হেফাজতের নোমানেরও একাধিক নারীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে: পুলিশ
প্রকাশ : 2021-05-06 21:34:11১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
হেফাজতের বিলুপ্ত কেন্দ্রীয় কমিটির প্রচার সম্পাদক জাকারিয়া নোমান ফয়েজীর সঙ্গে একাধিক নারীর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে বলে জানিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ।পাশাপাশি চট্টগ্রামের হাটহাজারীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মার্চে নাশকতা ও হামলার প্রত্যেকটি নাশকতার ঘটনায় তার (জাকারিয়ার) প্রত্যক্ষ সহযোগিতা, ইন্ধন ও নিদের্শ ছিল।
বৃহস্পতিবার বিকালে নগরীর ষোলশহর ২ নম্বর গেটস্থ জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস বিফ্রিংয়ে এসব তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক।
এর আগে বুধবার বিকালে কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলা থেকে জাকারিয়াকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এরপর বৃহস্পতিবার দুপুরে হাটহাজারী থানায় দায়ের ৩ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে চট্টগ্রাম জুডিশিয়াল আদালতে চালান দেওয়া হয়। পুলিশ তিন মামলায় তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছে। আদালত ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেন বলেনও নিশ্চিত করেছেন জেলা পুলিশ সুপার।
প্রেস বিফ্রিংয়ে জেলা পুলিশ সুপার এসএম রশিদুল হক বলেন, হাটহাজারীতে মার্চের ২৬, ২৭ ও ২৮ তারিখে হামলা, নাশকতা চালিয়েছে হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশ। এ সময় তারা থানা আক্রমণ করে। সদর ভূমি অফিস ও উপজেলা বাংলোয় হামলা চালায়। এসব ঘটনায় তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্য জানুযারী, মার্চে হেফাজতের নেতাকর্মীরা হাটহাজারীসহ দেশের বিভিন্নস্থানে যে সহিংসতা ঘটায় তার প্রত্যেকটিতে তিনি ছিলেন মাস্টার মাইন্ড বা পরিকল্পনাকারী। প্রতিটি ঘটনায় তার ইন্ধন ছিল। তার সহযোগিতা ছিল। এমনকি একাধিক ঘটনা তার নির্দেশে হয়েছে বলে জাকারিয়া নোমান ফয়েজী স্বীকার করে নিয়েছেন।নাশকতার ঘটনায় যে বা যারাই জড়িত থাকুক তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে একটি মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়। মোবাইলের চ্যাটিং ও অন্যান্য কল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তার সঙ্গে একাধিক নারীর বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের তথ্য পাওয়া গেছে। জাকারিয়া নোমান ফয়েজী ব্যক্তিগত জীবনে অবিবাহিত হলেও তার সঙ্গে একাধিক নারীর সম্পর্ক রয়েছে। দুই থেকে তিন নারীর সঙ্গে জাকারিয়া নোমান ফয়েজীর শারীরিক সম্পর্কও ছিল। সেটি আমাদের নলেজে আগে থেকেই ছিল। তাকে গ্রেফতারের পরে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তিনি আমাদের কাছে তা স্বীকারও করেছেন। তার মোবাইল ফোন থেকে আমরা একাধিক নারীর সঙ্গে বেশ কিছু চ্যাটিং পেয়েছি। আমাদের হাতে সেগুলো আছে, তদন্তের স্বার্থে আমরা সেগুলো এই মূহুর্তে প্রকাশ করব না।
তিনি বলেন, এই নারীদের সঙ্গে তার যে যোগাযোগ ছিল, তার যে অনৈতিক সম্পর্ক সেগুলো চ্যাটিং এর মাধ্যমে সুস্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
পুলিশ সুপার এস এম রশিদুল হক বলেন, আমি ব্যক্তিগতভাবে তাকে এই বিষয়ে জিজ্ঞেস করেছি, আপনার বেশভূষা, ধর্মীয় জীবনের সঙ্গে এগুলো তো মানায় না। তখন তিনি ক্ষমা চেয়ে বলেছেন, সবাই ভুল করে, আমিও করেছি।
প্রেস বিফ্রিংয়ে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবদুল্লাহ আল মাসুম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মহিউদ্দিন মাহমুদ ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (উত্তর) আফরোজুল হক টুটুলসহ জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
এর আগে গ্রেফতার হেফাজতে ইসলামের সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগরীরর সাধারণ সম্পাদক মামুনুল হকের বিরুদ্ধে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে অভিযোগ এনে ধর্ষণ মামলা করেন কথিত স্ত্রী জান্নাতুল ঝর্ণা। সেই বিষয়টি ব্যাপক বিতর্কের সৃষ্টি করে।