'শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হচ্ছে'

প্রকাশ : 2021-12-16 20:48:13১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

'শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হচ্ছে'

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ কষ্টার্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে এবং স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সকলকে সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সঙ্গে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও বিজয়ের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় আয়োজিত বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী ‘মহাবিজয়ের মহানায়ক’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এই আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘স্বাধীনতার সুফল জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে সকলকে সততা, নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে  দায়িত্ব পালন করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক ও রাষ্ট্রীয় প্রতিটি কাজে সংশ্লিষ্ট সবাইকে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে।

অনুষ্ঠানের সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশের সফররত ভারতের রাষ্ট্রপতি রাম নাথ কোবিন্দ, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ রেহানা, বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক এবং জাতীয় বাস্তবায়ন কমিটির প্রধান সমন্বয়ক ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী আলোচনায় অংশ নেন।

রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, সকল ক্ষেত্রে নীতি-নৈতিকতা ও আদর্শ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে। স্বাধীনতা দেশের সবচেয়ে বড় অর্জন উল্লেখ করে তিনি বলেন, কিন্তু এই স্বাধীনতা হঠাৎ করেই আসেনি। এর  পেছনে রয়েছে বহু বছরের শোষণ, নির্যাতন ও বঞ্চনার দীর্ঘ ইতিহাস। হাজার বছরেরও বেশি সময় শোষণ-বঞ্চনা, নির্যাতন-নিপীড়নের দুঃসহ পথ অতিক্রম করলেও বাংলা ভাষাভাষী এ জনপদের মানুষের কোনো স্বাধীন সার্বভৌম জাতিরাষ্ট্র ছিল না। দীর্ঘ নয় মাসের লড়াই শেষে ১৯৭১ সালের এই দিনে বাঙালি ছিনিয়ে আনে মহাবিজয়। আর এ বিজয়ের পেছনে যে ব্যক্তিটি সার্বক্ষণিক নেতৃত্ব ও দিকনির্দেশনা দিয়েছেন তিনি আমাদের সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

রাষ্ট্রপতি বলেন, বঙ্গবন্ধু রাজনীতির পাঠ নিয়েছেন গণমানুষের কাছ থেকে। তিনি জনগণের ভাষা বুঝতেন, তাদের দাবি-দাওয়া ও প্রয়োজনের কথা জানতেন এবং সবসময় তাদের পাশে দাঁড়াতেন। বঙ্গবন্ধু অনুসৃত ‘কারো সাথে বৈরিতা নয়, সবার সাথে বন্ধুত্ব’ নীতি অনুসরণ করেই বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কূটনৈতিক অঙ্গনে সফলতার সাথে এগিয়ে যাচ্ছে, তিনি উল্লেখ করেন।

বাংলাদেশ ইতোমধ্যে স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে উল্লেখ করে বলেন, ‘আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের রোল মডেল।’

আবদুল হামিদ বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি আমাদের উন্নয়ন ও অগ্রগতির ধারাকে সাময়িকভাবে বাঁধাগ্রস্ত করলেও থামিয়ে দিতে পারেনি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সময়োচিত ও দূরদর্শী পদক্ষেপের কারণে বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণ এখন নিয়ন্ত্রণে এবং সংক্রমণজনিত মৃত্যুর হারও শূন্যের কাছাকাছি।

মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত ১১ লক্ষাধিক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বমানবতার ইতিহাসে একটি অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন বলেও তিনি উল্লেখ করেন।বাংলাদেশ জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাস করে।

রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানেও ভারতসহ বিশ্ব সম্প্রদায় কার্যকর ভূমিকা রাখবে, তিনি আশা প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রপতি হামিদ বলেন, গৌরব ও ত্যাগের অনুপম বীরত্বগাথা আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ইতিহাস যা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে সম্ভব হয়েছিল।

‘বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি আর তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলায় পরিণত হচ্ছে,’ যোগ করেন তিনি।

জাতির পিতার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে আমরা উন্নত-সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার পথে এগিয়ে যাব, তিনি এই আশা প্রকাশ করে বলেন, যেহেতু বিজয়ের পঞ্চাশ বছরে দাঁড়িয়ে আমরা উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির সুবর্ণ আলো দেখতে পাই।ঢাকায় ভারতের রাষ্ট্রপতিকে স্বাগত জানিয়ে আবদুল হামিদ বলেন, আপনাদের ঢাকায় স্বাপগত জানাতে পারায় আমি আনন্দিত।’

ভারতকে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশী এবং বিশ্বস্ত বন্ধু হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের রাজনৈতিক নেতা ও জনগণ বাংলাদেশকে যে বিরাট নৈতিক ও বৈষয়িক সমর্থন দিয়েছিলেন তা গভীর কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের সশস্ত্রবাহিনীর যে সমস্ত সদস্য নিহত হয়েছে তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি।

তিনি ১৭ মার্চ, ২০২০-এ ‘মুজিব বর্ষে'র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শ্রী নরেন্দ্র মোদির ভিডিও ম্যাসেজের কথা স্মরণ করেন এবং পরবর্তীতে এই বছরের ২৬ মার্চ মুজিববর্ষ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর অনুষ্ঠানে শারীরিকভাবে উপস্থিত থাকায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

ভারতের সঙ্গে বিদ্যমান চমৎকার সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় ১৯৭১ সালে শুরু হওয়া দুই দেশের সম্পর্ক এখন নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। ভারতের রাষ্ট্রপতির এই সফর দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করবে বলে আশা প্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি হামিদ।