শ্রীনগরে ছাগল পালনে স্বপ্নপূরনের দ্বারপ্রান্তে সৈয়দ নাসির
প্রকাশ : 2022-03-21 15:44:26১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
মুন্সীগঞ্জ শ্রীনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নে ছাগল পালন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন সৈয়দ মোঃ নাসির। গড়ে তুলেছেন বিশাল একটি ছাগলের খামার।
সৈয়দ মোঃ নাসির শ্রীনগর সদরের দেউলভোগের বাসিন্দা।পড়া লেখা তেমন করতে পারেনি।পরিবারে ছোট ছেলে হয়েও যৌথ পরিবারের দায়িত্ব ছিল তার কাঁধে।নিজে পড়াশোনা না করে আপন ভাইদের নিজ খরচে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
১৯৯৫ সালের প্রথম দিকে অল্প বয়সে বাড়ির পাশে মাজারের মেলায় ৭দিন আগর ও মোমবাতি বিক্রি করেন আর বিক্রির লাভের অংশ ও কিছু জমানো টাকা দিয়ে লৌহজং গোয়ালীমান্দ্রা হাটে গিয়ে চার হাজার টাকা দিয়ে চারটি ‘ব্ল্যাক বেঙ্গল’ জাতের ছাগল কিনে বাড়ির নিয়ে এসে পালন শুরু করেন।মা ও বাবার অজস্র ভালবাসা ও অনুপ্রেরণায় নাসিরের ছোট প্রয়াসে দিনের পর দিন অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে এক বছর পর একটি ছাগল থেকে তিনি লাভ পেতে শুরু করেন।
পরবর্তীতে তিনি বড় পরিসরে একটি খামার করার জন্য উদ্যেগ নেন।বোবা পশুর প্রতি তার ভালোবাসা তৈরি হয়,শুরুটা কষ্টের হলেও সময়ের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে সক্ষম হয়েও হোচটের পর হোচটও খেয়েছন।তার বাড়ির পাশে ছোট একটা জায়গা নির্ধারণ করেন আর সেই জায়গায় মা-বাবার দোয়া নামে উদ্যোক্তা হিসেবে খামার দেন।
এরপর তিনি তার খামারে ভারত থেকে হরিয়ানা, তোতাপারি, যমুনাপারি জাতের বিদেশি ছাগল কিনে আনেন। এরপর তাকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
তিনি একজন সফল খামারী নন,বিগত করোনা কালীন সময়ে খামার থেকে আয়ের অংশ গরীব মানুষের কাছে পৌছে দিতেন। এক সময়ের বেকার যুবক মাত্র কয়েক বছরের ব্যবধানে হয়ে ওঠেন একজন সফল উদ্যোক্তা।বর্তমানে তার খামারে ব্ল্যাক বেঙ্গল, হরিয়ানা, তোতাপারি, যমুনাপারি জাতের প্রায় ৬০টি ছাগল রয়েছে।এসব ছাগল পরিচর্যা এবং পাহারা দেওয়ার জন্য রাখা হয়েছে দুইজন সহকারী।সৈয়দ নাসির বলেন, আমি পড়ালেখা করে চাকরির পেছনে ছুটিনি। আমি চেয়েছিলাম নিজে উদ্যোক্তা হতে।বর্তমানে আমার খামারে ৫০টি বেশী ছাগল রয়েছে।প্রতিদিন ছাগলগুলোর জন্য দুই হাজার টাকার কাঁঠাল পাতার প্রয়োজন হয়। বিদেশি জাতের এই ছাগলগুলো প্রতি বছর দুই বার বাচ্চা দেয়।একটি এক বছর বয়সের ছাগলের ওজন ১০০ কেজি মতো হয়ে থাকে।প্রতি মাসে ৫-১০টি ছাগল এখান থেকে অনেকে কিনে নিয়ে যান।
তিনি আরও বলেন,আশপাশের এলাকার অনেক যুবক আমার কাছে থেকে নানা জাতের ছাগল ও ভেড়া বর্গা নিয়ে সফল হয়েছেন কিন্তুু কিছু অসাধু ব্যক্তির কারনে বর্গা নেওয়া লোকজনের মিথ্যাচারে আমাকে অনেক লোকশান ঘুনতে হয়।তারপরও নাসির থেমে যায়নি,তার খামারে এসে ফার্ম করার ব্যাপারে পরামর্শ নিচ্ছেন অনেক বেকার যুবক।আমি তাদের যথেষ্ট পরিমাণ সহযোগিতা করছি।যাতে করে তারাও চাকরির পেছনে না ছুটে নিজে একজন ভালোমানের উদোক্তা হতে পারে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা মোঃ কামরুজ্জামান বলেন,আমি নতুন এসেছি তবে সামনে সরকারী কোনো প্রণোদনা আসলে আমি অবশ্যই চেস্টা করবো তার খামারটিকে দেওয়ার এবং সরকারীভাবে বিনামূল্যে ঔষধ দিবো।তিনি এখনও প্রায় আমাদের কার্যালয়ে এসে বিভিন্ন ছাগলের ব্যাপারে পরামর্শ নেন। তার মতো যদি কেউ আমাদের কাছে যে কোনো প্রাণির ব্যাপারে পরামর্শ নিতে আসেন আমরা সব ধরনের সহযোগিতা করব।
অপরদিকে সৈয়দ নাসির বলেন,আমি আমার নিজের প্রচেষ্টার সফল হয়েছি।উপজেলা প্রাণীসম্পদ আমাকে তেমন কোনো সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন নি।সরকারী ও বেসরকারী কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে তেমন কোন প্রকার অনুদানও পাইনি।