রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত থাকবে

প্রকাশ : 2021-10-04 19:32:36১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

রোহিঙ্গা সংকট নিরসনে আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত থাকবে

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ (ইউএনজিএ)-এর ৭৬তম অধিবেশনে বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনায় রোহিঙ্গা সংকটের স্থায়ী সমাধানের বিষয়ে মিয়ানমারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত থাকবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এবারের অধিবেশনে রোহিঙ্গা সমস্যা ও এর স্থায়ী সমাধানের বিষয়টি ব্যাপকভাবে আলোচিত হয়, যা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ অব্যাহত রাখবে বলে আমি আশা করি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ তাঁর সাম্প্রতিক জাতিসংঘের ৭৬তম অধিবেশনে অংশগ্রহণ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তৃতায় একথা বলেন।

বিকেলে গণভবনের ব্যাংকুয়েট হলে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত থেকে বিভিন্ন প্রশ্নের সরাসরি উত্তর দেন এবং সাংবাদিকদের অপর একটি অংশ এ সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে উপস্থিত থেকে ভিডিও কনফারেন্সে প্রশ্নোত্তর পর্বে সংযুক্ত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গা সঙ্কট সম্পর্কে আমি আবারও বিশ্বনেতৃবৃন্দকে স্মরণ করিয়ে দেই যে, রোহিঙ্গা সঙ্কটের সৃষ্টি মিয়ানমারে, সমাধানও রয়েছে মিয়ানমারে। রাখাইন রাজ্যে তাদের মাতৃভূমিতে নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসনের মাধ্যমেই কেবল এ সঙ্কটের স্থায়ী সমাধান হতে পারে বলে উল্লেখ করে আমি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এ বিষয়ে গঠনমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করার অনুরোধ জানাই।

তিনি বলেন, ৭৬তম অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সক্রিয় অংশগ্রহণ বহুপাক্ষিক ফোরামে বাংলাদেশের অবস্থান যেমন সুদৃঢ় করেছে, তেমনি বাংলাদেশের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়সমূহে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্রকে বিস্তৃত করবে বলে আমি আশাবাদী। 

 প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিউইয়র্কে অবস্থানকালে আমার অত্যন্ত ব্যস্ত সময় কাটে। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের ৭৬-তম অধিবেশনের মূল সভা ও সাইড ইভেন্ট  মিলিয়ে আমি সর্বমোট ১০টি সভা এবং ৮টি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেই। এছাড়া, ৭৬-তম অধিবেশনের সাধারণ বিতর্ক পর্বের উদ্বোধনী দিনেও আমি যোগদান করি। 

কোভিড-১৯ মহামারির প্রেক্ষাপটে ‘প্রত্যাশা”-কে উপজীব্য করে এবারের অধিবেশনে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল মহামারি থেকে টেকসই উত্তরণ। এছাড়া, কোভিড-১৯ টিকার সর্বজনীন প্রাপ্যতা, সহজলভ্যতা ও মহামারি থেকে টেকসই পুনরুদ্ধার স্বভাবতই আলোচনায় প্র্রাধান্য পেয়েছে। পাশাপাশি, জলবায়ু পরিবর্তন, নারীর ক্ষমতায়ন, সমতা ও অন্তর্ভুক্তি, বর্ণবাদ, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট তথা এসডিজি, পারমাণবিক অস্ত্র নিরস্ত্রীকরণ ইত্যাদি বিষয়গুলোও আলোচনায় উঠে এসেছে, বলেন তিনি। 
 
 শেখ হাসিনা বলেন, সফরের প্রথম দিনে ২০ সেপ্টেম্বর ইউএন সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলুশ্যন্স নেটওয়ার্ক (এসডিএসএন) এর পক্ষ থেকে ২০১৫-২০২০ সময়কালে এসডিজি অর্জনে সর্বোচ্চ সাফল্যের জন্য আমাকে এসডিজি অগ্রগতি পুরস্কার প্রদান করা হয়। এসডিএসএন এর প্রেসিডেন্ট প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ প্রফেসর জেফ্রি স্যাক্স আমার হাতে এই সম্মাননাটি তুলে দেন। কোভিড-১৯ মহামারির মধ্যেও বাংলাদেশ যে অবিচলভাবে টেকসই উন্নয়ন অভিষ্ট অর্জনে এগিয়ে যাচ্ছে-এই পুরস্কার তারই বিশ্ব স্বীকৃতি। আমি আমার ধন্যবাদজ্ঞাপন বক্তব্যে দেশের জনগণকে এই পুরস্কার উৎসর্গ করি। 

