সামরিক স্বৈরশাসক জিয়া ও এরশাদ নিজেদের অবৈধ ক্ষমতাকে বৈধতা দিতেই দল গঠন করেন : জয়
প্রকাশ : 2022-04-23 21:16:25১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় জিয়াউর রহমান ও হোসেইন মুহাম্মদ এরশাদের দলের সঙ্গে গণতন্ত্রের সম্পৃক্ততার অভাব আছে বলে উল্লেখ করে বলেছেন, স্বৈরশাসক জিয়া ও এরশাদ তাদের অবৈধ ক্ষমতা দখলকে বৈধতা দেয়ার জন্যই দল গঠন করেন।
সম্প্রতি জয় তার ফেসবুক পোস্টে লিখেন, ‘জিয়াউর রহমান ও এরশাদ উভয়েই তাদের অবৈধ ক্ষমতা দখলকে বৈধতা দেয়ার জন্য যথাক্রমে বিএনপি ও জাতীয় পার্টি গঠন করেন। দেশের রাজনৈতিক পদ্ধতির সাথে এই দলগুলোর কোন সম্পৃক্ততা নেই। গণতন্ত্রের চেয়ে রাজনীতির নামেই দলগুলো সাধারণ মানুষের সাথে নিয়মিত প্রতারণা করে আসছে। জয় বলেন, ‘এই দুই সামরিক স্বৈরশাসকের কোন জনবান্ধব বা রাষ্ট্রবান্ধব রাজনৈতিক দর্শন ছিল না।’
তিনি বলেন, ১৯৪৯ সালে পাকিস্তান সরকারের শোষণের বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তোলার মাধ্যমে জন্ম হয় আওয়ামী লীগের। এই দলের হাত ধরেই স্বতস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে আসে জনগণ। সর্বস্তরের মানুষকে সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন-সংগ্রামের মাধ্যমে শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে প্রতিষ্ঠা পায় দলটি। কিন্তু বাংলাদেশের তথাকথিত বড় দুই বিরোধী দলের অবস্থান ঠিক এর উল্টো। বিএনপি ও জাতীয় পার্টির জন্মই হয়েছে রাতারাতি সরকারি দল হিসেবে। সংবিধান ও সেনা বাহিনীর নিয়ম ভঙ্গ করে, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ভূ-লুণ্ঠিত করে যারা অবৈধভাবে রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করেছিল, তাদের পিঠ বাঁচানোর ঢাল হিসেবে গঠন করা হয়েছিল এই দল দুটি। একারণে এই দুই দলের কোনো শক্ত জনভিত্তি নেই। ফলে, দেশের গণতন্ত্রের বিকাশে বিরোধী দল হিসেবে এদের ভূমিকা শূন্য।
জয় বলেন, মূলত অবৈধভাবে দখল করা ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ী করার জন্য বিএনপি গঠন করেছিল স্বৈরাচার জিয়াউর রহমান। এই দলের ছাত্র সংগঠন খোলার অজুহাতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের হাতে অস্ত্র তুলে দেয় সে। দেশজুড়ে কমিটি দেওয়ার ছদ্মবেশে সন্ত্রাসী ও দুর্বৃত্তদের নিয়ে বিশেষ বাহিনী গঠন করে বিএনপি। পরবর্তীতে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানও সেই ধারা অব্যাহত রাখে। তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে বিএনপি কোনো রাজনৈতিক দল নয়, এটি আসলে রাজনৈতিক দলের মুখোশ। এই মুখোশ পরে দুর্বৃত্তরা দেশের সম্পদ লুট ও অর্থ পাচার করে বিদেশে। দেশের ভেতরে তারা উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বিস্তার ঘটায়। এই দল প্রতিষ্ঠার সঙ্গে যেমন জনসম্পৃক্ততার সম্পর্ক শূন্য, তেমনি এই দলের নেতাদের সঙ্গেও কর্মীদের সম্পর্ক হয় অর্থ লেনদেনের বিনিময়ে। তারেক রহমানকে চাহিদা মতো টাকা না দিলে, বিএনপি থেকে মনোনয়ন পান না নিজ দলের নেতাকর্মীরাও। তাই, সরকারে থাকলে সাধারণ মানুষের ওপর লুটপাট ও নির্যাতন এবং বিরোধী দলে থাকলে বিদেশিদের কাছে নালিশ ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকে দলটি। তিনি বলেন, জিয়াউর রহমানের বিএনপি ও এরশাদের জাতীয় পার্টি গঠিত হয়েছিল অবৈধভাবে দখল করা ক্ষমতাকে ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বৈধতা দেওয়ার জন্য। দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সঙ্গে এসব দলের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। রাজনীতির নামে নিয়মিত সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে দল দুটি।
বিরোধীদল দাবিকারী বিএনপি নেতাদের জনমুখী বা কল্যাণকামী কোনো রাষ্ট্রদর্শনও নেই। উল্টো তাদের দলের গঠনতন্ত্রেই উৎসাহিত করা হয়েছে দুর্নীতিকে। দুর্নীতিবাজদের দ্বারা দল পরিচালনার জন্য গঠনতন্ত্র সংশোধনের ইতিহাস পৃথিবীর ইতিহাসে আর দ্বিতীয়টি নেই। রাজনৈতিক দলের ছদ্মবেশে লুটপাট ও সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র পরিচালনা করাই বিএনপি নেতাদের কাজ উল্লেখ করে জয় বলেন, গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ও জনগণের ওপরও আস্থা নেই দলটির। একারণে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলের জন্য সহিংসতা সৃষ্টি করে সাধারণ মানুষ হত্যা, পেট্রোল দিয়ে মানুষ ও যানবাহন পোড়ানো, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার মাধ্যমে সমাজকে অস্থির করে তোলাই এই দলের কাজ। রাজনীতির নামে এসব নাশকতামূলক কর্মকান্ডের কারণে মানুষ বিএনপি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে।
তিনি বলেন, এসব দল অবৈধভাবে যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন তাদের অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকান্ড এবং দমনপীড়নের কারণে অন্য কোনো শক্তিশালী বিরোধী দলও গড়ে ওঠার সুযোগ পায়নি। এছাড়াও ডিজিটাল যুগে এসে অনলাইনে নিয়মিত গুজব ছড়ানোর মাধ্যমেও মানুষকে ধারাবাহিকভাবে বিভ্রান্ত করে যাচ্ছে এসব দলের লোকেরা। ফলে, সরকারের গঠনমূলক সমালোচনা এবং সরকারকে বিভিন্ন ইস্যুতে কল্যাণমুখী পরামর্শ দেওয়ার সুযোগও পাচ্ছে না অন্যান্য দলগুলো। গণমানুষকেন্দ্রিক রাজনীতি না করার কারণে শক্তিশালী বিরোধী দল হিসেবে জনগণের আস্থা অর্জন করতেও ব্যর্থ বিএনপি। ফলে, সার্বিকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে রাষ্ট্র, বলেন জয়।