স্পিডবোট-বাল্কহেড সংঘর্ষ: স্পিডবোট চালক আটক
প্রকাশ : 2021-05-03 19:53:31১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
মাদারীপুরের শিবচরে বাংলাবাজার-শিমুলিয়া নৌরুটের কাঁঠালবাড়ী ঘাট সংলগ্ন এলাকায় বাল্কহেডের (বালু টানা কার্গো) সাথে স্পিডবোটের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে এ পর্যন্ত ২৬ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।
দুর্ঘটনায় আহত ৫ জনকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ভর্তি ৫ জনের মধ্যে একজন ওই স্পিডবোটের চালক শাহ আলম। তাকে আটক করেছে পুলিশ।
অপরদিকে, পদ্মায় স্পিডবোট দুর্ঘটনায় ২৬ জনের প্রাণহানির ঘটনাটি তদন্তের জন্য ৬ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিভাগীয় উপ-পরিচালক আজহারুল ইসলামকে প্রধান করে এ তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করে মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন। এছাড়াও মৃতদের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
ঘাট কর্তৃপক্ষ, উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ সূত্র জানায়, সোমবার সকাল সাতটার দিকে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট থেকে ৩১ জন যাত্রী নিয়ে স্পিডবোট মাদারীপুরের শিবচরের বাংলাবাজারের দিকে যাচ্ছিল।
স্পিডবোটটি কাঁঠালবাড়ী (পুরাতন ফেরিঘাট) ঘাটের কাছে আসলে নদীতে থাকা একটি বাল্কহেড এর পেছনে সজোরে ধাক্কা লেগে উল্টে যায়। খবর পেয়ে শিবচর থানা পুলিশ, নৌ-পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার অভিযান শুরু করেন। ঘটনাস্থল থেকে ২৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
সাঁতরে তীরে উঠছেন ৫ জন। তাদের উদ্ধার করে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে সেখানে এক নারীর মৃত্যু হয়।
এদিকে নিহত ২৬ জনের মধ্যে আজ বেলা আড়াইটা পর্যন্ত ৮ জনের পরিচয় শনাক্ত করেছে পুলিশ। তারা হলেন ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলার মাইগ্রো এলাকার আরজু সরদার (৪০) ও তার দেড় বছর বয়সী ছেলে ইয়ামিন, মাদারীপুরের রাজৈর শঙ্কারদি এলাকার তাহের মীর (৩০), কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার মাইখারকান্দি এলাকার কাওসার হোসেন (৪০) ও রুহুল আমিন (৩৫), তিতাস উপজেলার ইসুবপুর এলাকার জিয়াউর রহমান (২৮), মুন্সিগঞ্জের সাতপাড় এলাকার সাগর শেখ (৩৭), পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার পসারিয়াবুনিয়া এলাকার জনি অধিকারী (২৬)। তাদের লাশ স্বজনদের কাজে হস্তান্তর করা হয়েছে।
শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিরাজ হোসেন বলেন, স্পিডবোটের চালক গুরুতর আহত। তাকে পুলিশের নজরদারিতে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তিনি আরও বলেন, স্পিডবোটের চালক মাথায় গুরুতর আঘাত পেয়েছেন। তার পুরো মাথায় ব্যান্ডেজ। তিনি কিছুই বলতে পারছেন না। মুমূর্ষু অবস্থায় আছেন।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন বলেন, তদন্ত কমিটিকে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। লকডাউনে স্পিডবোট বন্ধ থাকার পরেও কেন এমন দুর্ঘটনা—এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্পিডবোটটি মুন্সিগঞ্জ থেকে ছেড়ে বাংলাবাজার আসে। তারা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে স্পিডবোট ছাড়ে। এসব বিষয় কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উল্লেখ্য, লকডাউনে গনপরিবহন বন্ধ থাকার পাশাপাশি নৌ-রুটে লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে এরই মধ্যে কিছু অসাধু স্পিডবোট চালক অবৈধভাবে যাত্রী পারাপার করে আসছে।