রাজধানীতে তিন পুলিশকে পেটানোর মামলায় আসামি ৪৫০, গ্রেপ্তার ৩
প্রকাশ : 2022-06-08 11:18:08১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
রাজধানীর জুরাইন রেলগেট এলাকায় উল্টো পথে আসা মোটরসাইকেলের কাগজপত্র দেখতে চাওয়াকে কেন্দ্র করে পুলিশের ট্রাফিক সার্জেন্টসহ তিন সদস্যকে পেটানোর ঘটনায় মামলা হয়েছে। মোটরসাইকেল চালকসহ আটক তিনজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ৪৫০ জনকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে আহত ট্রাফিক সার্জেন্ট আলী হোসেন এ মামলা করেছেন বলে নিশ্চিত করেছেন শ্যামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মফিজুল আলম।
ওসি মফিজুল আলম বলেন, আটক আ্সামিরা হলেন- মোটরসাইকেলের চালক বার্তা বিচিত্রা নামক পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয় দেওয়া সোহাগ-উল ইসলাম রনি, তার স্ত্রী ইয়াসিন জাহান নিশান ভুইয়া ও শ্যালক ইয়াসির আরাফাত ভুইয়া।
ওসি বলেন, জুরাইন রেলগেট এলাকায় রাস্তার উল্টো দিক দিয়ে আসা মোটরসাইকেল আরোহীকে আটকে কাগজপত্র দেখতে চাওয়ায় ট্রাফিক সার্জেন্টকে বেধড়ক মারধরের ঘটনা ঘটে। পরে তাকে উদ্ধারে আসা আরও দুই পুলিশ সদস্যকেও মারধর করা হয়।
আহত সার্জেন্ট আলী হোসেনের হাতে ২১টি সেলাই দিতে হয়েছে। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। আহত অন্য পুলিশ সদস্যরা হলেন- ট্রাফিক কনস্টেবল সিরাজুল ইসলাম ও শ্যামপুর থানার উপপরিদর্শক উৎপল চন্দ্র।
মঙ্গলবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে জুরাইন রেলগেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করে। পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা ও সরকারি স্থাপনায় ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা করা হয়। মামলা নম্বর ১১।
পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) শাহ ইফতেখারুল আলম জানান, সকাল পৌনে ১০টার দিকে জুরাইন রেলগেট এলাকায় উল্টোপথে আসা একটি মোটরসাইকেল আসে। তখন কর্তব্যরত ট্রাফিক সার্জেন্ট আলী হোসেন কাগজপত্র দেখতে চাইলে মোটরসাইকেলচালক অত্যন্ত দুর্ব্যবহার শুরু করেন।
মোটরসাইকেলে থাকা এক নারীসহ দুজন আরোহী ছিলেন। চালক ছাড়া অন্যদের মাথায় হেলমেটও ছিল না। পোশাক ও অন ডিউটিতে থাকা ট্রাফিক সার্জেন্টের পরিচয়পত্র দেখতে চার্জ করেন মোটর সাইকেলচালক। পরে দুজনকে পুলিশ বক্সে নেওয়া হলে সঙ্গে থাকা নারী উত্তেজিত হয়ে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন।
এসময় আশপাশে থাকা সুযোগ সন্ধানীরা নারী লাঞ্ছনার অভিযোগ তুলে সার্জেন্টকে বেধড়ক মারধর করে পুলিশ বক্সে ভাঙচুর চালায়। অভিযুক্ত মোটরসাইকেলচালক সার্জেন্টের বুকের ওপর পা তুলে চেপে বসেন। এ সময় ঘটনাস্থলে উৎসুক জনতার মধ্য থেকে একজন সার্জেন্টের হাতে ছুরিকাঘাত করেন।
সার্জেন্টকে উদ্ধারে আসা পুলিশের এক এসআই ও এক কনস্টেবলকে বেধড়ক মারধর ও ধাওয়া করা হয়। পরে শ্যামপুর থানা পুলিশ খবর পেয়ে অতিরিক্ত ফোর্স পাঠিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করে।
ডিসি শাহ ইফতেখারুল আলম বলেন, আজ বুধবার আটকদের আদালতে তুলে রিমান্ড আবেদন করা হবে। কিসের জন্য এ ধরনের কাজ করল, সে বিষয়ে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এটা পরিকল্পিত কিনা সেটাও গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে।
মোটরসাইকেলের চালক সোহাগ-উল ইসলাম রনি বার্তা বিচিত্রা নামক পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক। তবে আমরা খোঁজ খবর নিয়েছি, এটা নাম সর্বস্ব পত্রিকা।
পুলিশের ওয়ারী ট্রাফিক বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) সাইদুল ইসলাম বলেন, উল্টো পথে একজন নারীকে নিয়ে মোটরসাইকেল চালানোর সময় চালককে থামাতে গেলে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার শুরুটি ট্রাফিক সার্জেন্টের শরীরের সঙ্গে থাকা ক্যামেরায় ধরা পরেছে। সেখানে দেখা যায়, চালকের কাছে মোটরসাইকেলে কাগজ চাইলে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। ওই মোটরসাইকেলে থাকা নারী ও পুরুষ নিজেদের আইনজীবী ও সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ইউনিফর্মে থাকা সার্জেন্টের কাছে উল্টো তার পরিচয়পত্র দেখতে চান।