তিনি বলেন, এই সফরের একটি বিশেষ আকর্ষণ ছিল জাতিসংঘ সদরদপ্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে একটি স্থায়ী বেঞ্চ স্থাপন এবং একটি শতর্বষী বৃক্ষ রোপন।  জাতিসংঘের সদর দপ্তর চত্বরে কোন রাজনৈতিক নেতার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের এ ধরণের উদ্যোগ এটিই প্রথম। বাংলাদেশের জন্য এটি নিঃসন্দেহে একটি বিরল সম্মাননা- বলেন প্রধানমন্ত্রী। 

শেখ হাসিনা ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সাধারণ বিতর্ক পর্বে বক্তব্য রাখেন। সে প্রসঙ্গে তিনি বলেন, প্রতিবারের মত এবারও আমি বাংলায় বক্তব্য রাখি। আমার বক্তব্যে আমি কোভিডমুক্ত একটি বিশ্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে টিকার সর্বজনীন ও সাশ্রয়ী মূল্যে প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার উপর গুরুত্বারোপ করি। টিকা বৈষম্য দূরীকরণে আমি কোভিড-১৯ টিকাকে ‘বৈশ্বিক সম্পদ’ হিসেবে বিবেচনা করার জন্য বিশ্বনেতৃবৃন্দের প্রতি আহবান জানাই। এছাড়া কোভিড-১৯ মহামারির কারণে জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলোর ক্ষতি কমানো, ধনী ও শিল্পোন্নত দেশগুলোর কার্বন নিঃসরণ হ্রাস, ক্ষতিপূরণ প্রদান, টেকসই অভিযোজনের জন্য অর্থায়ন ও প্রযুক্তির অবাধ হস্তান্তরের অনুরোধ করি। পাশাপাশি ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরাম এবং ভালনারেবল-২০ গ্রুপ অফ মিনিস্টারস্ অফ ফাইন্যান্স-এর সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশের ‘মুজিব জলবায়ু সমৃদ্ধি পরিকল্পনা- দশক ২০৩০’ এর কার্যক্রম সম্পর্কে আমি বিশ্বনেতৃবৃন্দকে অবহিত করি। 

তিনি বলেন, পাশাপাশি চলমান মহামারির প্রকোপে শিক্ষাব্যবস্থার ক্ষতি কাটিয়ে উঠা ও টেকসই পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে ডিজিটাল সরঞ্জামাদি ও সেবা, ইন্টারনেটের সুযোগ-সুবিধার সহজলভ্যতা ও শিক্ষকদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখপূর্বক আমি জাতিসংঘকে অংশীদারিত্ব ও প্রয়োজনীয় সম্পদ নিশ্চিত করার জন্য অনুরোধ জানাই। 

স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণে বাংলাদেশের সাফল্য তুলে ধরে উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি একটি প্রণোদনাভিত্তিক উত্তরণ কাঠামো প্রণয়নের প্রস্তাব করি। অভিবাসীগ্রহণকারী দেশগুলোকে অভিবাসীদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার, তাঁদের কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্য এবং কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য আহবান জানাই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কপ-২৬কে সামনে রেখে এবারের অধিবেশনের অন্যতম আলোচিত বিষয় ছিল জলবায়ু পরিবর্তন ও তার বিরূপ প্রভাব মোকাবিলা। 

