সতর্কতার কোনো বিকল্প নেই
প্রকাশ : 2021-03-31 12:17:37১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আবারো অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পাওয়ায় সর্বত্র ব্যাপক উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েকদিনে সংক্রমণ ও মৃত্যুর উচ্চহার সচেতন মানুষদের ভাবিয়ে তুলেছে। গত ৩০ মার্চ বাংলাদেশে করোনায় সংক্রমিত হয়েছে ৫ হাজার ৪২ জন। এর আগেরদিন অর্থাৎ ২৯ মার্চ এ সংখ্যা ছিল ৫ হাজার ১৮১ জন। দেশে এটাই করোনা সংক্রমণের আপাত সর্বোচ্চ সংখ্যা। এই দুই দিনে ৪৫ জন করে মনুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে। উল্লেখ্য, গত বছরের ২ জুলাই সর্বোচ্চ ৪ হাজার ১৯ জন সংক্রমিত হয়েছিল। এ পর্যন্ত আমাদর দেশে করোভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছে ৬ লাখ ৫ হাজার ৯৩৭ জন। মৃত্যুবরণ করেছে ৮ হাজার ৯ শ ৯৪জন। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের হার গতবারের চেয়েও ঊর্ধ্বমুখী।
করোনা ভাইরাসের এই ঊর্ধ্বমুখী সংক্রমণের মুখে সরকার ১৮ দফা স্থ্যবিধি জারি করেছে। সেগুলোর মধ্যে মুখে মাস্ক পরে বাইর যাওয়া, গণপরিবহণে অর্ধেক যাত্রী পরিবহন, নিয়মিত সাবান দিয়ে হাত ধোয়া, সামাজিক অনুষ্ঠান সীমিত পরিসরে করা, সম্ভব হলে পরিহার করা ইত্যাদি অন্যতম। সব অফিস আদলতে অর্ধেক জনবল দিয়ে কর্যক্রম পরিচালনার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। গণপরিবহন মালিক সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আজ বুধবার থেকেই অর্ধেক যাত্রী নিয়ে বাস চালানোর বিষয়ে সমঝেতা হয়েছে। এজন্য বাসভাড়া ৬০ শতাংশ বাড়ানারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত আপাতত পনের দিনের জন্য বহাল থাকবে, করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ভাড়া পুনরায় পূর্বাবস্থায় ফিরে যাবে।
করোনাভাইরাস সংক্রমণের এই উল্লম্ফন আমাদেরকে উদ্বিগ্ন না করে পারে না। কেননা, বৈশ্বিক এই মহামারীর আঘাতে অন্যান্য দেশের মতো আমাদের দেশেরও সামাজিক ও অর্থনৈতিক কাঠামো নড়বড়ে হয়ে গেছে । গত কয়েক মাস সংক্রমণের হার কিছুটা কম থাকায় জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছিল। কিন্তু করোনা যে তার থাবা গুটিয়ে নেয়নি তা এক্ষণে সবাই উপলব্ধি করতে পারছেন। ফলে কঠোরতা অবলম্বন করে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের কথা সবাই বলছেন। এক্ষেত্রে সরকার কর্তৃক জারিকৃত স্বাস্থ্যবিধি মানতে সবাইকে বাধ্য করার ওপর সচেতনমহল গুরুত্বারোপ করছেন।
এটা অবশ্য নতুন করে বলার প্রয়োজন নেই যে, বিধিনিষেধ মানার ক্ষেত্রে অনীহা এবং অনাগ্রহের প্রবণতা আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষের মধ্যে রয়েছে। তার চাক্ষুষ প্রমাণ মিলবে রাস্তায় বেরুলে। নব্বই শতাংশ মানুষ মুখে মাস্ক ব্যবহার করেন না। বিয়েসহ নানা ধরনের সামাজিক অনুষ্ঠান করা হচ্ছে স্বাভাবিক সময়ের মতো। কক্সবাজার-কুয়াকাটাসহ পর্যটন স্পটগুলোতে মানুষের প্রচন্ড ভীড় আামাদের অসচেতনতার বড় দৃষ্টান্ত। একটি প্রচলিত ধারণা হলো, বাধ্য না হলে আমরা কোনো বিধিই মানতে অভ্যস্ত নই। অশিক্ষত জনগোষ্টীর অসচেতনতকে মানা যায়, কিন্তু যখন শিক্ষিত মানুষেরা স্বাস্থবিধি মানতে চান না, তখন তা মেনে নেয়া যায না। তাই অনেকে মনে করেন, স্বাস্থ্যবিধি মানতে সবাইকে বাধ্য করার জন্য সরকারকে কঠোর অবস্থানে যেতে হবে। প্রয়োজনে জেল-জরিমানার পদক্ষেপ নিতে হবে। কেননা, করোনার ছোবল থেকে রক্ষা পেতে স্বাস্থ্যবিধি পালন ও সতর্কতার কোনো বিকল্প নেই।