আমরা ইন্টারন্যাশনাল বিগ ক্যাটস অ্যালায়েন্স গঠনে নীতিগতভাবে সমর্থন করি- মো. শাহাব উদ্দিন
প্রকাশ : 2023-04-10 11:16:29১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বাঘ এবং চিতার আবাসস্থল সংযুক্ত থাকায় দুই দেশের আন্তসীমান্ত সহযোগিতা প্রাণিগুলোকে সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্বে সাতটি এবং বাংলাদেশেই দুটি বড় বিড়াল প্রজাতির প্রাণির সংরক্ষণের গুরুত্ব বিবেচনা করে এবং এই প্রজাতিগুলোর আশ্রয়কারী দেশগুলোকে নিয়ে আমরা ইন্টারন্যাশনাল বিগ ক্যাটস অ্যালায়েন্স (আইবিসিএ) গঠনে নীতিগতভাবে সমর্থন করি।’
রবিবার (৯ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ভারতের কর্নাটকের মহিশুর ইউনিভার্সিটিতে প্রকল্প ‘টাইগার’-এর ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত বাঘ সংরক্ষণ বিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মেলনটি উদ্বোধন করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সম্মেলনে পরিবেশমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সরকার স্থানীয় জনগোষ্ঠীর সক্রিয় অংশগ্রহণে শূন্য শিকারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করে বন্য বাঘের সংখ্যা দ্বিগুণ করার প্রত্যয় নিয়ে কাজ করছে। এটা আশার বিষয় যে, বাঘের সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী হতে শুরু করেছে।’
সরকার বাঘ ছাড়াও অন্যান্য বন্য প্রজাতি সংরক্ষণে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে বলেও উল্লেখ করেন মন্ত্রী। তিনি আরও জানান, জীববৈচিত্র্য, জলাভূমি, বন ও বন্যপ্রাণী রক্ষা ও উন্নতির জন্য সংবিধানে একটি নতুন ধারা; বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২-এ বাঘ শিকারের জন্য ২ থেকে ৭ বছরের কারাদণ্ড এবং ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধানও সন্নিবেশ করা হয়েছে।
শাহাব উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ সরকার জাতীয় বাঘ পুনরুদ্ধার কর্মসূচি (২০২২ থেকে ২০৩৪) এবং দ্বিতীয় প্রজন্মের বাংলাদেশ টাইগার অ্যাকশন প্ল্যান (২০১৮-২০২৭) বাস্তবায়ন করছে। এর মধ্যে রয়েছে বাঘ জরিপ; জেনেটিক অধ্যয়ন; সুন্দরবনের অভ্যন্তরে ড্রোন দ্বারা স্মার্ট টহল ও পর্যবেক্ষণ; সুন্দরবন ও বেঙ্গল টাইগারের সুরক্ষা ও সংরক্ষণ নিশ্চিত করতে বন বিভাগের ফ্রন্টলাইন কর্মীদের পাশাপাশি স্থানীয় সম্প্রদায়ের জন্য সক্ষমতা বৃদ্ধির কর্মসূচি।
মন্ত্রী বলেন, সহযোগিতা জোরদারকরণের মাধ্যমে সুন্দরবনের রয়েল বেঙ্গল টাইগার সংরক্ষণের জন্য ২০১১ সালে বাংলাদেশ ও ভারত একটি প্রটোকল স্বাক্ষর করেছে।
বাঘ ও মানুষের সংঘাত কমাতে সরকার ‘গ্রাম টাইগার রেসপন্স টিম’, ‘কো-ম্যানেজমেন্ট কমিটি’ এবং ‘কমিউনিটি পেট্রোল গ্রুপ’ গঠন করে স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে বাঘ সংরক্ষণ কার্যক্রমে নিয়োজিত করেছে বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘বন্যপ্রাণীর দ্বারা ক্ষতিপূরণ বিধিমালা, ২০২১-এ বাঘের দ্বারা নিহত ব্যক্তির জন্য ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিধান রয়েছে। অবৈধ বন্যপ্রাণী ব্যবসা রোধে বন বিভাগের অধীনে বন্যপ্রাণী অপরাধ নিয়ন্ত্রণ ইউনিট গঠন করা হয়েছে। বন্যপ্রাণী শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক্ষণের সক্ষমতা বাড়াতে শেখ কামাল বন্যপ্রাণী কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে; যা উৎকর্ষ কেন্দ্র হিসেবে কাজ করছে।’
আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পেলে বেঙ্গল টাইগার সহ অন্যান্য বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের সরকারি উদ্যোগ সফল করা সহজ হবে বলেও উল্লেখ করেন বনমন্ত্রী।
এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিশ্বের সাতটি বড় বিড়াল প্রজাতির প্রাণী যেমন বাঘ, সিংহ, চিতাবাঘ, তুষার চিতা, পুমা, জাগুয়ার এবং চিতার সুরক্ষা এবং সংরক্ষণের ওপর ফোকাস করার জন্য ইন্টারন্যাশনাল বিগ ক্যাটস অ্যালায়েন্স (আইবিসিএ) উদ্বোধন করেন। এ অনুষ্ঠানে এসব প্রজাতিকে আশ্রয় দেওয়া দেশগুলোর পরিবেশ ও বনমন্ত্রীরা উপস্থিত ছিলেন।