লৌহজংয়ে প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলা, অভিযুক্ত শেয়ারহোল্ডার আটক 

প্রকাশ : 2025-10-12 18:38:51১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

লৌহজংয়ে প্রধান শিক্ষকের ওপর হামলা, অভিযুক্ত শেয়ারহোল্ডার আটক 

মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া ব্রাইট প্রি-ক্যাডেট অ্যান্ড হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ কামরুজ্জামানের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। রবিবার দুপুর ১২টার দিকে বিদ্যালয়ের সভাকক্ষে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
     
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্কুলের প্লে গ্রুপের এক শিক্ষার্থী স্কুল ছুটির পর বাড়ি না ফিরলে বিষয়টি নিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে প্রধান শিক্ষককে জানানো হয়। পরে প্রধান শিক্ষক স্কুলের শিক্ষকদের শিক্ষার্থীদের তত্ত্বাবধান ও যাতায়াত বিষয়ে আরও নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেন। এ সময় স্কুলের  শেয়ারহোল্ডার মো. ফিরোজ খান হঠাৎ ক্ষিপ্ত হয়ে প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামানের ওপর অতর্কিত হামলা চালান। এতে স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা ক্ষুব্ধ হয়ে তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিবাদে ফেটে পড়েন এবং স্কুল প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ মিছিল করেন। প্রধান শিক্ষকের উপর হামলার খবর ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা স্কুল প্রাঙ্গণে ছুটে এসে ফিরোজ আলমকে জুতাপেটা করে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হলে তিনি প্রায় দুই ঘণ্টা অফিসকক্ষে নিজেকে তালাবদ্ধ অবস্থায় অবরুদ্ধ রাখেন।পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে উঠলে পদ্মা সেতু উত্তর থানা পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্ত ফিরোজ খানকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে স্কুল কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিষ্ঠানটি বন্ধ ঘোষণা করে শিক্ষার্থীদের ছুটি দেওয়া হয়।
     
পদ্মা সেতু উত্তর থানার ওসি রুবেল হাওলাদার জানান, এ ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। অভিযোগ পেলে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আপাতত পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ফিরোজ খানকে হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
     
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফিরোজ আলম খানকে এর আগে নানা অনিয়ম ও তহবিল আত্মসাতের অভিযোগে স্কুল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছিল। ২০১৫ সালে স্কুল প্রতিষ্ঠার সময় তিনি অন্যান্য শেয়ারহোল্ডারদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে আত্মসাৎ করেন বলে অভিযোগ রয়েছে। একাধিকবার হিসাব চাওয়া হলেও তিনি কোনো জবাব দেননি বরং তৎকালীন সভাপতি কর্তৃক পাঠানো উকিল নোটিশেরও জবাব দেননি। পরবর্তীতে ২০২৪ সালের আগস্ট মাসের পর থেকে তিনি পুনরায় স্কুলে প্রবেশের চেষ্টা করেন এবং বিএনপির একটি মহলের আশীর্বাদে অবৈধভাবে নিজেকে পুনর্বহাল করেন- এমন অভিযোগ করেছেন স্কুলের অন্য শেয়ারহোল্ডাররা।
     
প্রধান শিক্ষক কামরুজ্জামান জানান, স্কুল ছুটি শেষে বাচ্চাদের ফটকে অভিভাবকদের কাছে বুঝিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব সহকারী শিক্ষক ইসরাত জাহানের উপর। আমি ইসরাত জাহানকে নার্সারি শ্রেণির শিক্ষার্থী নুসাইবাকে কার কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে ধমক দিয়ে জিজ্ঞেস করি। এ সময় বছর স্কুলের শেয়ারহোল্ডার ফিরোজ আলম খান সেখানে আমাদের দুজনের কথোপকথন শুনে এগিয়ে আসেন। কাছে এসেই আমাকে তোর প্রধান শিক্ষক হওয়ার কোনো যোগ্যতা নেই বলেই কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। পরে সহকারী শিক্ষকেরা এসে আমাকে উদ্ধার করেন।
    
 স্কুলের পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মো. সেন্টু জানান, স্কুলে প্রতিষ্ঠার সময় আলম একজন শেয়ার হোল্ডার ছিলেন। অনিয়ম ও দুর্নীতির দায়ে তাকে ২০১৫ সালে বহিষ্কার করা হয়। শেয়ারহোল্ডার শামসুন্নাহার রাশা ও মো. কামাল একই অভিমত ব্যক্ত করেন।     অভিযুক্ত ফিরোজ আলম খান পুলিশের হেফাজতে থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।