শিবগঞ্জে দুই স্বতন্ত্র প্রার্থীসহ আ. লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীর নির্বাচনি অফিস ভাঙচুর
প্রকাশ : 2021-10-29 16:41:49১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
দ্বিতীয় ধাপের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে বগুড়ার শিবগঞ্জে নির্বাচনী মাঠ সহিংস হয়ে উঠছে। বুধবার রাতে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীদের ১২টি নির্বাচনি অফিস ও ৬টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে প্রতিপক্ষরা। এ ছাড়া সহিংসতায় ২ জন আহত হয়েছে। এর মধ্যে একটি ঘটনায় থানায় মামলা করা হয়েছে। অপরটিও অভিযোগের প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে। সহিংসতায় ক্ষতিগ্রস্ত দুই প্রার্থীরা হলেন বিহার ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী যুবলীগনেতা মতিউর রহমান মতিন এবং মাঝিহট্ট ইউনিয়নের একই স্বতন্ত্র প্রার্থী এসকান্দার আলী সাহানা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বুধবার রাত আটটায় বিহার ইউনিয়নের বিহার হাটে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী ও যুবলীগ নেতা মতিউর রহমানের মোটরসাইকেল মার্কার নির্বাচনী অফিসে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর সমর্থকরা লাঠি সোঠা নিয়ে অতর্কিত হামলা চালিয়ে চেয়ার টেবিল ও ৬টি মোটর সাইকেল ভাঙচুর করে। হামলার ঘটনায় দুই কর্মী আহত হন। আহতরা হলেন, বিহার ইউনিয়নের মোল্লাপাড়া গ্রামের বাবু মোল্লার ছেলে মো. হারুন মিয়া (৩৫) এবং বাগিচা পাড়া গ্রামের লবা মন্ডলের ছেলে মো. জুয়েল ইসলাম (৩৬)। এসময় সহিংসতায় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
বিহার ইউপির স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মতিউর রহমান অভিযোগ করে বলেন, বিনা উস্কানিতে প্রতিপক্ষের লোকজন আমার নির্বাচনি অফিসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। আমার দুই কর্মীকে ছুরিকাহত করে।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও বর্তমান চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান ফিরোজ আহমেদ রিজু ২০/২৫ জন বহিরাগত লোকজন নিয়ে বিহার বন্দরে প্রবেশ করে আমার ও নৌকা প্রতিকের বিরুদ্ধে কুরুচিপুর্ন স্লোগান দেয়। এতে উপস্থিত জনতা প্রতিবাদ করতে গেলে বহিরাহতরা সাধারণ মানুষের ওপর হামলা করে। তখন স্থানীয় জনতা প্রতিরোধ করলে তারা নিজেরাই নিজেদের অফিস ভেঙে আমাদের দোষ দিচ্ছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে আহত হারুনের বাবা বাবু মোল্লা বাদি হয়ে শিবগঞ্জ থানায় আওয়ামী লীগ ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতাকর্মীসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছে।
এদিকে বুধবার একই সময়ে মাঝিহট্ট ইউনিয়নের এসকেন্দার আলী সাহানা নামে এক স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থীর ১১টি নির্বাচনী অফিস ভাঙচুর করা হয়। এসকান্দার আলী অটোরিকশা মার্কা নিয়ে এই ইউনিয়নে নির্বাচন করছেন। জানা যায়, সন্ধ্যা ৭টা থেকে ৮টার মধ্যে প্রতিপক্ষরা অতর্কিত এসে হামলা চালিয়ে অফিসের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করে চলে যায়। ভাঙচুর করা অফিসগুলো হলো- ভালুঞ্জা, শনভালকি, ভারাহার, মাঝিহট্ট, গোবিন্দপুর, মোল্লা পাড়া ও চকপাড়াসহ ১১টি স্থানে।
এ বিষয়ে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী এসকেন্দার আলী সাহানা অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আবদুল গফুর ও অপর স্বতন্ত্রপ্রার্থী আকবর আলী মিলে আমার নির্বাচনি অফিসে হামলা চালিয়েছে ভাঙচুর করেছে। আমরা প্রশাসনকে ঘটনাটি নিরপেক্ষ তদন্ত করে সুষ্ঠু সমাধানের জন্য অনুরোধ জানিয়েছি। এব্যাপারে আওয়ামীলীগ দলীয় মনোনিত চেয়ারম্যান প্রার্থী আব্দুল গফুর বলেন, আমার বিজয় নিশ্চিত জেনে প্রতিপক্ষরা নিজেরাই তাদের নির্বাচনী অফিস ভাংচুর করে আমাকে সহ আমার সমর্থকদের কে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে। শিবগঞ্জ থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম নির্বাচনী সহিংসতার বিষয়ে বলেন, পুলিশ সহিংসতা প্রতিরোধে তৎপর রয়েছে। বিহারের ঘটনায় থানায় মামলা নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া দুই প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থী মহিদুল ইসলাম ও মতিউর রহমান মতিনকে থানায় ডেকে সমঝোতা করে দেওয়া হয়। আগামীতে তারা আর সহিংসতায় জড়াবেন না বলে প্রতিশ্রুতি দেন। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, মাঝিহট্টের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওসি আরও বলেন, বিহারে ঘটনার পর বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের প্রতিদ্বন্দ্বী সব চেয়ারম্যান প্রার্থীদের থানায় ডেকে এনে সহিংসতা না করার অঙ্গীকারনামা লিখে নেওয়া হয়েছে।