স্বাস্থ্য বিভাগের ১৮ দফা, সরকারের উদ্যোগ কোথায় : মির্জা ফখরুল
প্রকাশ : 2021-03-30 19:44:28১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
করোনা সংক্রমণ মারাত্মকভাবে বেড়ে যাওয়ায় সোমবার স্বাস্থ্য বিভাগ ১৮ দফা নির্দেশনা জারি করেছে। কিন্তু এই নির্দেশগুলো বাস্তবায়নে সরকার লক্ষণীয় কোন উদ্যোগ গ্রহণ করেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশে একটা মিথ্যা প্রচারণা করা হচ্ছে যে এখানে খুব চমৎকারভাবে সরকার করোনা সমস্যাটাকে সমাধান করছে, তারা নিয়ন্ত্রণ রাখতে পেরেছে। কিন্তু ইট ইজ এ লায়িং। যেটা একেবারেই মিথ্যা কথা।
মঙ্গলবার বিকালে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপার্সন এর রাজনৈতিক কর্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমার যেটা আপত্তি, স্বাস্থ্য বিভাগ যে ১৮ দফা দিয়েছেন পালন করার জন্য। সরকারের উদ্যোগটা কোথায়? সেখানে একটা টোটাল হেলথ মিনিস্ট্রি থেকে শুধু না, সরকারের পক্ষ থেকে যে দৃশ্যমান একটা ক্যাম্পিং থাকবে, প্রচার থাকবে, উদ্যোগ থাকবে-সেটা কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।’
তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘তারা(সরকার) ফ্যাক্টসগুলোকে গোপন করছে, ডাটাগুলোকে গোপন করছে। এর আগে টেস্টই করেনযে করতে পেরেছে তার ওপর তারা নিদের্শনা দি্য়েছে। এখনো আপনার যে টেস্ট হচ্ছে তা খুবই কম।’
‘আমি এর আগে বলেছি যে, আমার বাসার ছেলে সে গিয়েছিলো টেস্ট করতে, এক ঘন্টার মধ্যে বলেছে যে, টেস্ট হবে না, তার পরের দিন আসো। এভাবে টেস্টগুলো হচ্ছে না। শুধু ঢাকাতেই না সারা বাংলাদেশেই টেস্টেগুলো হচ্ছে না। আমরা মনে হয় ১০% ও টেস্ট হচ্ছে না, আ্মার ধারণা এটা। এই অবস্থার জন্য সম্পূর্ণ দায়ী সরকার। তারা কখনোই এটাকে সঠিকভাবে উপলব্ধি করা বা সেটার জন্য একটা জাতীয় ঐক্য সৃষ্টির চেষ্টা করেনি।
করোনা সংক্রামণ থেকে রক্ষা মাস্ক পড়ার বিষয়ে প্রচারণা চালানোর প্রসঙ্গ টেনে ফখরুল বলেন, ‘এই যে, জনগণের সচেতনতার অভাব আমরা দেখতে পারছি-মাস্ক পড়ে না। কেনো পড়ে না? কারণ সরকার সেটা তাদেরকে বুঝাতে সক্ষম হননি।’
‘যে ক্যাম্পিং করা দরকার, যে উদ্যোগটা নেয়া দরকার সেই উদ্যোগটা আসেনি সরকারের কাছ থেকে। যার ফলে সংক্রামণ মারাত্মকভাবে বাড়ছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এই যে, উতসব পালন করা যে, বিদেশী মেহমান-টেমানরা আসছেন। তার অনেক আগেই স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বলা হয়েছিলো যে, করোনা খুব মারাত্মকভাবে আসছে, অবিলম্বে আপনার বন্ধ করা দরকার। কারণ তারা উতসব পালন করার জন্য, বর্ষ পালন করার জন্য তখনও করেননি, এখনো তারা করেননি।’
‘এখন যেহেতু উৎসব শেষ হয়েছে, তাদের মহান অতিথিরা চলে গেছেন। এখন তারা এই বিষয়টা আবার আনছে সামনে।’
করোনা সংক্রামণ মোকাবিলায় জনগণের প্রতি কোনো দায়বদ্ধতা সরকারের নেই মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই সরকার তো নির্বাচিতই না। নির্বাচিত না হলে তো জনগণের প্রতি সেই সরকারের কোনো দায়বন্ধতা থাকতে পারে না। তাদের কোনো দায়বদ্ধতাই নাই। মানুষ মরলো কি বাঁচলে তাতে তাদের কিছু যায় আসে না।
‘তারা ক্ষমতায় থাকবে, লুট করবে এবং সেটা দিয়ে তারা সম্পদ গড়ে তুলবে। আজকে সে জন্য তারা বাংলাদেশকে সত্যিকথা বলতে কী- এখানে যেমন বর্গীরা আসতো, ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি যেমন বাংলাদেশে, ভারতে লুণ্ঠন করেছে, পাকিস্তানিরা যেমন লুণ্ঠন করেছে এরাও একই কায়দায় বাংলাদেশকে লুণ্ঠন করছে। একটা গোষ্ঠি তারা বিত্তবান থেকে আরো বিত্তবান হচ্ছে। আর বেশিভাগ মানুষ গরীব থেকে আরো গরীব হচ্ছে।’
করোনা সংক্রামণ থেকে রক্ষায় দলের স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীর কর্মসূচি স্থগিত করার কথা পুনরুল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা আমাদের স্বাধীনতার সূবর্ণজয়ন্তীর কর্মসূচি স্থগিত করেছি। আমরা রাজনৈতিক কর্মসূচি করতে বাধ্য হয়েছি যখন তারা(সরকার ও ক্ষমতাসীন দল) আমাদের জনগণের ওপর এভাবে আক্রমণ করেছে, হামলা করেছে তার জন্য। পরবর্তি সিদ্ধান্ত আমরা আমাদের দলের মিটিং করে আপনাদের জানাবো।’
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলনে দলের সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন নসু, সহ দফতর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু ও চেয়ারপারসনের প্রেস উইংয়ের সদস্য শায়রুল কবির খান উপস্থিত ছিলেন।