রানার সম্পাদক সাইফুল আলম মুকুলের মৃত্যুবার্ষিকী
প্রকাশ : 2021-08-30 09:36:58১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
যশোরের দৈনিক রানার সম্পাদক আর এম সাইফুল আলম মুকুলের ২৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ১৯৯৮ সালের ৩০ আগস্ট রাতে শহর থেকে বেজপাড়ার নিজ বাসভবনে যাওয়ার পথে চারখাম্বার মোড়ে দুর্বৃত্তদের বোমা হামলায় নিহত হন তিনি। হত্যাকাণ্ডের ২৩ বছরেও বিচার না পেয়ে ক্ষুব্ধ সাংবাদিক মুকুলের পরিবার ও সাংবাদিক সমাজ।
নানা জটিলতা ও প্রতিবন্ধকতায় আটকে গেছে মামলার বিচারকাজ। তবে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর এম ইদ্রিস আলী বলছেন, শিগগিরই এ মামলার আর্গুমেন্ট শুরু হবে। এরপরই রায়ের মাধ্যমে মামলা নিষ্পত্তি হবে। এ অবস্থার মধ্যদিয়ে আজ সোমবার বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে দিয়ে প্রয়াত সাংবাদিক মুকুলের ২৩তম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হবে।
জানা যায়, হত্যাকাণ্ডের পরদিন নিহতের স্ত্রী হাফিজা আক্তার শিরিন কারো নাম উল্লেখ না করে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরবর্তীতে তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি যশোর জোনের তৎকালীন এএসপি দুলাল উদ্দিন আকন্দ ১৯৯৯ সালের ২৩ এপ্রিল সাবেক মন্ত্রী তরিকুল ইসলামসহ ২২ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এক পর্যায়ে আইনি জটিলতার কারণে মামলার কার্যক্রম থমকে যায়। আর এ কারণে চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি হাইকোর্ট থেকে বাতিল করে দেয়া হয়।
দীর্ঘদিন পর ২০০৫ সালে হাইকোর্টের একটি বিশেষ বেঞ্চ থেকে মুকুল হত্যা মামলা পুনরুজ্জীবিত করে বর্ধিত তদন্তের নির্দেশ দেয়া হয়। ওই বছরের ২১ ডিসেম্বর সিআইডি কর্মকর্তা মওলা বক্স নতুন দু’জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করে আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দেন। ২০০৬ সালের ১৫ জুন যশোরের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল (৩) এবং অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে (২) ২২ জনকে অভিযুক্ত করে মুকুল হত্যা মামলার চার্জ গঠন করা হয়।
এ সময় মামলা থেকে তৎকালীন মন্ত্রী তরিকুল ইসলাম ও রূপম নামে আরেক আসামিকে অব্যাহতি দেয়া হয়। ২০১০ সালে মামলার ২৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয় যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালতে।
আদালত সূত্র জানায়, মুকুল হত্যা মামলা থেকে অব্যাহতি পেতে আসামি ইত্তেফাকের সাংবাদিক ফারাজী আজমল হোসেন হাইকোর্টের একটি বেঞ্চে আবেদন করেন। তিনি উচ্চ আদালতে যাওয়ায় ফের মুকুল হত্যা মামলার কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। পরে যশোরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ২য় আদালত ফারাজী আজমল হোসেনের অংশ বাদ রেখে ফের বিচার কার্যক্রম শুরু করেন।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পাবলিক প্রসিকিউটর এম ইদ্রিস আলী জানান, মুকুল হত্যা মামলার বিচার কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। দ্রুতই মুকুল হত্যার বিচার পাওয়া যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এদিকে প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন জানান, ২৩ বছরেও মুকুল হত্যার বিচার না হওয়া কষ্টের। এতে হত্যাকারীরা উৎসাহী হবে। সাংবাদিকদের মনোবল ভেঙে পড়বে। তাই আমি আশা করব, সরকার মুকুল হত্যার সঠিক বিচারকাজ দ্রুত সম্পন্ন করবে।
এ অবস্থায় আজ ৩০ আগস্ট সোমবার পালিত হবে শহীদ সাংবাদিক সাইফুল আলমের ২৩তম মৃত্যুবার্ষিকী। এ উপলক্ষে প্রেসক্লাব ও যশোর সাংবাদিক ইউনিয়ন বিস্তারিত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। কর্মসূচির মধ্যে শোক র্যালি, শহীদের স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও দোয়া মাহফিল।