‘স্কুল বন্ধ, তাই বাবাকে সহযোগিতা করছে স্কুলছাত্র রাকিব’
প্রকাশ : 2021-08-28 16:07:38১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
পড়তে হয় না। স্কুলে যেতে হয় না। শিক্ষকের বকুনি খেতে হয়না। এবং কি বাবা-মায়ের বকুনিও খেতে হয়না। ঘরে বসে সময় কাটে না। তাই বাবাকে সহযোগিতা করার জন্য প্রতিদিন দোকোনে আসি। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত দোকানে বসি। তাই এ ফাঁকে বাবা অন্য কাজ করেন। এতে করে বাবার অনেক সহযোগিতা হয়। আর এ দোকানের আয়ের টাকায় আমাদের সংসার চলে। মাদারীপুরের কালকিনি পৌর এলাকার মজিদবাড়ি (ভূরঘাটা) বাজারের ফল ব্যবসায়ী সালাউদ্দিন মুন্সির অষ্টম শ্রেনীতে পড়ুয়া স্কুলছাত্র মোঃ রাকিব মুন্সি এ কথা বললেন।
মোঃ রাকিব মুন্সি বলেন, আমি, মা ও বাবাসহ আমাদের ৭ জনের সংসার। বাবার একার আয়ের টাকায় চলে আমাদের সংসার। আর উপাজর্নের একমাত্র দোকানই ভরসা। দোকানের আয়ের টাকায় সংসার চালাতে বাবার অনেক কষ্ট হয়। তাই আমি স্কুল বন্ধ থাকায় দোকানের কাজে বাবাকে দিনের বেশির ভাগ সময় সহযোগিতা করি। আমি দোকানে বসলে বাবা অন্য কাজ করেন। ফলে সংসারে কিছুটা হলেও সহযোগিতা হয়। এদিকে কিছুদিন আগে লকডাউনের কারণে মাঝে মধ্যে দোকান বন্ধ রাখতে হয়েছে। সে কারনে বাবা অনেক টাকা দেনা হয়ে পরেছেন। যে কারণে এখন আমি বেশি সময় দোকানে থাকি। আমি প্রতিদিন দোকানে বসলে বাবার খুব উপকার হয়।
প্রতিদিন দোকানে বসলে তোমার পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাবে এমন কথায় হাসিমুখে রাকিব বলল, গরিবের আবার পড়ালেখা। শিশু রাকিবের সঙ্গে কথা বলার সময় চলে আসেন তার বাবা সালাউদ্দিন মুন্সি। তাকে প্রশ্ন করার আগেই তিনি বলেন, বাড়িতে বসে থেকে কী করবে? তার চেয়ে ভাল এখন থেকে ব্যবসা করুক। যাতে বড় হলে দোকান করে খেতে পারে। তিনি আরো বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে মানুষের আয় রোজগার কমে গেছে। প্রতিদিন ৫-৭শ টাকা আয় করলেও এখন ২-৩শ' টাকা আয় করতে পারি না। এ টাকা দিয়ে আমার ৭ জনের সংসার চালাতে হয়। তিনি কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, পরিবার-পরিজন নিয়ে এ দোকানের আয়ের ওপর, চলতে হয়। তিনি আরও বলেন, বিয়ে করার আগ পর্যন্ত আমার কাজ করে খেতে হয়নি। এখন আমার শিশু বাচ্চা দিয়ে দোকান চালাতে হয়। ভাগ্যে এটাই ছিল।
কালকিনি সৈয়দ আবুল হোসেন একাডেমীর প্রধান শিক্ষক বিএম হেমায়েত হোসেন বলেন, করোনাভাইরাস সংক্রমণরোধে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে। যে কারণে অসহায় অনেক শিক্ষার্থীরা বাবাকে সহযোগিতা করছেন।