আজ রাজা রামমোহন রায়ের প্রয়াণ দিবস
প্রকাশ : 2022-09-27 13:40:42১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
সম্ভ্রান্ত রক্ষণশীল হিন্দু ব্রাহ্মণ পরিবারের সন্তান রাজা রামমোহন রায়(২২মে ১৭৭২- ২৭ সেপ্টেম্বর ১৮৩৩) । তিনি ভারতের নবজাগরণের পথিকৃৎ হিসেবেই পরিচিত । তাঁর জীবনের মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছিল হিন্দু ধর্মীয় প্রথা এবং সামাজিক ব্যবস্থায় সংস্কার সাধন। তিনি তাঁর লেখনীর মাধ্যমে হিন্দু ধর্মের গোঁড়ামি সর্বসমক্ষে তুলে ধরার প্রচেষ্টা করেছিলেন। তবে সেক্ষেত্রেও তাকে একাধিক কটাক্ষের শিকার হতে হয়। তবে এখনও পর্যন্ত তিনি বিখ্যাত হয়ে রয়েছেন তাঁর ভারতের ধর্মীয়-সামাজিক পুনর্গঠন আন্দোলন সহ ব্রাহ্ম সমাজের প্রতিষ্ঠা এবং সতীদাহ প্রথার বিলুপ্তিকরনের প্রচেষ্টার জন্য।
১৭৭২ সালের ২২শে মে হুগলি জেলার রাধানগর গ্রামে এক ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। তাঁর প্রপিতামহ কৃষ্ণকান্ত ফারুকশিয়ারের আমলে বাংলার সুবেদারের আমিনের কাজ করতেন । সেই সূত্রেই পরবর্তীতে এই ‘রায়’ পদবী তাঁরা ব্যবহার করতে শুরু করেন , এমনটাই অনুমান করা হয়। তরুণ বয়স থেকেই রামমোহন কাজকর্মে নিয়োজিত হয়েছিলেন। ১৮০৩ থেকে ১৮১৪ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশ ইন্ডিয়া কোম্পানির কর্মচারী হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন তিনি । পরবর্তীতে ১৮১৫ খ্রিস্টাব্দে কলকাতার স্থায়ী বসবাস শুরু করেন রামমোহন । সেই সময়কাল থেকেই সমাজ সংস্কারের প্রচেষ্টা শুরু তাঁর।
সমাজ সংস্কারের মধ্যে তাঁর চিরস্মরণীয় এবং প্রশংসিত পদক্ষেপ সতীদাহ প্রথার বিরোধিতা করা। তৎকালীন হিন্দু সমাজ সহমরণকে রীতিনীতিতে পরিবর্তন করেছিল । তবে তাঁর বিরোধিতা করায় গোঁড়া হিন্দুদের বাঁকা নজর পরে রামমোহনের ওপর । তবে তিনি আইন প্রবর্তন করে এই সতীদাহ প্রথা রোধ করতে চেয়েছিলেন । প্রথম দিকে সেক্ষেত্রে ইংরেজদের সহযোগিতা না পাওয়া গেলেও পরবর্তীতে ১৮২৯ সালে গভর্নর জেনারেল বেন্টিঙ্ক এই আইন প্রবর্তন করেন।
তিনি একাধিক পত্রিকায় ভারতীয় সমাজ সংস্কার বিষয়ক লেখা লিখতেন। বাংলা ছাড়া অন্যান্য ভাষায় পত্রিকা প্রকাশ করেন তিনি। শেষ জীবনে ‘রাজা’ উপাধি নিয়ে ১৮৩০ সালে রামমোহন দিল্লির বাদশাহ দ্বিতীয় আকবরের দূত হিসেবে ইংল্যান্ডে গিয়েছিলেন। ব্রিটেনের মাটিতেই মেনিনজাইটিস রোগে আক্রান্ত হন তিনি। পরবর্তীতে সেখানে ১৮৩৩ সালের ২৭ শে সেপ্টেম্বর মৃত্যু হয় রাজা রামমোহন রায়ের। উনবিংশ শতাব্দীতেও রাজা রামমোহন রায় যে মুক্ত চিন্তা চেতনার আলো জ্বেলে দিয়ে গিয়েছিলেন বর্তমান সময়ে তা বেশ খানিকটা স্তিমিত হয়ে গিয়েছে । তার ১৯০ তম প্রয়াণ বার্ষিকীতে রইল বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি।