সিরাজদিখানে ২ কিলোমিটার সড়কের বেহাল দশা, জনদুর্ভোগ চরমে
প্রকাশ : 2021-08-30 13:55:58১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
সিরাজদিখান উপজেলার শেখরনগর ইউনিয়নের শেখরনগর-শেখরনগর দক্ষিন হাটী আলমপুর ২ কিলোমিটার সড়ক এলাকাবাসীর দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বর্ষাকালে সড়কে বৃষ্টির পানি জমে এমনভাবে কাদার সৃষ্টি হয় দেখে মনে হবে চষা ক্ষেত,জনদুর্ভোগ চরমে। সড়কটি সংস্কারের জন্য এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, এমপির কাছে দাবি জানিয়ে এলেও কেউ তাদের দাবির প্রতি ভ্রুক্ষেপ করছে না। আর সড়কে চলাচল করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় অনেক পথচারীর হাত-পা ভেঙে পংঙ্গু হচ্ছে।
এলাকার স্থানীয়রা জানান, সিরাজদিখান- শ্রীনগর নির্বাচনীয় এলাকার সাংসদ মাহী বদরোদ্দোজা চৌধুরী এমপি তিনি নিজেও নির্বাচনকালীন শেখরনগর শেখরনগর দক্ষিন হাটী আলমপুর ২ কিলোমিটার সড়কটি পাকাকরণ করে দিবে বলে কথা দিয়েছেন। কিন্তু তার পরও কেন এ শেখরনগর-শেখরনগর দক্ষিন হাটী ২ কিলোমিটার হচ্ছে না তা আমাদের জানা নেই। আশ্বাস আছে, বাস্তবায়ন নেই। শেখরনগর ইউনিয়ন পরিষদ থেকে শেখরনগর দক্ষিনহাটী আলমপুর গ্রামের শেষ পর্যন্ত সড়কটি প্রায় দুই কিলোমিটার অংশ সেই প্রথম থেকেই বেহাল অবস্থা। সড়কটিতে চলতে গিয়ে প্রতিদিন নাকাল হতে হচ্ছে এ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষের। আবার সামান্য বৃষ্টি হলেই খানাখন্দে ভরা সড়ক দুটিতে পানি জমে যায়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন চলাচলরত সাধারণ মানুষ ও স্কুল কলেজে যাওয়া আশা শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি বেহাল এই সড়কে প্রা প্রায়ই স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীরা চলাচলের সময় খানা-খন্দে পড়ে তাদের জামা-কাপড় নষ্ট করছে। গত দিনের টানা বর্ষণে এই ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে।
এলাকার সুশীল সমাজ প্রতিনিধি প্রভাষক চৈতি দেবনাথ জানান, ‘ভাঙা এ সড়কে প্রতিদিন আমাদের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। পথচারীদের দুর্ভোগের পাশাপাশি আমাদের ভোগান্তি হচ্ছে রাস্তা দিয়ে যাতায়াত করতে। প্রভাষক চৈতি দেবনাথ আরও বলেন, ‘এই সড়কটি খুব দ্রুত পাকাকরা বাস্তবায়ন করা হোক, তার জন্য আমরা সিরাজদিখান-শ্রীনগর মুন্সীগঞ্জ-১ এলাকার সাংসাদ জনাব মাহী বি চৌধুরীর এর হস্তক্ষেপ কামনা করছি। শিক্ষক প্রকাশ সরকার বলেন, আমাদের এ গ্রামের বেহাল সড়কে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি হয় রোগীদের। বিশেষ করে অ্যাম্বুলেন্সে যেসব রোগী আসেন তাদের যন্ত্রণা অনেকাংশে বাড়িয়ে তোলে। কাচা বেহাল সড়কে সবচেয়ে বেশি কষ্ট হয় অন্তঃসত্ত্বা নারীদের। কারণ, জরুরি মুহূর্তে অথবা গুরুতর অবস্থায় অ্যাম্বুলেন্সে বা কোন সিএনজি বা অটো রিক্সায় করে তাদের হাসপাতালে আনতে হয়। সে সময়ে কোন অ্যাম্বুলেন্স বা সিএনজি ঢোকানো যায় না। এছাড়া অন্য রোগীদেরও দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
আলী আজগর এন্ড আব্দুল্লা কলেজের শিক্ষার্থী শিহাব ও প্রীতি সরকার বলেন, প্রতিদিন আমাদের এই সড়ক দিয়ে কলেজে যাতায়াত করতে হয়। আসা-যাওয়ার সময় যখনই এই পথটুকুর কথা মনে পড়ে, তখনই মনটা খারাপ হয়ে যায়। বিরক্তি আর তিক্ত অভিজ্ঞতা এখানে আমাদের। আমাদের স্থানীয় সাংসদ ,উপজেলা চেয়ারম্যান আমাদের এলাকায় এসে এ সড়কটি করে দিবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু আজও তা করা হয়নি। আমাদের এ এলাকার শিক্ষার্থীদের কথা চিন্তা করে উপজেলা চেয়ারম্যান ও ইউপি চেয়ারম্যান যদি সাময়িক ইটের খোয়া-বালু ফেলে সংস্কার করায় আপাতত কিছুটা ভোগান্তি কমবে বলে আশা করছি। ৬ নং ওয়ার্ড স্থানীয় ইউপি সদস্য হেলাল খান, গত ৩ বছর পূর্বেও এ সড়কের কাজটি জন্য টাকা বাজেট হয়েছে শুনেছি। এর মধ্যে আমরা দুবার আমাদের চেয়ারম্যানকে জানিয়েছি, তিনিও আমাদের আশ্বাস দিয়েছেন আমাদের এ দুই কিলোমিটার সড়ক করে দিবেন। সরেজমিনে দেখা যায়, শেখরনগর-শেখরনগর দক্ষিন হাটী আলমপুর সড়কটির ওপর এ গ্রামের লোকজন নির্ভরশীল।
এলাকার লোকজন এ সড়ক দিয়েই যাতায়াত করছেন। শুধু তাই নয় ওই এলাকার স্কুল-কলেজগামী ছাত্র-ছাত্রীরাও এ সড়কের ওপর নিভর্রশীল। সর্বোপরি এলাকার কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধান-পাটসহ অন্যান্য পণ্য বাজারজাত করতে এ সড়ক দিয়েই বিভিন্ন স্থানে প্রেরণ করতে হয়। এ ছাড়া বিকল্প কোন রাস্তা নেই। ফলে কৃষকরা ধানসহ অন্যান্য পণ্য বাজারজাত করতে মারাত্মক অসুবিধায় পড়ছে। সিরাজদিখান উপজেলার শেখরনগর ইউনিয়নের শেখরনগর-শেখরনগর দক্ষিন হাটী আলমপুর থেকে কৃষকরা প্রতি মৌসুমে হাজার হাজার মণ ধান শ্রীনগর বাজারসহ বিভিন্ন হাট বাজারে বিক্রি করে থাকে। ওই কৃষিপণ্য নেওয়ার একমাত্র পথ এ সড়ক। সড়কটি পুরো দুই কিলোমিটার অংশ কিছু ইট বিছানো কিছু অংশ কাঁচা।
চলতি বর্ষা মৌসূমে সড়কটির এমন অবস্থা হয়েছে যে, যানবাহন তো দূরের কথা পায়ে হেঁটেই চলাচল করা অসম্ভব। কাদার গর্তে পিছলে পড়ে প্রায়ই পথচারীরা হাত-পা ভাঙ্গাসহ মারাত্মক আঘাত পেয়ে থাকেন। সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও এলাকাবাসির ভোটে নির্বাচিত জন প্রতিনিধিরা এ সড়কের ওপর নিভর্রশীল বিপুল জনগোষ্ঠীর দুর্দশা লাঘবে কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। এমতাবস্থায় সড়কটি পাকা করে এলাকাবাসীর ভোগান্তি দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দ্রুত হস্তক্ষেপ আবশ্যক।