৪০০তম ওয়ানডেতে হোয়াইটওয়াশ এড়াতে পারবে তো বাংলাদেশ
প্রকাশ : 2022-08-10 10:14:56১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
সিরিজ শুরুর আগে সম্ভাব্য ফল ছিল ৩-০। এখনও সেই বাস্তবতা টিকে আছে। তবে বদলে গেছে দুই দলের অনুমিত অবস্থান। বাংলাদেশের জন্য যেটি ছিল সম্ভাবনা, সেটিই এখন রূপ নিয়েছে চরম শঙ্কায়। হোয়াইটওয়াশ করা নয়, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশড হওয়ার মুখে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচ ওয়ানডে সিরিজের শেষটি এই সংস্করণে বাংলাদেশের ৪০০তম ম্যাচ। তবে মাইলফলক উদযাপনের উপলক্ষ নেই, বরং এই ম্যাচ দলের জন্য বিব্রতকর অবস্থা থেকে রক্ষা পাওয়ার লড়াই। সিরিজ হার হয়ে গেছে প্রথম দুই ম্যাচেই। এখন হোয়াইটওয়াশ এড়ানো নিয়ে টানাটানি।
ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়া ম্যাচ দিয়ে ওয়ানডে ক্রিকেটের জন্ম ১৯৭১ সালে। তারও ১৫ বছর পর ১৯৮৬ সালের ৩১ মার্চ ওয়ানডে ক্রিকেটের সঙ্গে যুক্ত হয় বাংলাদেশের নাম। এশিয়া কাপের ওই ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল পাকিস্তান। সময় গড়িয়ে এখন ২০২২। ক্রিকেটের সব অলিগলি পেরিয়ে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বড় এক নাম। যারা এখন ৪০০তম ওয়ানডে খেলার অপেক্ষায়।
বুধবার (১০ আগস্ট) জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ ওয়ানডে ক্রিকেটে ৪০০তম ম্যাচ খেলবে। ক্রিকেট বিশ্বের দশম দল হিসেবে বাংলাদেশ এই ফরম্যাটে ৪০০ ম্যাচ খেলতে যাচ্ছে। ওয়ানডেতে বাংলাদেশের পথ চলা শুরু হয়েছিল হার দিয়ে। পাকিস্তানের বিপক্ষে এশিয়া কাপের ম্যাচে গাজী আশরাফ হোসেন লিপুর দল হেরেছিল ৭ উইকেটে। ২০০২ সালে বাংলাদেশ ৫০তম ম্যাচও খেলেছিল সেই পাকিস্তানের বিপক্ষে। ঢাকায় অনুষ্ঠিত হওয়া ম্যাচে খালেদ মাসুদের দল হেরেছিল ৮ উইকেটে। বাংলাদেশ শততম ওয়ানডে খেলে ২০০৪ সালে ভারতের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে ঢাকায় প্রথমবার ভারতকে ১৫ রানে হারায় বাংলাদেশ।
এরপর ১৫০ ও ২০০তম ম্যাচেও বাংলাদেশ জয় পায়। ২০০৭ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারতকে এবং ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদের মাটিতে হারায় বাংলাদেশ। তবে ২৫০ এবং ৩০০তম ম্যাচে জয় আসেনি। ২০১১ সালে জিম্বাবুয়ের হারারেতে এবং ২০১৫ বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ হারে বাংলাদেশ। ৩৫০তম ম্যাচে আবার জয় পায় বাংলাদেশ। ঢাকায় তারা হারায় জিম্বাবুয়েকে। এবার ৪০০তম ম্যাচে প্রতিপক্ষও জিম্বাবুয়ে। ভেন্যু হারারে স্পোর্টস ক্লাব মাঠ। এবার কি জিতবে বাংলাদেশ?
২-০ ব্যবধানে সিরিজে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশের জন্য কাজটা কঠিন। তবে অসম্ভব কিছু নয় অবশ্যই। এই সিরিজের আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা ১৯ ওয়ানডে জিতেছিল বাংলাদেশ। তাই পুরোনো সুখস্মৃতি থেকে আত্মবিশ্বাসী হতে পারে বাংলাদেশ। ৩৯৯ ম্যাচে বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলেছে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। ৮০ ম্যাচে ৫০ জয় রয়েছে বাংলাদেশের। হেরেছে ৩০টি। এছাড়া শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৫১, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৪৪, নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩৮, পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩৭ এবং ভারতের বিপক্ষে ৩৬ ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ।
ওয়ানডে ক্রিকেটে দীর্ঘ পথচলায় ১৪ অধিনায়ক পেয়েছে বাংলাদেশ। প্রথম অধিনায়ক ছিলেন গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। এরপর একে একে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন মিনহাজুল আবেদীন, আকরাম খান, আমিনুল ইসলাম, নাঈমুর রহমান, খালেদ মাসুদ, খালেদ মাহমুদ, হাবিবুল বাশার, রাজিন সালেহ, মোহাম্মদ আশরাফুল, সাকিব আল হাসান, মাশরাফি বিন মুর্তজা ও মুশফিকুর রহিম।
এই মুহূর্তে তামিমের হাতে দলের দায়িত্ব। মাশরাফি ৮৮ ম্যাচে সর্বোচ্চ ৫০ জয় নিয়ে ছেড়েছেন অধিনায়কত্ব। তাকে কেউ ছাড়িয়ে যেতে পারে কিনা সেটাই দেখার।
এদিকে, ইতোমধ্যে সিরিজ হেরে যাওয়ার পর দলের মনোবল থাকার কথা তলানিতে। কোচিং স্টাফরা তবু চেষ্টা করছেন দলকে উজ্জীবিত করার। মঙ্গলবার (৯ আগস্ট) হারারেতে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে বাংলাদেশের বোলিং কোচ অ্যালান ডোনাল্ড বললেন, শেষ ম্যাচের গুরুত্ব দলের কাছে তুলে ধরেছেন তারা।
তিনি জানান, এই ধরনের অবস্থার মধ্য দিয়ে যখন কোনো দল যায়, তখন যে অবস্থা থাকে, সেরকমই অবস্থা দলের। কঠিন শিক্ষা পেতে হয়েছে এবং সুযোগ হাতছাড়া হয়েছে। তবে আজকে সকালে খুব ভালো আলোচনা হয়েছে আমাদের যে কালকের ম্যাচটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ ও ঘুরে দাঁড়ানো কতটা জরুরি। সিরিজ হেরে গেছি আমরা। তবে কালকের ম্যাচে খেলার অনেক কিছু এখনও আছে। বিশেষ করে, কিছু আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার ক্ষেত্রে। ব্যাপারটা এভাবে নিতে হবে, জিম্বাবুয়ে দারুণ খেলেছে। সিকান্দার রাজা ভালো খেলেছে, চাকাভা দেখিয়েছে সে কেমন। তবে কালকের দিনটিতে আমাদের লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে।