষায়িত কোল্ডস্টোরেজ নির্মাণের দাবী এলাকার কৃষকের। ভোক্তা আঃ রহিম জানান, ভারত পিঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করে দিলেই দেশে পেঁয়াজের বাজারে অস্থির হয়ে উঠে। তখন আমরা ভোক্তারা পরি বিপাকে। পুষ্টি বিজ্ঞানী বলেন, পেঁয়াজ কি শুধুমাত্র রান্নার স্বাদ বাড়াতেই ব্যবহৃত হয়? না বৈকি! একটি বড় পেঁয়াজে ৮৬.৮ শতাংশ পানি, ১.২ শতাংশ প্রোটিন, ১১.৬ শতাংশ শর্করা জাতীয় পদার্থ, ০.১৮ শতাংশ ক্যালসিয়াম, ০.০৪ শতাংশ ফসফরাস ও ০.৭ শতাংশ লোহা থাকে। এছাড়া পেঁয়াজে ভিটামিন এ, বি ও সি আছে। এটি ফলিক এসিডের খুব ভালো উৎস। এছাড়া এতে সালফার, ক্রোমিয়াম ও আছে। তাই পেঁয়াজের আছে নানান গুণ। আছে অনেক স্বাস্থ্য উপকারিতাও। তাই এই খাতে সরকারকে গুরুত্ব দিতে হবে। কাউনিয়ায় পিঁয়াজ চাষ হয়েছে ২১৫ হেক্টর জমিতে। এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলনও ভাল হয়েছে। কাউনিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহানাজ পারভীন জানান, পিঁয়াজ চাষ হয়েছে ২১৫ হেক্টর জমিতে। এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় ফলনও ভাল হয়েছে। চরাঞ্চলে পিয়াজের ভাল ফলন হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলায় রপ্তানী করা সম্ভব। চলতি মৌসুমে কৃষক পিয়াজের দামও ভাল পাচ্ছে। 

কৃষি বিজ্ঞানীরা বলছেন, পেঁয়াজ সংরক্ষণ করতে না পারায় আমদানি-নির্ভর হতে হচ্ছে। সঠিকভাবে সংরক্ষিত করা গেলে আমদানি করার প্রয়োজন হবে না। পাশাপাশি আবাদ বৃদ্ধিতে সঠিক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও ভালো মানের বীজ উৎপাদন করার পরামর্শও দিয়েছেন। দেশে পেঁয়াজের বার্ষিক চাহিদা ৩০ লাখ টনের মতো। এর মধ্যে দেশে উৎপাদন হয় ২৩ লাখ টনের মতো। মুখ্য বিজ্ঞানী ড. হামিম রেজা বললেন, সঠিক পরিকল্পনা নিয়ে এগোলে অভ্যন্তরীণ চাহিদা মিটিয়ে পেঁয়াজ রপ্তানিও সম্ভব।