সূরা তাকাসূরে মানুষকে যে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে

প্রকাশ : 2023-12-21 14:37:14১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

সূরা তাকাসূরে মানুষকে যে সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে

সূরা তাকাসূর, পবিত্র কোরআনের ১০২ নম্বর সূরা। এর আয়াত সংখ্যা আট। এটি মক্কায় অবর্তীণ সূরা এবং সূরাটি পবিত্র কোরআনের ৩০তম পারায় অবস্থিত।তাকাসুর শব্দটি আরবি: كثرة থেকে উদ্ভূত হয়েছে। এর অর্থ প্রচুর ধন-সম্পদ সঞ্চয় করা। হযরত ইবনে আব্বাস ও হাসান বসরী তফসীর করেছেন এ শব্দটি প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা অর্থেও ব্যবহৃত হয়। অন্যের তুলনায় বেশি প্রাচুর্য লাভ করার কথা নিয়ে পরস্পরের মোকাবেলায় বড়াই করে বেড়ানো এবং এর পরিণতি বিষয়ে সূরাটি নাজিল হয়েছে।হযরত ইবনে আব্বাস বর্ণনা করেন, রসূলুল্লাহ্‌ একবার এ আয়াত তেলাওয়াত করে বললেনঃ এর অর্থ অবৈধ পন্থায় সম্পদ সংগ্রহ করা এবং আল্লাহ্‌র নির্ধারিত খাতে ব্যয় না করা।

সূরা তাকাসূরের প্রথম আয়াতে বলা হয়েছে,  ধন-সম্পত্তি ও প্রাচুর্য মানুষকে এমনভাবে ব্যস্ত করে রেখেছে, যার ফলে তার প্রতি মোহাচ্ছন্নতা এর থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ জিনিস আখেরাত ও তার জন্য প্রস্তুতি থেকে গাফেল করে দিয়েছে। তার মোহ মানুষকে এমনভাবে আচ্ছন্ন করে রেখেছে যে, মানুষ তারই চিন্তায় নিমগ্ন। এখানে প্রাচুর্য বলতে এমন সবকিছুই উদ্দেশ্য যা কিছুর প্রাচুর্যের জন্য মানুষ সাধারণত চেষ্টা করে থাকে এবং অহংকার করে থাকে। হতে পারে সেটা ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি, সাহায্য-সহযোগিতাকারী, সৈন্য-সামন্ত, দাস-দাসী, মান-মর্যাদা ইত্যাদি যা-ই মানুষ বেশী পেতে চায় এবং অপরের উপর প্রাধান্য নেয়ার চেষ্টা করে। এবং যেখানে আল্লাহর সন্তুষ্টি উদ্দেশ্য থাকেনা। আর মানুষের এমন মোহাচ্ছন্নতা তাকে আল্লাহ থেকে, তার সান্নিধ্য লাভ এবং তার দিকে প্রত্যাবর্তন থেকে, তার ভালবাসাকে সবকিছুর ভালবাসার উপর স্থান দেয়া থেকে, যার ইবাদতের জন্য তাকে সৃষ্টি করা হয়েছে সেটা থেকে গাফেল করে রেখেছে।

এরপর বলা হয়েছে, প্রাচুর্যের প্রতি মানুষের এই মোহাচ্ছন্নতা তাদের মৃত্যু পর্যন্ত নিয়ে যাবে।পৃথিবীতে মানুষ বলাবলি করে, আমরা অমুক বংশের লোক, আমরা অমুক গোত্রের চেয়ে বেশী, আমাদের সংখ্যা অনেক। এভাবে বলতেই থাকল। অথচ তারা কমতে কমতে সবাই কবরবাসী হয়ে গেল। অতএব, আয়াতের মর্মার্থ এই যে, বলা হয়েছে, যারা ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততির ভালবাসা অথবা অপরের সাথে বড়াই করায় এমন মত্ত হয়ে পড়ে যে, পরিণাম চিন্তা করার ফুরসন্তই পায় না। তাই বলা হয়-

“ বনি আদমের কাছে যদি দুই উপত্যকা সমান সম্পদ থাকে তারপরও সে তৃতীয় একটি উপত্যকার আকাঙ্খা করবে। আদম সন্তানের পেট মাটি ছাড়া আর কিছু দিয়ে ভরে না। ”

 

সা/ই