আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী বিএনপির সমাবেশের ধারে-কাছেও যাবে না
প্রকাশ : 2022-11-28 15:11:11১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
আওয়ামী লীগের কোনো নেতাকর্মী ঢাকায় বিএনপির আগামী ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশের ধারেকাছেও যাবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।একই সঙ্গে তিনি ১০ ডিসেম্বরের গণসমাবেশ ঘিরে কোনো ধরনের জনদুর্ভোগ সৃষ্টি না করতে বিএনপি নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে দিনাজপুর গোর-এ শহীদ বড় ময়দানে দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের ত্রিবার্ষিক কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি একথাগুলো বলেন।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৩০তম জাতীয় সম্মেলন আগামী ৬ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। প্রথমে এই সম্মেলনের জন্য ৩ ডিসেম্বর তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে পরে তা প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে স্থগিত করা হয়। এরপর ৮ ও ৯ ডিসেম্বর এ সম্মেলন আয়োজনের কথা জানানো হয় ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা ৬ ডিসেম্বর তারিখে চূড়ান্ত হয়।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন ৮ তারিখ থেকে ৬ তারিখে করা বিএনপির আন্দোলনের ফসল নয়, এটিকে শেখ হাসিনার উদার নৈতিকতার ফসল বলে উল্লেখ করেছেন ওবায়দুল কাদের।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ৭৫ সালে অমানবিকভাবে সপরিবারে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। পৃথিবীতে এমন জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড আর নাই। ওই হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনাকারী ছিলেন জিয়াউর রহমান, আর ২১ আগস্টের বোমা হামলার পরিকল্পনায় ছিলেন হাওয়া ভবনের যুবরাজ তারেক রহমান।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক উদার। শেখ হাসিনা উদার বলেই আজকে সাজাপ্রাপ্ত আসামী হয়েও বেগম খালেদা জিয়া বাড়ীতে অবস্থান করছেন। শেখ হাসিনা নিজের ক্ষমতাবলে খালেদা জিয়াকে বাড়ীতে থাকতে অনুমতি দিয়েছেন।
বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনার বাড়ী তো ঠাকুরগাঁওয়ে। সমাবেশ কাকে বলে তা আজকে দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল ও সমাবেশ দেখে যান। আপনাদের কথায় কথায় বলেন আপনাদের সমাবেশে ঢল নেমেছে। কথায় কথায় তরঙ্গ নেমেছে। কিন্তু ঢল কাকে বলে, নদী আর সাগরের তরঙ্গ কাকে বলে তা আজকে দিনাজপুরে আপনি দেখে যান। আপনারা সমাবেশের তিন দিন আগে থেকে হাণ্ডি, পাতিল, বিছানা, বালিশ নিয়ে নাটক শুরু করেন। সেই নাটকের অংশ হিসেবে থাকে মশার কয়েলও। হায়রে নাটক।
সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, আগামী ডিসেম্বরে খেলা হবে। এবার খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে, ভোট চুরির বিরুদ্ধে, হাজার হাজার কোটি টাকা যারা বিদেশে পাচার করেছেন তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। ১৫ ফেব্রুয়ারির মত নির্বাচন আর হবে না। সুষ্ঠু ভোট হবে। শেখ হাসিনা নির্বাচনে সময় রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন। সে সময় একটা নিরপেক্ষ ভোট হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে মারামারি করবেন না। আপনারা উস্কানি দিবেন না। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কিন্তু মাঠ ছেড়ে দেয় নাই। আপনারা আমাদের উপর হামলা করবেন, আর আমরা দাড়িয়ে দাড়িয়ে ললিপপ খাব। এটা কি হয়?
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান এমপি ও পরিবহন শ্রমিকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ডিসেম্বরে বিএনপির সমাবেশের আগে ও পরে আপনারা পরিবহন ধর্মঘট দিবেন না। কিন্তু তারপরও তারা তিন আগে থেকেই ঢাকায় হাণ্ডি, পাতিল ও মশার কয়েল নিয়ে আগে থেকেই অবস্থান নিবে। পরিবহন শ্রমিক নেতা যারা রয়েছেন, আপনারাও কোন পরিবহন ধর্মঘট ডাকবেন না।
দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান এমপির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, প্রেসিডিয়াম সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন ও শাজাহান খান, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন, আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাবেক এমপি এ্যাডঃ হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, সদস্য ও সাবেক এমপি এ্যাডঃ সফুরা বেগম রুমি, নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম এমপি, সাবেক মন্ত্রী ও অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসান মাহমুদ আলী এমপি, মনোরঞ্জন শীল গোপাল এমপি, শিবলী সাদিক এমপি ও এ্যাডঃ জাকিয়া তাবাসসুম জুই এমপি।