লাগছে না বাড়তি খরচ সীমান্তে ছাত্রীদের ভরসা বাইসাইকেল

প্রকাশ : 2022-10-26 09:53:40১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

লাগছে না বাড়তি খরচ সীমান্তে ছাত্রীদের ভরসা বাইসাইকেল

দিন বদলেছে। সেই সঙ্গে বদলেছে মানুষের জীবন ব্যবস্থা। বর্তমানে রাস্তাঘাট অনেক উন্নত হলেও যোগাযোগের মাধ্যম অপ্রতুল। তাই মেহেরপুরের সীমান্তবর্তী মুজিবনগর উপজেলার বাগোয়ান ইউনিয়ন ও গাংনী উপজেলা তেতুঁলবাড়িয়া গ্রামের মেয়েরা বিদ্যালয়ে যায় বাইসাইকেলে। এতে করে তারা সঠিক সময়ে বিদ্যালয়ে যেতে পারছে। লাগছে না বাড়তি খরচ। বিষয়টিকে শিক্ষা অগ্রযাত্রার মাইলফলক হিসেবে বিবেচনা করছেন সচেতন মহল। 

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ইসলামীয়া তেতুঁলবাড়িয়া মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্রী আফসানা খাতুন বলেন, তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব চার কিলোমিটার। বিদ্যালয়ে যেতে হতো ভ্যানযোগে কিংবা পায়ে হেঁটে। ঠিকমতো ক্লাসে উপস্থিত হতে পারতো না সে। অভাবের সংসারে যাতায়াত ভাড়া যোগাড় করতে হতো অনেক কষ্ট করে। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে একটি বাইসাইকেল উপহার পাওয়ায় বিদ্যালয়ে যেতে আর সমস্যা হয় না তার। তার মতো অনেক ছাত্রী ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বাইসাইকেল উপহার পেয়েছে। একই কথা জানিয়েছে পলাশীপাড়া গ্রামের স্কুলছাত্রী জলি খাতুন, রাফসানা, মিম আক্তার, জুবাইদা ও সানজিদা। তারা আরও জানায়, আগে বাইসাইকেল চালানো কেউ পছন্দ করতো না। এখন প্রয়োজনের তাগিদে সাইকেল চালাতে হয়। এখন কেউ আর বাধা দেয় না। অভিভাবক আল হেলাল বলেন, মেয়েদের সাইকেল চালানো অনেকে কু-নজরে দেখতো। এখন আর কেউ কিছু মনে করে না। সাইকেলে বিদ্যালয়ে যাওয়ায় বাড়তি খরচ বেঁচে গেছে। আর মেয়েরাও সুশিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারবে। অনেক অভিভাবক মেয়েদেরকে বিদ্যালয়ে পাঠাতে না পেরে বাল্য বিয়ে দিতো। এখন আর কেউ বিয়ে নিয়েও ভাবে না।

 তেতুঁলবাড়িয়া ইসলামীয় মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনিসুজ্জামান বলেন, আগে যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো ছিল না। শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসতে নানা ভোগান্তি পোহাতে হতো। যাতায়াত ব্যয় ঠিকমত দিতে না পারায় দরিদ্র পরিবারের ছেলে-মেয়েরা বিদ্যালয়ে আসতে পারতো না। অনেকেই ছিল অনিয়মিত। এখন যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটেছে। ফলে অনেক পরিবার মেয়েকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করতে বিদ্যালয়ে পাঠাচ্ছেন বাইসাইকেল দিয়ে। এরই মধ্যে জনপ্রতিনিধিরা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মেধাবী ও অসচ্ছল পরিবারের মেয়েদের বাইসাইকেল উপহার দিয়েছেন। ফলে তারাও এখন নিয়মিত ও স্বাচ্ছন্দ্যে বিদ্যালয়ে আসতে পারছে। এতে উপস্থিতি হার বেড়েছে। 

জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মাহফুজুল হোসেন বলেন, সীমান্ত এলাকায় দিন দিন ছাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে, এটা ভালো সংবাদ। মেহেরপুর জেলা প্রশাসক ড. মুনসুর আলম বলেন, ইউনিয়ন পরিষদগুলোর মাধ্যমে বিভিন্ন বিদ্যালয়ের অনেক ছাত্রীকে সাইকেল দেওয়া হয়েছে। এতে করে লাগছে না বাড়তি খরচ। আগামীতে এ ধারা অব্যাহত থাকবে।