ইতিহাসের পাতায় ভয়াবহ একটি অধ্যায়
প্রকাশ : 2023-07-30 12:51:56১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
প্রথম বিশ্বযুদ্ধ একটি বৈশ্বিক যুদ্ধ যা ১৯১৪ সালের ২৮ জুলাই ইউরোপে শুরু হয় এবং ১১ নভেম্বর ১৯১৮ পর্যন্ত স্থায়ী ছিল। ৬ কোটি ইউরোপীয়সহ আরো ৭ কোটি সামরিক বাহিনীর সদস্য ইতিহাসের অন্যতম বৃহত্তম এই যুদ্ধে একত্রিত হয়। এটি ছিল ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ সংঘাতের একটি এবং এর ফলে পরবর্তী সময়ে এর সাথে যুক্ত দেশগুলোর রাজনীতিতে বিরাট পরিবর্তন হয়। অনেক দেশে এটি বিপ্লবেরও সূচনা করে।
১৯১৪ সালের ১৮ জুন বসনিরাজধানী সারায়েভো শহরে অস্ট্রিয়ার যুবরাজ আর্চডিউক ফ্রাঞ্জ ফার্দিনান্দ এক সার্বের গুলিতে নিহত হন। অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি এই হত্যাকাণ্ডের জন্য সার্বিয়াকে দায়ী করে এবং ওই বছরের ২৮ জুলাই সার্বিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে। এ যুদ্ধে দু'দেশের বন্ধু রাষ্ট্রগুলো ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়ে। এতে যোগ দিয়েছিল সে সময়ের অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী সকল দেশ। এভাবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের (১৯১৪-১৯১৮) সূচনা হয়। তবে অস্ট্রিয়ার যুবরাজের হত্যাকাণ্ডই প্রথম বিশ্বযুদ্ধের একমাত্র কারণ ছিল না। উনিশ শতকে শিল্পে বিপ্লবের কারণে সহজে কাঁচামাল সংগ্রহ এবং তৈরি পণ্য বিক্রির জন্য উপনিবেশ স্থাপনে প্রতিযোগিতা এবং আগের দ্বন্দ্ব-সংঘাত ইত্যাদিও প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের কারণ। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে একপক্ষে ছিল উসমানীয় সাম্রাজ্য, অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি, জার্মানি ও বুলগেরিয়া। যাদের বলা হতো কেন্দ্রীয় শক্তি। আর অপরপক্ষে ছিল সার্বিয়া, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জাপান, ইতালি, রুমানিয়া ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। যাদের বলা হতো মিত্রশক্তি।
প্রথম বিশ্বযুদ্ধে ৯০ লক্ষ যোদ্ধা ও ১ কোটি ২০ লক্ষ নিরীহ মানুষ নিহত হয়। প্রায় এককোটি সৈন্য এবং ২ কোটি ১০ লক্ষ সাধারণ মানুষ আহত হয়, এদের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের ছিল এক লক্ষ ষোল হাজার পাঁচশত ষোল জন। চারটি সাম্রাজ্যের পতন ঘটে। রোমানভ সাম্রাজ্য বা রুশ সাম্রাজ্য ১৯১৭ সালে, জার্মান ও অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্য ১৯১৮ সালে এবং উসমানীয় সাম্রাজ্য ১৯২২ সালে। অস্ট্রিয়া, চেকোস্লোভাকিয়া, এস্তোনিয়া, হাঙ্গেরি, লাটভিয়া, লিথুয়ানিয়া এবং তুরস্ক স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে ওঠে। উসমানীয় সাম্রাজ্যের অধীনে থাকা অধিকাংশ আরব এলাকা ব্রিটিশ ও ফরাসি সাম্রাজ্যের অধীনে আসে। ১৯১৭ সালে বলশেভিকরা রাশিয়ার এবং ১৯২২ সালে ফ্যাসিবাদীরা ইতালির ক্ষমতায় আরোহণ করে। এ যুদ্ধের অন্য ফল হলো: ইনফ্লুয়েঞ্জায় বিশ্বব্যাপী ৫ কোটি মানুষের মৃত্যু হয়।