লৌহজংয়ে গাঙচিল ও ইলিশ পরিবহনের মাঝে দ্বন্দ্ব : তিন দিন যাবত বাস চলাচল বন্ধ 

প্রকাশ : 2023-08-24 15:16:49১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

লৌহজংয়ে গাঙচিল ও ইলিশ পরিবহনের মাঝে দ্বন্দ্ব : তিন দিন যাবত বাস চলাচল বন্ধ 

ঢাকা-মাওয়া-লৌহজং-বালিগাঁও সড়কে চলাচলরত গাঙচিল পরিবহন ও ইলিশ পরিবহনের দ্বন্দ্বে তিন দিন ধরে বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন এ রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা। এজন্য পরিবহন দুটির মালিক-শ্রমিকেরা পরস্পরকে দোষারোপ করছেন। ইলিশ পরিবহন বন্ধ ও তাদের শ্রমিককে মারধরের ঘটনার বিচার চেয়ে বুধবার লৌহজং-বালিগাঁও সড়কের হলপট্টি এলাকায় বিক্ষোভ মিছিল করেছে গাঙচিল পরিবহনের মালিক-শ্রমিকেরা।

ঢাকা-লৌহজং সড়কে তিন দিন ধরে বাস চলাচল বন্ধ থাকার পরেও কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। এতে ক্ষুব্ধ এ পথের যাত্রীরা। যারা প্রতিদিন  ঢাকায় যাতায়াত করেন, তারা পড়েছেন বিপাকে। ভেঙে ভেঙে যাতায়াত করায় দেড়-দুইগুণ বেশি ভাড়া গুনতে হচ্ছে তাদের।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত রবিবার দুপুরে উপজেলার খেতেরপাড়া স্ট্যান্ড থেকে গাঙচিল পরিবহনের একটি বাসকে আগে যেতে বাধা দেয় ইলিশ পরিবহনের অন্য একটি বাস। এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে ইলিশ পরিবহনের সুপারভাইজার দেলোয়ার হোসেন গাঙচিল পরিবহন বাসের সহকারী শিপনকে মারধর করে। এর জের ধরে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে পরিবহন দুটির মালিকপক্ষ।

এ পথের নিয়মিত যাত্রী নজরুল ইসলাম জানান, এ সড়কে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় তাদের অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। আরেক যাত্রী তন্ময় দপ্তরী বলেন, ভেঙে ভেঙে যাতায়াত করায় সময় ও অর্থ দুটোই অপচয় হচ্ছে।

গাঙচিল পরিবহন মালিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ নাসির তালুকদার বলেন, ইলিশ পরিবহনের সুপারভাইজার বিনা কারণে আমাদের বাসের শ্রমিককে মারধর করেছে। সমিতির সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম ঢালী বলেন, আমরা ৩৫ বছর ধরে এ রুটে বাস চালিয়ে আসছি, যখন রাস্তা কাঁচা ছিল তখন থেকে। আমরা স্থানীয়দের পাশে সুখে-দুঃখে সবসময় ছিলাম, আছি। গত বছরের মাঝামাঝি থেকে ইলিশ পরিবহন এ সড়কে আসায় আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। তিনি আরও জানান, আমাদের বাসের আসন সংখ্যা ৪০ জনের আর ইলিশ পরিবহনের বাসের সংখ্যা ৭০ জনের। দূরপাল্লার এসব বাস এত সরু সড়কে চলাচল করায় অনেক স্থানে যানজট লেগে থাকে। তাছাড়া ইলিশ পরিবহনের বাস এ সড়কে চলাচলের অনুমতি নেই। অদৃশ্য শক্তির বলে তারা বাস চালাচ্ছে।

গাঙচিল পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি রুহুল আমিন মোড়ল বলেন, আগে তাদের যাত্রীসেবায় কিছু ভুলত্রুটি ছিল। প্রশাসনের নির্দেশনায় ভাড়া কমানোসহ সে সব সমস্যার সমাধান করে যাত্রী সেবার মান বাড়ানো হয়েছে। ইলিশ পরিবহন এ সড়কে আসায় আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছে। কারণ, বাস বাড়লেও যাত্রীসংখ্যা বাড়েনি।

ইলিশ পরিবহনের সভাপতি মো. আলী আকবর হাওলাদার বলেন, এ পথে আমাদের গাড়ি চলাচলের অনুমতি রয়েছে আমাদের কাগজপত্র প্রত্যেকটি গাড়িতে আছে বরং গাঙচিলেরই গাড়ির কোনো অনুমতি নেই। আমাদের গাড়িতে যাত্রী বেশি ওঠে, তাই আমাদের গাড়ি বন্ধ করে দিতে চায় তারা। আমাদের গাড়িতে তারা ভাঙচুর করতে পারে, তাই আমরা গাড়ি বন্ধ রেখেছি। আমাদের গাড়ির নিরাপত্তা দিলে আগামীকাল (আজ) থেকে আবার সড়কে বাস চলাচল শুরু করবে, নয়তো আমরা গাড়ি বন্ধ রাখবো।

লৌহজং থানার ওসি খোন্দকার ইমাম হোসেন জানান, তিনি দুপক্ষের মধ্যে ঝামেলার কথা শুনেছেন। তবে তিন দিন ধরে বাস চলাচল বন্ধের বিষয়টি কেউ জানায়নি। এমনকি কেউ অভিযোগও করেনি।