রাজধানীর তিন স্থানে বিক্ষোভ-অবস্থান, তীব্র যানজট
প্রকাশ : 2025-10-12 17:55:46১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক

রাজধানীর প্রেসক্লাব, শাহবাগ ও সায়েন্সল্যাব এলাকায় বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে ঢাকার একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সড়কে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন অফিসগামী মানুষ, শিক্ষার্থী ও সাধারণ যাত্রীরা।
রবিবার (১২ অক্টোবর) সকাল থেকেই প্রেসক্লাব, শাহবাগ, কাকরাইল, মৎস্যভবন, সায়েন্সল্যাব, মিরপুর সড়ক ও গুলিস্তান এলাকায় যানবাহনের ধীরগতি ও দীর্ঘ সারি তৈরি হয়।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন। ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী জোট’-এর ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে সারা দেশ থেকে কয়েক হাজার শিক্ষক-কর্মচারী অংশ নেন। তাদের অবস্থানের কারণে পল্টন থেকে কদম ফোয়ারা পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা ট্রাফিক বিভাগের শাহবাগ জোনের সহকারী কমিশনার মেহেদি হাসান শাকিল বলেন, ‘শিক্ষকদের অবস্থানের কারণে পল্টন থেকে কদম ফোয়ারা পর্যন্ত উভয় দিকেই যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। বিকল্প রুটে ডাইভারশন দেওয়া হয়েছে এবং পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে চেষ্টা চলছে।’
অন্যদিকে সকালে সায়েন্সল্যাব মোড়ে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রস্তাবিত ‘সেন্ট্রাল বিশ্ববিদ্যালয়’ গঠনের খসড়া প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভে নামেন। সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত তাদের অবরোধে ওই এলাকায়ও যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়। পরে তারা সরে গেলে কিছুটা স্বস্তি ফিরলেও শাহবাগ-মিরপুর সড়কে যানজটের প্রভাব থেকে যায়।
এছাড়া শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে ১৮তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস করেও সুপারিশ থেকে বাদ পড়া প্রার্থীরা সকাল থেকে অবস্থান করছেন। তারা অভিযোগ করেন, শূন্য পদ থাকা সত্ত্বেও তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
শাহবাগ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খালিদ মনসুর বলেন, ‘বিক্ষোভ শান্তিপূর্ণভাবে চলছে, যান চলাচলে বড় কোনো বিঘ্ন ঘটছে না।’
তবে তিনটি স্থানে একযোগে আন্দোলনের কারণে শাহবাগ, প্রেসক্লাব, মৎস্যভবন, কাকরাইল, গুলিস্তান, মিরপুর সড়কজুড়ে তীব্র যানজট দেখা দেয়। বাস, প্রাইভেটকার, মোটরসাইকেল ও রিকশার দীর্ঘ সারি তৈরি হয়। দুপুরের পরও এসব এলাকায় যানবাহনের গতি ছিল স্বাভাবিকের তুলনায় অর্ধেকেরও কম।
ফার্মগেট থেকে মৎস্যভবন যেতে এক ঘণ্টারও বেশি সময় লাগায় অফিসগামী এক যাত্রী রফিকুল ইসলাম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘সকালে অফিসে যাওয়ার জন্য আটটায় বের হয়েছি, এখনো শাহবাগ পৌঁছাতে পারিনি। প্রতিদিনই কোনো না কোনো আন্দোলনে পুরো শহর থেমে যায়।’
অন্যদিকে শাহবাগ মোড়ে আটকে থাকা এক পথচারী মেহজাবিন আক্তার বলেন, ‘ট্রাফিক এমনভাবে আটকে গেছে যে, হেঁটে গেলেও জায়গা পাওয়া যাচ্ছে না। বৃষ্টি আর ভিড় দুইয়ে মিলে দুর্ভোগে পড়েছি।’
ট্রাফিক বিভাগ জানায়, বিকল্প রুট হিসেবে মগবাজার, বিজয়নগর ও বেইলি রোড দিয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তবে বিক্ষোভ চলমান থাকায় যানজট পুরোপুরি নিরসন সম্ভব হয়নি।