সোলার পার্ক প্রকল্প থেকে নিজের নাম বাদ দিলেন প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশ : 2021-08-10 20:56:27১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চরম আপত্তির কারণে জামালপুরের মাদারগঞ্জের দেশের সর্ববৃহৎ সোলার পার্ক প্রকল্প থেকে নিজের নাম বাদ দেয়া হলো। মন্ত্রী, সচিবদের অনুরোধও তিনি রাখেন নি। প্রধানমন্ত্রী প্রকল্পে নিজের নাম বাদ দিয়ে সোলার পার্ক মাদারগঞ্জ জামালপুর রাখার জন্য নির্দেশ দেন বলে পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান জানান।
শেরেবাংলা নগরস্থ এনইসি সম্মেলন কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভার্চুয়াল সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত একনেক সভায় শেখ হাসিনা সোলার পার্ক জামালপুর ১০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ ১০টি প্রকল্প অনুমোদনের সময় এই নির্দেশনা দেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভার্চুয়ালী যোগ দিয়ে সভাপতিত্ব করেন। বৈঠক শেষে আনুষ্ঠানিক ব্রিফিংএ পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান এই তথ্যগুলো সাংবাদিকদের জানান। এসময় কিছু কিছু তথ্যও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলমও জানান। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ১০টি প্রকল্প অনুমোদন দেয়া হয়। যা বাস্তবায়নে খরচ হবে ৭ হাজার ৯৮৫ কোটি ৫১ লাখ টাকা। যার মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের অর্থায়ন ৬ হাজার ৬৬০ কোটি ২৯ লাখ টাকা এবং বিদেশী ঋণ ১ হাজার ১৮৮ কোটি ১৩ লাখ টাকা। সংস্থার নিজস্ব অর্থ রয়েছে ১৩৭ কোটি ৯ লাখ টাকা।
পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেন, সোলার বিদ্যুৎ প্রকল্পটি আলোচনার সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার নাম বাদ দিতে হবে। কিন্তু নামটি রাখার জন্য সদস্যরা অনুরোধ করেন। তারা বলেন, এটা আইকনিক প্রকল্প। তাই আপনার নাম থাকা প্রয়োজন। সদস্যরা আরও বলেন, ১০০ মেগাওয়াট সোলার বিদ্যুৎ কেন্দ্র। তাই প্রধানমন্ত্রীর নামটা থাকা উচিত। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী রাজি হননি বলে জানান এমএ মান্নান।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পের নতুন নাম সোলারপার্ক, মাদারগঞ্জ, জামালপুর দিতে বলেছেন। এছাড়া পর্যায়ক্রমে সারাদেশে জরার্জীর্ণ ও বেইলি সেতু ভেঙে নতুন সেতু করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। আর পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে থাকা মুক্তিযুদ্ধের স্মারক সংগ্রহের নির্দেশও দিয়েছেন শেখ হাসিনা বলে জানান পরিকল্পনামন্ত্রী। মন্ত্রী জানান, কুড়িগ্রামের দুধকুমার নদী ড্রেজিং ভালোভাবে করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বলেছেন, সব সংস্থার সাথে সমন্বয় করে ড্রেজিং করতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, যেহেতু মোবাইল কোম্পানি প্রায় সবগুলোই বেসরকারি খাতে, সেখানে মাত্র একটি সরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। এই টেলিটকে কলরেটও অনেক কম। জনস্বার্থে লস দিয়ে হলেও সরকার এটা পরিচালনা করেছে। সবকিছু বেসরকারি খাতের উপর ছেড়ে দিলে হয় না। তাই গ্রামপর্যায়ে টেলিটকের ৫জি সেবা দেয়ার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
অনুমোদিত প্রকল্পগুলো হলো, ২ হাজার ২০৪ কোটি ৩৯ লাখ টাকায় গ্রামপর্যায়ে টেলিটকের নেটওয়ার্ক সম্প্রসারণ এবং ৫জি সেবা দিতে নেটওয়ার্ক আধুনিকায়ন, ৮৬১ কোটি ৩৯ লাখ টাকা ব্যয়ে জরাজীর্ণ, অপ্রশস্তকরণ ও গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্ট বিদ্যমান বেইলি ও অন্যান্য ঝুঁকিপুর্ণ সেতু প্রতিস্থাপন প্রকল্প, ৪৬৭ কোটি ৭৬ লাখ টাকায় বাগেরহাট-রামপাল-মোংলা জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নয়ন প্রকল্প, দেশি-বিদেশি উৎস থেকে মুক্তিযুদ্ধের অডিও ভিজ্যুয়াল দলিল সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এবং বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের সক্ষমতা বৃদ্ধি প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ৬২ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। ১০৬ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যয়ে চর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সেটেলমেন্ট প্রজেক্ট-৪, এক হাজার ৯০ কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা জেলার কেরানীগঞ্জ উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ সড়ক উন্নয়ন প্রকল্প, ৯২৮ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে পল্লী জীবিকায়ন প্রকল্প তৃতীয় পর্যায়, ৬৯২ কোটি ৬৮ লাখ টাকায় কুড়িগ্রাম জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত দুধকুমার নদী ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন প্রকল্প, ৫৯ লাখ ৯ লাখ টাকা ব্যয়ে উপকূলীয় চরাঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন প্রকল্প এবং ১ হাজার ৫১১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ব্যয়ে সোলার পার্ক, জামালপুর এ মাদারগঞ্জ ১০০ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ।