সাদপন্থিদের প্রধান অনুসারী ওয়াসিফুল ইসলামসহ ২৩ জনের আগাম জামিন

প্রকাশ : 2025-01-08 15:27:10১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

সাদপন্থিদের প্রধান অনুসারী ওয়াসিফুল ইসলামসহ ২৩ জনের আগাম জামিন

ইজতেমা মাঠে তাবলীগ জামাতের দুপক্ষের সংঘর্ষে হতাহতের ঘটনায় মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের প্রধান মুরুব্বি সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলামসহ ২৩ জনকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বুধবার (৮ জানুয়ারি) বিচারপতি মোহাম্মদ মাহবুব-উল ইসলাম ও বিচারপতি মো. হামিদুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আসামিপক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন।

আদেশের পর আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, টঙ্গীর ইজতেমা ময়দানে নিহতের ঘটনায় সাদপন্থিদের প্রধান মুরুব্বি সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলামসহ আসামিদের বেশিরভাগের বয়স ৮০ বছরের বেশি। মামলার আসামিদের সবাই সমাজের বয়োজ্যেষ্ঠ ও গণ্যমান্য ব্যক্তি। তাদের মধ্যে সাবেক সচিব, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে ছিলেন এমন ব্যক্তিও রয়েছেন। আজ ২৩ জন আসামিকে পুলিশি প্রতিবেদন দেওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছেন আদালত।

এর আগে গত ২৪ ডিসেম্বর এ মামলায় মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের প্রধান মুরুব্বি সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলামসহ ২৫ জনের জামিন আবেদনটি ফেরত দিয়েছিলেন।বিচারপতি মোহাম্মদ মাহবুব-উল ইসলাম ও বিচারপতি ইউসুফ আব্দুল্লাহ সুমনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দিয়েছিলেন। তারও আগে গত ১৭ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে টঙ্গীর ইজতেমা মাঠে সংঘর্ষ ও নিহত হওয়ার ঘটনায় গত ১৯ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) টঙ্গী পশ্চিম থানায় মামলা করেন মাওলানা জোবায়েরের অনুসারী এস এম আলম হোসেন নামের এক ব্যক্তি। তিনি কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার গাইটাল গ্রামের মৃত এস এম মোক্তার হোসেনের ছেলে। তিনি কিশোরগঞ্জ জেলার আলমি শুরার সাথি।

মামলায় ২৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকশ জনকে আসামি করা হয়েছে। আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য কয়েকজন হলেন- সাদ অনুসারীদের প্রধান মুরুব্বি সৈয়দ ওয়াসিফুল ইসলাম, তার ছেলে ওসামা ইসলাম আনু, আবদুল্লাহ মনসুর, কাজী এরতেজা হাসান, মোয়াজ বিন নূর, জিয়া বিন কাশেম, আজিমুদ্দিন, আনোয়ার আবদুল্লাহ, শফিউল্লাহ প্রমুখ। আসামিরা সবাই সাদ অনুসারীদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে রয়েছেন।

জানা যায়, বেশ কিছুদিন ধরেই তাবলীগ জামাতের মাওলানা সাদ অনুসারীদের টঙ্গীতে জোড় ইজতেমাকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। মাওলানা জুবায়ের অনুসারীরা গত ২৯ নভেম্বর থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত জোড় ইজতেমা পালন করেন। এরপর ২০ ডিসেম্বর থেকে মাওলানা সাদ অনুসারীরা জোড় ইজতেমা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিলে তাদের প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে ইজতেমা ময়দানে অবস্থান নেন জুবায়ের অনুসারীরা। গত ১৭ ডিসেম্বর সন্ধ্যা থেকে সাদ অনুসারীদের ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ ঠেকাতে ময়দানের চারপাশে ও বিভিন্ন সড়কের মোড়ে লাঠি হাতে পাহারা বসায় জুবায়ের অনুসারীরা।

অন্যদিকে, দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে সাদ অনুসারীরা ইজতেমা ময়দানের উদ্দেশে বাস-ট্রাকে করে মাঠে আসতে থাকে। ১৭ ডিসেম্বর দিবাগত মধ্যরাতে সড়কের বিভিন্ন পয়েন্টে সাদ অনুসারীদের গাড়ি আটকে দেন জুবায়েরপন্থিরা। একপর্যায়ে রাত আড়াইটার দিকে মাওলানা সাদ অনুসারীরা ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করলে উভয় গ্রুপের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দু গ্রামের মৃত ওসমান গণির ছেলে আমিনুল ইসলাম (৬৫), ফরিদপুর সদর উপজেলার কমলাপুর গ্রামের মৃত শেখ সামাদের ছেলে বেলাল হোসেন (৬০) এবং বগুড়া সদর উপজেলার ধাওয়াপাড়া গ্রামের ওমর উদ্দিনের ছেলে তাজুল ইসলাম নিহত হন। এ ছাড়া ওই সংঘর্ষের ঘটনায় উভয় গ্রুপের অন্তত অর্ধশতাধিক মুসল্লি আহত হয়।

পরে এ ঘটনায় গত ১৯ ডিসেম্বর (বৃহস্পতিবার) রাতে টঙ্গী পশ্চিম থানায় মামলা করা হয়। এ ঘটনায় ২০ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে ঢাকার খিলক্ষেতের একটি বাসা থেকে মামলার ৫ নম্বর আসামি আসামি মোয়াজ বিন নূরকে (৪০) গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি তাবলীগ জামাতের সাথী এবং মাওলানা সাদ কান্ধলভীর অনুসারীদের মুখপাত্র। পরে ২২ ডিসেম্বর মোয়াজ বিন নূরের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন গাজীপুরের অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আলমগীর আল মামুন। 

সা/ই