তিনি বলেন, জাতিসংঘ মহাসচিব ও ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর যৌথ উদ্যোগে জলবায়ু বিষয়ে সোচ্চার কয়েকটি দেশের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানগণের অংশগ্রহণে ২০ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে একটি রুদ্ধদ্বার বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে সোচ্চার অন্যতম দেশের সরকারপ্রধান এবং সিভিএফ এর সভাপতি হিসেবে আমাকে এ সম্মেলনে আমন্ত্রণ জানানো হয়। এ সভায় অংশ নিয়ে আমি জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁঁকি মোকাবিলায় নতুন আর্থিক ব্যবস্থাপনা এবং জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোতে সবুজ প্রযুক্তির অবাধ হস্তান্তরের পক্ষে বক্তব্য প্রদান করি। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত লস এন্ড ড্যামেজ এবং জলবায়ুজনিত কারণে বাস্তচ্যূত জনগণের পুনর্বাসনের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কর্তৃক কার্যকর ভূমিকা পালনেরও আহবান জানাই। 

শেখ হাসিনা বলেন, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে জাতিসংঘের ৭৬তম অধিবেশনের সভাপতি আব্দুল্লাহ শহীদের আমন্ত্রণে তিনি বিশ্বের নারী নেতৃবৃন্দের অংশগ্রহণে আয়োজিত এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। এ অনুষ্ঠানে তিনি ছাড়াও নরওয়ে, মলদোভা, এস্তোনিয়া, তানজানিয়া, বার্বাডোজ, ইউরোপীয় কমিশনের নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বৈঠকে আমি বাংলাদেশের অর্থনীতি ও স্বাস্থ্যখাতে নারীদের অবদানের কথা তুলে ধরি। এছাড়াও আমি তৃণমূল পর্যায়ে নারী নেতৃত্ব গঠন এবং নারী নেতৃত্ব দ্বারা পরিচালিত প্রতিষ্ঠানসমূহের রাজনৈতিক ও আর্থিক সুবিধাদি নিশ্চিত করার উপর গুরুত্বারোপ করি।  

এছাড়া ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে প্রধানমন্ত্রী ইউএস-বাংলাদেশ বিজনেস কাউন্সিল এর আয়োজনে একটি গোলটেবিল বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। সেখানে শেভরন, জেনারেল ইলেক্ট্রিক, মেটলাইফসহ যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন প্রখ্যাত প্রতিষ্ঠানের উচ্চ-পর্যায়ের প্রতিনিধিগণ এই বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন। উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তাঁর মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশের বিদ্যমান বিনিয়োগ সুবিধার কথা তুলে ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যবসায়ীগণকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহবান জানান। তিনি সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আমন্ত্রণে ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে আমি কোভিড-১৯ বিষয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের সভায় অংশগ্রহণ করে চলমান মহামারি মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপ এবং সাফল্যগুলো তুলে ধরেন।  

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাধারণ অধিবেশনের সাইডলাইনে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন, যুক্তরাজ্য, আয়ারল্যান্ড, সৌদি আরব, ওআইসি, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, গাম্বিয়া এবং বাংলাদেশের যৌথ আয়োজনে ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে রোহিঙ্গা সমস্যা বিষয়ক একটি উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় আমি মূল বক্তব্য প্রদান করি। এ অনুষ্ঠানে তুরস্ক, গাম্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং হাঙ্গেরির পররাষ্ট্রমন্ত্রী, যুক্তরাজ্যের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী, যুক্তরাষ্ট্র, ভারত, নেদারল্যান্ডস্, ফ্রান্স, জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিগণ এবং আসিয়ান এর বিশেষ দূত বক্তব্য রাখেন। 

সরকার প্রধান বলেন, রোহিঙ্গা সমস্যা মিয়ানমারের সৃষ্টি এবং এর সমাধানও রয়েছে মিয়ানমারে উল্লেখ করে আমি কয়েকটি বিষয়ের উপর জোর দেওয়ার আহ্বান জানাই। 

ক.  প্রত্যাবাসনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে এ লক্ষ্যে সকল কার্যক্রম পরিচালিত করা; 
খ. মিয়ানমারের পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতির মধ্যেও প্রত্যাবাসনের মাধ্যমে রোহিঙ্গা সমস্যার স্থায়ী সমাধান খুজে বের করা;
গ. রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসনের অনুকুল পরিবেশ সৃষ্টিতে আসিয়ান ভুক্ত দেশগুলোর কার্যকর ভূমিকা পালন;
ঘ.  জাতিসংঘ ও উন্নয়ন সহযোগীদের মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন উপযোগী পরিবেশ তৈরিতে কার্যকর পদক্ষেপ ও প্রকল্প গ্রহণ ও তা বাস্তবায়ন;
ঙ.  রোহিঙ্গাদের উপর সংঘটিত সহিংসতা ও জাতিগত নিধন এর বিচার নিশ্চিত করতে আইসিজে ও  অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোতে চলমান প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করা।

