শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের ৪৫তম মৃত্যু বার্ষিকী আজ
প্রকাশ : 2021-05-28 09:57:07১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
বাংলাদেশে চারুকলা চর্চার পথিকৃত শিল্পাচার্য জয়নুল আবেদীনের ৪৫তম মৃত্যু বার্ষিকী আজ ২৮ মে (শুক্রবার)। ১৯৭৬ সালের ২৮ মে মৃত্যুবরণ করেন দেশের অন্যতম প্রধান এই শিল্পী। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ-সংলগ্ন এলাকায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়। সাধারণত তার মৃত্যুদিবসে বিভিন্ন স্মরণসভা ও আয়োজন থাকলেও করোনার কারণে শিল্পাচার্যের ৪৫ তম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা হবে পুস্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে। শুক্রবার সকালে তার কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
জয়নুল আবেদীনে ১৯১৪ খ্রিস্টাব্দের ২৯ ডিসেম্বর তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলার কিশোরগঞ্জ মহুকুমার (বর্তমানে কিশোরগঞ্জ জেলা) কেন্দুয়াতে জন্মগ্রহণ করেন। খুব ছোটবেলা থেকেই তিনি ছবি আঁকতে পছন্দ করতেন। পাখির বাসা, পাখি, মাছ, গরু-ছাগল, ফুল-ফল এঁকে মা-বাবাকে দেখাতেন। ছেলেবেলা থেকেই শিল্পকলার প্রতি তার গভীর আগ্রহ ছিল। মাত্র ষোল বছর বয়সে বাড়ি থেকে পালিয়ে তিনি বন্ধুদের সাথে কলকাতায় গিয়েছিলেন শুধু গভর্নমেন্ট স্কুল অব আর্টস দেখার জন্য। তার মা ছেলের প্রবল আগ্রহ দেখে নিজের গলার হার বিক্রি করে কলকাতার তখনকার আর্ট স্কুলে ভর্তি হতে সাহায্য করেন।
জয়নুল আবেদীন সম্পর্কে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন বলেন, 'বাংলাদেশে আধুনিক শিল্পকলা চর্চার পথিকৃত জয়নুল আবেদীন। আমরা তাকে শুধু পথিকৃত হওয়ার কারণে স্মরণ করি না। আন্তর্জাতিকভাবে তিনি তার কর্মকাণ্ডের প্রসার ঘটিয়েছেন।’
নিসার হোসেন আরও বলেন, ‘জয়নুল আবেদীন শুধু চারুকলা অনুষদের প্রতিষ্ঠাতা-ই ছিলেন না। জাতি চারুকলার যে ঐতিহ্যকে ধারণ করে সেটাও তার হাতে গড়া। তিনি জন্মেছিলেন বলেই আমাদের শিল্পকলার বিকাশ হয়েছে। আমাদের শিল্পকলা কোন পথে যাবে সে পথটিও তিনি রচনা করেছেন।’
জয়নুল শিল্পচর্চার জন্য শিল্পচর্চা করেননি উল্লেখ করে চারুকলার শিক্ষক সিনার হোসেন বলেন, ‘একটি জাতি নির্মাণে, মানবিকবোধ নির্মাণে যা যা করণীয় তিনি তা, করে গেছেন। চারুকলা অনুষদ তার দেখানো পথে হাঁটে।’
জয়নুল আবেদিন ১৯৪৩ খ্রিস্টাব্দের দুর্ভিক্ষ চিত্রমালার জন্য বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। তার বিখ্যাত শিল্পকর্মগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, ১৯৫৭-এ নৌকা, ১৯৫৯-এ সংগ্রাম, ১৯৭১-এ বীর মুক্তিযোদ্ধা, ম্যাডোনা। তার দীর্ঘ দুটি স্ক্রল ১৯৬৯-এ অঙ্কিত ‘নবান্ন’ এবং ১৯৭৪-এ অঙ্কিত ‘মনপুরা-৭০’ জননন্দিত দুটি শিল্পকর্ম। অনুমান করা হয় তার চিত্রকর্মের সংখ্যা তিন হাজারের বেশি।