স্বাধীনতা স্তম্ভ চত্বরের দেয়ালে প্রস্রাব, বেদীতে জুতা পায়ে ঘোরাঘুরি
প্রকাশ : 2022-01-13 20:43:17১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার মুক্তিযুদ্ধের নানা স্মৃতি বিজরিত শহর। নানা গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাও রয়েছে এই শহরে। ১৯৭১ সালে প্রায় ২৫ হাজার বিহারির বসবাস ছিল এই শহরে। নানা রকম অত্যাচার করতো তারা বাঙালীদের ওপর। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর প্রক্কালে বিহারিরা পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বাঙালী নিধন কার্যক্রম শুরু করে। শেষ পর্যন্ত তাদের হত্যাযঙ্গের ভয়ে ভিত না হয়ে ঘুড়ে দাঁড়ায় বাঙালীরা। প্রাণ যায় উভয় পক্ষের লোকজনের। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে পাক বাহিনী সান্তাহারে বিহারি হত্যা কান্ডের প্রতিশোধ হিসাবে ব্যাপক হত্যাযঙ্গ সংগঠিত করে। প্রাণ যায় সান্তাহারে অনেক হিন্দু, মুসলমান সহ নানা ধর্মের মানুষের।
মহান মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের জন্য সান্তাহারে একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মান করা হয় ২০১৫ সালে। স্বাধীনতা স্তম্ভের মূল বেদিতে জুতা পায়ে উঠা ও বসা নিষেধ থাকলেও মানছে না দর্শনার্থীরা। পাশাপাশি স্তম্ভের দেওয়ালেই প্রসাব করছে অনেকে যার কারণে দূগন্ধে আশেপাশে টেকাই যেন দায়। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে জুতা পরে আড্ডা জমায় স্বাধীনতা স্তম্ভের মূল বেদিতে। সেলফি তোলায় ব্যস্ত দর্শনার্থীরা, তাই ভুলেই গেছেন মূল বেদিতে জুতা পায়ে যেতে নেই। পাশাপাশি স্বাধীনতা চত্বরের যেখানে সেখানে মোটরসাইকেল পার্কিং করে রাখা হচ্ছে যার কারণে সুন্দর্য নষ্ট হচ্ছে স্বাধীনতা স্তম্ভের।
রেলগেটের ব্যবসায়ী রাঙ্গা খান বলেন, এলোমেলো ভাবে মোটরসাইকেল পার্কিং ও বেদিতে জুতা পায়ে দর্শনার্থীরা উঠলে মানা করলে তারা শুনতে চায় না। যার ফলে মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের জন্য নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভের অবমাননা করা হয়। বিষয়টি কতৃপক্ষের দৃষ্টি আর্কষন করছি। এ বিষয়ে আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্বাধীনতা স্তম্ভের ডিজাইনার সাজেদুল ইসলাম চম্পা বলেন, স্বাধীনতা চত্বরে জুতা পায়ে ওঠা নিয়ে এর আগেও আমি বহুবার মানুষদের সচেতন করার চেষ্টা করেছি।
স্বাধীনতা আমাদের গৌরবের বিষয় আমাদের অহংকার আর স্বাধীনতা স্তম্ভ তারই প্রতীক। আমার লজ্জায় মাথা অবনত হয়ে আসে। এসব দেখে আমি স্তম্ভিত, লজ্জিত হই। মনে মনে ভাবি কাদের জন্য মুক্তিযুদ্ধারা যুদ্ধ করলো আর কাদের জন্য স্বাধীনতার এই স্মৃতি স্তম্ভ নির্মাণ করলাম।
এ ব্যাপারে রেলওয়ে মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কার্যালয়ের কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রশিদ বলেন, স্বাধীনতা স্তম্ভে জুতা পায়ে উঠা আমাদের কারোই কাম্য নয়। এ বিষয়ে মানুষজনদের আরও সচেতন করতে হবে এবং নিজেদেরকে আরোও সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি এটি বন্ধের জন্য সকলকে এক সাথে এগিয়ে আসতে হবে।