একলাফে পেঁয়াজের দাম বেড়ে "দ্বিগুণ"

প্রকাশ : 2023-12-11 13:47:42১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

একলাফে পেঁয়াজের দাম বেড়ে "দ্বিগুণ"

আবারও পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করেছে ভারত সরকার। গত বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনের এ তথ্য জানানো হয়। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানির ওপর নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে। অভ্যন্তরাণী এই সিন্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলেও প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়। পেঁয়াজ রপ্তানিতে ভারতের এমন নিষেধাজ্ঞার খবরে ‘আগুন’ লেগেছে মুন্সীগঞ্জের বাজারগুলোতে। একলাফে পেঁয়াজের দাম বেড়ে  দ্বিগুণ হয়ে গেছে। মজুদাররা গুদাম থেকে সরিয়ে নিয়েছে পেঁয়াজ। বাজারে তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম সংকট। এ সংকট দেখিয়ে খুচরা ব্যসায়ীদের কাছে উচ্চমূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে খুচরা বাজারেও বেড়েছে পেঁয়াজের দাম।

রবিবার (১০ডিসেম্বর)সকালে মুন্সীগঞ্জ শহর, মুন্সীহাট, টঙ্গীবাড়ি, বেতকা,আব্দুল্লাহপুর, বালিগাঁওসহ বিভিন্ন বাজারের ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এক/দুই দিনের ব্যবধানে এক কেজি পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৯০ টাকা বেড়েছে। অনেক দোকানে পেঁয়াজ নাই, ক্রেতারা বলছে আরও বেশি দামে বিক্রি করবে, তাই দোকনদাররা পেঁয়াজ সরিয়ে ফেলেছে। এবং অনেক দোকানে পেঁয়াজের মূল্য তালিকায় নাই। কিছু দোকানে মূল্য তালিকা আছে ১৫০ টাকা, বিক্রি করছে ২১০/২২০ টাকা। দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ২১০-২২০ টাকা ও ইন্ডিয়া পেঁয়াজ ১৮০-১৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে। দোকান মালিকরা বলেছে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ, বেশি দামে কিনতে হচ্ছে,তাই বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। কতা টাকা কেজি দরে ক্রয় করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, ১১০ টাকা দরে কিনেছেন বিক্রি করছে ২০০ টাকা। এত টাকা বেশি দরে বিক্রি করছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি কোন সঠিক জবাব দিতে পারেন নাই। ক্রেতাদের অভিযোগ পেঁয়াজ বেচাকিনা নিয়ে এক ধরণের ইদুর খেলায় মেতে উঠেছে ব্যবসায়িরা। পেঁয়াজ সংকটের নামে ব্যবসায়িরা বিশেষ সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করছে । ক্রেতারা মনে করেন বাজারে প্রতিদিনই মনিটরিং করা প্রয়োজন বলে অনেকেই মনে করছেন।  তবে কিছু সিন্ডিকেটের কারণে এখনো বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না প্রশাসন।
ক্রেতা আমেনা আক্তার নামে এক গৃহিনী জানান, এক দিন আগে পেঁয়াজ কিনেছেন ১১০ টাকা কেজি। দাম বেড়ে যাবে বলে এই খবর শুনে ৫ কেজি পেঁয়াজ কেনার জন্য শহর বাজারে এসেছেন। পরে বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখেন, দেশী পেঁয়াজ ২২০ টাকা আর ইন্ডিয়া পেঁয়াজ ১৯০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় পেঁয়াজ কিনবেনা বলে জানান এই ক্রেতা।
মুন্সীগঞ্জ শহরের ব্যবসায়ী মেসার্স করিম স্টোরের মালিক জানান, হঠাৎ করে পেঁয়াজ দাম বাড়াতে ওনার দোকানে কোন পেঁয়াজ নাই। এবং তিনি কিনেন নাই,ভারতরের রপ্তানি বন্ধ হওয়াতে পেঁয়াজ কিননেনি। প্রতি কেজিতে ৭০/৮০ টাকা দাম বেশি,যখন দাম শিথিল হবে তখন কিনবেন বলে প্রতিবেদকে জানিয়েছেন।
মুন্সীহাট বাজার সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো.ববিউল আউয়াল বলেন,বাজার মনিটরিং অভাব, বাজারে যদি মনিটরিং হত, তাহলে এত বড় সিন্ডিকেট হত না।
 রাতারাতি এত দাম হয়ে যাবে,ভাবতে পারি না। আমরা সাধারণ ভোক্ততারা  ক্ষতিহচ্ছি। তাই প্রশাসেন কাছে আবেদন বাজার মনিটরিং করার প্রয়োজন।
মুন্সীগঞ্জ জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের সহকারী পরিচালক মো. আব্দুস সালাম বলেন, মুন্সীগঞ্জ পেঁয়াজের আড়ৎ নাই। আমরা মনিটরিং করছি। সেখানে অনিয়ম হবে সেখানেই ব্যবস্তা নিবো। অনেক দোকানে মূল্য তালিকার চেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে ও মুল্য তালিকা নাই,এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যদি কেউ অভিযোগ দেই তাহলে আইনগত ব্যবস্তা নিবো।
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার সহকারী কমিশনার( ভূমি)ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নামজুল হুদা বলেন, আমরা বিভিন্ন বাজারে অভিযান পরিচালনা করবো কিছুক্ষণে মধ্যে। আমরা যেখানে অনিয়ম পাবো, সেখানেই আইনগত ব্যবস্থা নিবো।
মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার নির্বাহী অফিসার আফিফা খান বলেন, আজ মুন্সীগঞ্জ সকল উপজেলা এক যুগে অভিযান পরিচালনা হবে। আমি বিভিন্ন কাজে ব্যস্ততা থাকায় এসিল্যান্ডকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তাদের নিদের্শ দেওয়া হয়েছে কোথায় কেথায় আড়ৎ রয়েছে তা মনিটরিং করার জন্য। সেখানে অনিয়ম হবে, সেখানে অভিযান পরিচালনা করে আইনগত ব্যবস্থা নিবে।

 

সান