৭৫ পরবর্তীতে কেউ মুক্তিযুদ্ধ করেছে বলতে সাহস পেত না: প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশ : 2021-05-20 13:02:06১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘মুক্তিযুদ্ধে যারা অংশগ্রহণ করেছিলেন তারা সবকিছু ছেড়ে যুদ্ধে গিয়েছিলে। সেদিন তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। পঁচাত্তর পরবর্তী সময় এমন ছিলো, যে কেউ মুক্তিযুদ্ধ করেছে সেটা বলতে সাহস পেত না।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, চল্লিশ বছরের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অন্তত এইটুকু করতে পেরেছি যে, বাংলাদেশ আজ উন্নয়নশীল দেশ।
বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে আয়োজিত স্বাধীনতা পদক প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন। আজকের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ৯ ব্যক্তি ও এক প্রতিষ্ঠানের হাতে স্বাধীনতা পদক তুলে দেওয়া হয়।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। আমাদের ৫০ বছর পূর্তিতে আমরা স্বীকৃতিটা পেলাম। জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী আমরা যখন উদযাপন করছি তখন এই স্বীকৃতিটা পেলাম। পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যে স্বীকৃতি আমরা পেয়েছি, সেটুকু ধরে রেখে আমরা এগিয়ে যেতে চাই।
তিনি বলেন, আমি মনে করি সেদিন জাতির পিতার ডাকে যারা অস্ত্র হাতে তুলে নিয়ে যুদ্ধ করেছিলেন, তারা যদি সেদিন সে সাহসটা না দেখাতেন, তাহলে কি আমরা স্বাধীনতা পেতাম? হয়তো সব ব্যর্থ হয়ে যেত। যদিও পঁচাত্তরের ১৫ই আগস্টের পর আমাদের মুক্তিযুদ্ধকে ব্যর্থ করে দিতে বহুবার প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে। জাতির পিতার নাম ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল... এমনকি মুক্তিযুদ্ধের গানগুলো থেকে, যেখানে বঙ্গবন্ধুর নাম আছে অথবা আমাদের স্বাধীনতার কথা বলা আছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি জানি না একটা স্বাধীন জাতি বা স্বাধীন দেশের নাগরিক, যারা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে তারা কিভাবে আবার পরাজিত শক্তির পদলেহন করতে পারে। এটা আমি ভাবতেও পারি না। কিন্তু সেই অবস্থায়ই বাংলাদেশকে কিন্তু নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে আজ এটুকু বলতে পারি, যেটা আমাদের সব সময় একটা প্রচেষ্টা ছিল... আমরা স্বাধীন জাতি, আমরা মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছি। কাজেই আমরা সবসময় বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে চলবো, কারো কাছে হাত পেতে না, করুণা ভিক্ষা করে না।
‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২১’ প্রাপ্তরা হলেন-স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে প্রয়াত আহসানউল্লাহ মাস্টার, প্রয়াত আখতারুজ্জামান বাবু, প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এ কে এম বজলুর রহমান, প্রয়াত বীর মুক্তিযোদ্ধা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল খুরশিদ উদ্দিন আহমেদ, সাহিত্যে কবি মহাদেব সাহা, সংস্কৃতিতে চলচ্চিত্রকার-গীতিকার গাজী মাজহারুল আনোয়ার ও নাট্যজন আতাউর রহমান।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে ড. মৃন্ময় গুহ নিয়োগী, সমাজসেবা বা জনসেবায় পুরস্কারের জন্য মনোনীত হয়েছেন অধ্যাপক ডা. এম আমজাদ হোসেন।
গবেষণা ও প্রশিক্ষণে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল প্রতিষ্ঠান হিসেবে এবার পুরস্কার পাচ্ছে। জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতিবছর স্বাধীনতা পুরস্কার দিচ্ছে সরকার।