আদমদীঘিতে খিচুড়ির ডেক্সিতে ময়লা ফেলে শতাধিক মানুষের আহার নষ্ট করলেন এসিল্যান্ড
প্রকাশ : 2024-05-20 19:57:34১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
বগুড়ার আদমদীঘিতে রান্না করা খাবারে ছাগলের বিষ্ঠাসহ ময়লা আবর্জনা ফেলে দিয়ে প্রায় শতাধিক মানুষের আহার নষ্ট করে দিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফিরোজ হোসেন। গত রবিবার রাতে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে এমন কান্ড করেছেন বলে জানান স্থানীয়রা। ঘটনাটি ঘটে উপজেলার সদর ইউনিয়নের কেশরতা গ্রামে। এ ঘটনার পর থেকে মানুষের মুখে ব্যাপক প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছেন তিনি। এমন কান্ডে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা। এ বিষয়ে গণমাধ্যমে কোন মন্তব্য করেতে নারাজ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আফরোজ।
গ্রামবাসী সূত্রে জানা যায়, আদমদীঘিতে ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ ২য় ধাপের নির্বাচন ২১ মে অনুষ্ঠিত হবে। এই উপলক্ষে আচরণবিধি বিষয়ে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ডিউটি করছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফিরোজ হোসেন। গত রবিবার রাতে সদর ইউনিয়নের কেশরতা গ্রামের প্রায় শতাধিক নারী-পুরুষ মিলে পিকনিকের আয়োজন করছিলেন৷সেখানে আনারস প্রতীকের সমর্থক একই এলাকার সাধারণ ভোটারগণ একত্রিত হয়ে খাওয়ার জন্য খিচুড়ি পাক করে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফিরোজ হোসেন রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় অনেক লোকজন দেখে গাড়ি থামিয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। কথা প্রসঙ্গে তাঁর গাড়ির চালক হযরত আলীকে রাস্তার আবর্জনা উঠিয়ে খিচুড়ির ডেক্সির ভিতর দেয়ার জন্য নির্দেশ দেন। এসিল্যান্ডের নির্দেশ পেয়ে ড্রাইভার হজরত আলী সাতে সাথে রান্না করা খাবারের মধ্যে বিভিন্ন ময়লা আবর্জনা ছিটিয়ে দেয়। এতে করে ক্ষোভে ফেটে পড়েন উপস্থিত সকলেই। তাদের দাবী যদি কোনো অন্যায় করে থাকি, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারতেন। কিন্তু রান্না করা খাবারের মধ্যে আবর্জনা দেওয়া মোটেও কাম্য নয় বলে জানান তারা। ম্যাজিস্ট্রেটের এমন কান্ডে এলাকায় ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়েছে।
গ্রামের জিল্লুর রহমান বলেন, চাল আর ৫০ টাকা করে চাঁদা দিয়ে পিকনিকের আয়োজন করি। খিচুড়ি রান্নার শেয় পর্যায়ে হঠাৎ এসিল্যান্ড এসে আমাদের জিজ্ঞেস করে আমরা ভোটের কোনো প্রার্থী আমাদের খাওয়াচ্ছে কিনা। আমরা পিকনিকের চাঁদার তালিকা তাকে দেখানোর পরও তার নির্দেশে প্রথমে জলন্ত চুলাতে পানি ঢেলে দেয়। এরপর রান্না করা খিচুড়ির ডেস্কির মধ্যে ছাগলের বিষ্ঠাসহ বিভিন্ন ময়লা আবর্জনা ছিটিয়ে দেয়। তিনি একটু ক্ষোভ নিয়েই বলেন, খাবার এভাবে নষ্ট করে, তা আমি আগে কখনো দেখিনি। এটা খুব অমানবিক কাজ করেছেন তিনি। একই ওই গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা চাঁদা দিয়ে পিকনিকের আয়োজন করে রান্না করছিলাম। কিন্তু খাবারের মধ্যে ময়লা আবর্জনা দেওয়ায় আমরা আর খাবার খেতে পারিনি। সারারাত না খেয়ে থাকতে হয়েছে। এটা আসলে ঠিক হয়নি। ঘটনার বিষয়ে জানার জন্য মুঠোফোনে ফোন দিলেও সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফিরোজ হোসেন ফোন ধরেননি। এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুমানা আফরোজ সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি বলেন, নির্বাচন শেষ হলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।