শিক্ষা- প্রশিক্ষণের সর্বস্তরে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে

প্রকাশ : 2025-09-12 18:38:56১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

শিক্ষা- প্রশিক্ষণের সর্বস্তরে ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করতে হবে

১২ই সেপ্টেম্বর ২০২৫, শুক্রবার সকালে বাংলাদেশ ইসলামিক স্টাডিজ ফোরামের উদ্যোগে ঢাকা কলেজ অডিটরিয়ামে চরম সংকট আবর্তে ইসলাম শিক্ষা: উত্তরণ কর্মকৌশল বিষয় জাতীয় কর্মশালা প্রফেসর ড. শাহ মুহাম্মদ আব্দুর রাহীমের সভাপতিত্বে সহকারী অধ্যাপক মোঃ রুহুল আমিন এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আরবি ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. আবু জাফর খাঁন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, অধ্যক্ষ-উপাধ্যক্ষ ফোরামের মহাসচিব মোঃ আবদুর রহমান, প্রফেসর ড. মোঃ জহিরুল ইসলাম, প্রফেসর ড. মোঃ সাইদুল হক, প্রফেসর মোঃ আতাউর রহমান, ড. আব্দুস ছবুর মাতব্বর, অধ্যাপক ফেরদাউস আরা খানম, অধ্যাপক মোয়াজ্জেম হোসেন, ড. আতিকুল ইসলামসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। কর্মশালায় লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন প্রফেসর ড. শাহ মুহাম্মদ আব্দুর রাহীম। বক্তাগণ বলেন, বাংলাদেশ একটি ধর্মপ্রাণ মানুষের দেশ। এই দেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। সংখ্যা গরিষ্ঠ মুসলিম নাগরিকের ধর্ম ইসলাম । অন্যান্য ধর্মের নাগরিকগণও ধর্মপ্রাণ। কিন্তু রাষ্ট্রের নাগরিক ও নতুন প্রজন্মের জন্য জাতীয় শিক্ষা নীতি ও ব্যবস্থায় শিক্ষার কোনো স্তরেই “ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা” গুরুত্ব ও আবশ্যিক ভাবে পঠন পাঠনের ব্যবস্থা নেই। নাগরিকগণ ধর্মশিক্ষা নানা সোর্স থেকে শেখে। ফলে অশিক্ষা কুশিক্ষা কুসংস্কারে আচ্ছন্ন হয়ে ধর্মান্ধতা ও উগ্রতার উন্মেষ ঘটে। বৃহত্তর জনগোষ্ঠী ধর্ম ও নৈতিকতায় অজ্ঞ থেকে সমাজ এবং রাষ্ট্রের সর্বক্ষেত্রে অনৈতিকতা ও অবক্ষয়ের ছয়লাব ঘটায়। এই নৈতিক অবক্ষয় রোধ এবং ধর্মীয় নৈতিক সমাজ ও রাষ্ট্র পরিগঠন ও নৈতিকতায় উজ্জীবিত করতে ও রাখতে শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের সর্বস্তরে ধর্মীয় নৈতিক শিক্ষা আবশ্যিকভাবেই কারিকুলাম ও সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত রাখতে হবে। বক্তাগণ আরো বলেন, ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে ভর্তি নীতিমালায় “ইসলাম শিক্ষা” বিষয়টি এবারও ঐচ্ছিক ৪র্থ বিষয় হিসেবে রাখা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। যা বিগত পতিত সেক্যুলার ফেসিস্টদেরই পুনরাবৃত্তি এবং জুলাই বিপ্লবের শহীদের রক্তের সাথে বেইমানি। ইসলাম প্রিয় দেশবাসি, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে মানবিক, বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শিক্ষা শাখা ও বিভাগে “ইসলাম শিক্ষা” বিষয়টি আবশ্যিক হিসেবে অধ্যয়নের ব্যবস্থা করার দাবি জানান অথবা ২০১২ সালের পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে দেয়ার দাবি জানান এবং উচ্চ মাধ্যমিকের সকল শাখায় ইসলাম শিক্ষা বিষয় অন্তর্ভূক্ত করার দাবি জানান। ফোরামের দাবী: আন্তঃ শিক্ষা বোর্ডের ভর্তি নীতিমালায় অবিলম্বে পরিবর্তন আনতে হবে এবং এটা ২০২৫-২০২৬ শিক্ষাবর্ষ থেকেই বাস্তবায়ন করতে হবে, এটাই শিক্ষক সমাজের প্রত্যাশা। এর ব্যাতিক্রম হলে এ দেশের ইসলাম প্রিয় জনগণ ও শিক্ষার্থীরা তা কোন ভাবেই মেনে নিবে না বরং তারা মাঠে নামতে বাধ্য হবে। কর্মশালায় বক্তাগণ নিম্নলিখিত ৭ দফা দাবি পেশ করেন :  
১. প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণি হতে প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক স্তরে মানবিক বিজ্ঞান ও ব্যবসায় শাখায় ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক ও সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ২. স্নাতক পাস কোর্স, স্নাতক অনার্স ও স্নাতকোত্তর স্তরের সকল বিষয়, সাবজেক্ট, ডিসিপ্লিন এবং প্রোগ্রামে তথা কলা, বিজ্ঞান, ব্যবসায়, মেডিকেল ও প্রযুক্তিগত সকল কোর্স ও ডিসিপ্লিনে “ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা” ন্যূনতম ১০০ নম্বরের ১টি বিষয় আবশ্যিকভাবে সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ৩. সকল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিষয় ও বিভাগ খুলতে হবে । ৪. বিজ্ঞান প্রযুক্তি মেডিকেল প্যারা মেডিকেল কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্যেক ডিসিপ্লিনে ১০০ নম্বরের ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা আবশ্যিক করতে হবে। ৫. প্রশাসন, বিচারবিভাগ, শিক্ষা-প্রশিক্ষণ ইন-সার্ভিস প্রশিক্ষণ এবং সামরিক নৌবাহিনী বিমান বাহিনী পুলিশ বাহিনীসহ সকল ক্ষেত্রে ন্যূনতম ১০০ নম্বরের ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা আবশ্যিক করতে হবে। ৬. মধ্যপ্রাচ্যের জব মার্কেট পেতে এবং ধর্মীয় ও আন্তর্জাতিক ভাষা হিসেবে আরবি ভাষা শিক্ষা গুরুত্বসহ সিলেবাসের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। ৭. স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষা এবং সুঠাম কর্মক্ষম জাতি পরিগঠনের লক্ষ্যে প্রাথমিক সামরিক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ শিক্ষায় আবশ্যিক করতে হবে।