শ্রীনগরে শত বছরের পুরোনো মঠের সম্পত্তি দখল, নির্মাণ হচ্ছে ভবন !

প্রকাশ : 2021-07-05 21:04:52১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

শ্রীনগরে শত বছরের পুরোনো মঠের সম্পত্তি দখল, নির্মাণ হচ্ছে ভবন !

একাধিক স্থাপনা নির্মাণে কারণে শ্রীনগর পাইলট স্কুল এন্ড কলেজ গেইট সংলগ্ন এলাকায় জমিদার লালা জগবন্ধু বসুর স্মৃতি রক্ষায় নির্মিত মঠ ও আশপাশ ঢাকা পড়ে গেছে। বাইরে থেকে দেখে বুঝার উপায় নেই, এখানে জমিদারের কোন সমাধী স্থল রয়েছে। ওই এলাকার গোবিন্দ্র মন্ডলের ছেলে চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ধর্ম মন্ডল ও তার ভাই মনষা মন্ডলের বিরুদ্ধে জমিদারের সমাধীস্থলের দেবোত্তর সম্পত্তি দখলে নেওয়ায় স্থাপনা নির্মাণে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় এলাকাবাসী অভিযোগে জানিয়েছে, জমিদারের সমাধীস্থলের শত বছরের পুরনো মঠের দেবোত্তর সম্পত্তি দখলে নিয়ে বর্তমানেও অবৈধভাবে পাকা ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। ফলে ইতিহাস ও ঐতিহ্য থেকে শ্রীনগরের জমিদার লালা জগবন্ধু বসুর মঠ ও সম্পত্তি নিশ্চিহ্ন হওয়ার উপক্রম হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার সদর ইউনিয়নে জমিদারের সমাধীস্থলের দেবোত্তর সম্পত্তি দখলে শত বছরের পুরোনো মঠটির চারপাশে ইট-বালু ও রড দিয়ে পাকা স্থাপনা নির্মাণ করছে মনষা মন্ডল নামের এক ভূমিদস্যু। এর আগে মঠের উত্তর পাশে একটি দু’তলা ভবন নির্মাণ করেছে মনষা মন্ডরের ভাই ধর্ম মন্ডল। এমনকি সীমানা প্রাচীরের ভিতরে নির্মাণ করা পাকা ভবন ও মঠের চারপাশ জুড়ে দেয়া হয়েছে পাকা দেয়াল ও টিনের বেড়া। স্থানীয় এলাকবাসী জানায়, দেবোত্তর সম্পত্তি দখলের কৌশল হিসেবে নির্মিত ভবনের দেয়াল জুড়ে সনাতন ধর্মের বিভিন্ন দেব-দেবীর মূর্তির আলপনায় অলংকরণ করে রেখেছে তারা। যাতে বাইরে থেকে দেখে বুঝা যায়, এটি একটি ধর্মীয় উপাসনালয়!।

এলাকাবাসী অভিযোগে আরও জানায়, দেবোত্তর সম্পত্তির পুরোটাই দখল নেওয়ার পায়তারায় লিপ্ত দখলদার ধর্ম মন্ডল গং। আর কেউ যাতে প্রতিবাদ করার সাহস না পায় তাই কৌশল হিসেবে মঠের স্থানটিতে মাদকের আখড়া গড়ে তুলেছে। এখানে মাদক সেবনকারী ও মাদক কারবারীদের আনাগোনা অনেকাংশে বেড়েছে। ফলে  ছাত্রীরা ইভটিজিংয়ের শিকার হওয়ার পাশাপাশি শ্রীনগর পাইলট স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা মাদকের সংস্পর্শে জড়িয়ে পড়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এই অবস্থায় শত বছরের পুরোনো ঐতিহ্য ধরে রাখতে লালা জগবন্ধু বসুর মঠ ও দেবোত্তর সম্পত্তি রক্ষায় সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন স্থানীয়রা।

জানতে চাইলে অভিযুক্ত মনষা মন্ডল বলেন, এ কাজের জন্য তার পারমিশন নেই। বসবাস করার জায়গা না থাকায় মঠের দেয়াল জুড়ে কয়েকটি রুম তৈরী করছি। আর পাশে নির্মিত পাকা দু’তলা ভবন তার ছোট ভাই ধর্ম মন্ডলের।  

শ্রীনগর উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্ট্রান ঐক্য পরিষদের সভাপতি স্বপন রায় জানান, একাধিকবার ওই দেবোত্তর সম্পত্তিতে পাকা স্থাপনা করতে নিষেধ করা হয়েছে। মনষা মন্ডল ও ধর্ম মন্ডল গং কোনো কর্ণপাত না করে অবৈধভাবে দখল উৎসব চালিয়ে যাচ্ছে।

শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহি অফিসার (ইউএনও) প্রনব কুমার ঘোষ বলেছেন, দখলের বিষয়টি কেউ জানায়নি। তবে শত বছরের পুরনো মঠের দেবোত্তর সম্পত্তি কোনো মতেই কাউকে দখল করতে দেয়া হবে না। দখলে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট ভূমি কর্মকর্তা ও তহসিলদারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।