রিকশা বন্ধ কইরা দিলে আমারে কেহই বদলাও (কামলা) লইব না

প্রকাশ : 2021-06-29 20:04:07১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

রিকশা বন্ধ কইরা দিলে আমারে কেহই বদলাও (কামলা) লইব না

‘বাজান, রিক্সাটা আমারে একজনে দান করছে। আমি তো বুড়া মানুষ, আর কোন কাম করতে পারি না। এই রিক্সাডা দিয়াই আমার সংসার চলে।’ কাঁপা কাঁপা গলায় এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন মাদারীপুর সদর উপজেলার বাগেরপাড় এলাকার বৃদ্ধ রিকশাচালক মোঃ আব্দুল লতিফ (৭৫) ।

১০ জনের সংসার তার। পুরো সংসার চলে তার উপার্জনে। তাই বৃদ্ধ বয়সেও রিকশা চালিয়ে সংসারের ভরণ পোষণ করে থাকেন। হতদরিদ্র এই বৃদ্ধ আব্দুল লতিফকে রিক্সাটি দান করেছেন একজন হৃদয়বান ব্যক্তি। মোটর চালিত রিক্সা হওয়ায় এ বয়সেও সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত রোদ বৃষ্টি উপেক্ষা করে সারা শহর রিকশা চালিয়ে বেড়ান।

সরেজমিন মাদারীপুর পৌর ঈদগাহ সংলগ্ন সড়কে কথা হয় আব্দুল লতিফের সাথে। আর দশজনের মতো তিনিও শুনেছেন সরকার মটর চালিত রিকশা সড়কে চলতে দেবে না। খবর শুনে চিন্তার ভাঁজ তার কপালে। তিনি ভেবেই পান না যদি সত্যি সত্যি মোটর চালিত রিক্সা নিষিদ্ধ করা হয় তাহলে কিভাবে চলবে চলবে তার সংসার।

আব্দুল লতিফের ৭ মেয়ে ১ ছেলে।‌ একে একে ৭ মেয়ের পর জন্ম নিয়েছে একটি ছেলে। ৫ মেয়ের বিয়ে হলেও এখনও অবিবাহিত দুই মেয়ে। ছেলে খোয়াজপুর আবুল হোসেন কলেজে অনার্স পড়ছে। ছেলের পড়াশোনা সহ সংসারের পুরো খরচ বহন করতে হয় রিক্সা চালিয়েই। ‌

বয়সের ভারে নুয়ে পড়া আব্দুল লতিফ বলেন, ‘আমি বুড়া মানুষ, কোন কাম কাইজ করতে পারি না। হারাদিন রিকশা চালাইয়া ৫০০-৬০০ টাকা কামাই করি। রিকশা বন্ধ কইরা দিলে আমারে কেহই বদলাও (কামলা) লইব না।’

আব্দুল লতিফ এর মত সারাদেশে অসংখ্য বৃদ্ধ এবং প্রতিবন্ধী রিকশাওয়ালাদের কথা বিবেচনা করে সরকার তার সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করবেন এমনটাই প্রত্যাশা দেশের সাধারণ মানুষের।