শেখ হাসিনা বলেন, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে স্পেন, কোস্টারিকা ও সিয়েরা লিওনের প্রেসিডেন্ট এবং সুইডেনের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে সমতা ও অন্তর্ভুক্তি সংক্রান্ত একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণ করে তিনি ভ্যাক্সিন বৈষম্য ও ডিজিটাল বৈষম্য দূরীকরণ এবং স্বল্পোন্নত ও জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশসমূহের জন্য বিশেষ অর্থায়নের উপর গুরুত্বারোপ করেন।     

এবারের অধিবেশনের কোভিড-১৯ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে বিশ্ববাসীর জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের বিষয়টিও প্রাধান্য পায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমি ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে এই সংক্রান্ত আয়োজিত ইউনাইটেড নেশন্স ফুড সিষ্টেম সামিট ২০২১ শীর্ষক একটি উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে অংশগ্রহণ করে খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনে বাংলাদেশের সফলতাগুলো তুলে ধরি। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত দুর্যোগ মোকাবিলা এবং টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে প্রযুক্তির হস্তান্তরের জন্য একটি বিশেষ তহবিল গঠনেরও আহবান জানাই। 

এবারের অধিবেশন প্রধানমন্ত্রী বেশ কয়েকটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নেন উল্লেখ করে বলেন, এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- বার্বাডোজের প্রধানমন্ত্রী মিয়া আমোর মোতেলি, সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন লোফভেন, কুয়েতের প্রধানমন্ত্রী শেখ সাবাহ খালেদ আল-হামাদ আল সাবাহ, জাতিসংঘের মহাসচিবের স্পেশাল এডভোকেট ফর ইনক্লুসিভ ফির‌্যান্স ফর ডেভেলপমেন্ট কুইন ম্যাক্সিমা অব নেদারল্যান্ড, জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তনিও গুত্যেরেজ, মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম সোলিহ, ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতি নিউয়ান জুয়ান ফুক এবং নেদারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ সকল দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে অংশ নিয়ে আমি পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করার পাশাপাশি রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মনোযোগ ও সহযোগিতা কামনা করি। 

এছাড়া নিউইয়র্ক সফরকালে ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১ তারিখে আমি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী প্রবাসী বাংলাদেশীগণের একটি সম্বর্ধনা অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করি। একই সঙ্গে আমি সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য দিই।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবারের জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের মূল বিষয়গুলো বাংলাদেশের জন্য বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিক ছিল। বিশেষত কোভিড-১৯ টিকার সর্বজনীন প্রাপ্যতা ও মহামারি থেকে টেকসই পুনরুদ্ধার সংক্রান্ত শীর্ষ সভাসমূহে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া জলবায়ু ঝুঁকিতে থাকা অন্যতম দেশ ও ক্লাইমেট ভালনারেবল ফোরামের সভাপতি হিসেবে জলবায়ু সংক্রান্ত সভাগুলোতে অংশগ্রহণ করে আমরা আমাদের দাবিগুলো জোরালোভাবে তুলে ধরেছি। পাশাপাশি নারীর ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অগ্রগতির কথাও বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করেছি যা সকল মহলে বহুল প্রশংসিত হয়েছে।

সরকার প্রধান বলেন, ২৫ সেপ্টেম্বর তারিখে তিনি নিউইয়র্ক থেকে ওয়াশিংটন ডিসিতে যান। ২৯ সেপ্টেম্বর মেরিল্যান্ডে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতি বিজড়িত বাংলাদেশ হাউস উদ্বোধন  করে একটি বৃক্ষ রোপণ করেন এবং ৩০ সেপ্টেম্বর রওনা হয়ে ১ অক্টোবর বাংলাদেশ বিমান যোগে রাতে দেশে ফিরে আসেন তিনি।