রংপুরে হাজার হাজার টন জৈব সার অকেজো, উদাসীন কর্তৃপক্ষ
প্রকাশ : 2023-09-07 17:40:02১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
কৃষি বিভাগ ও কর্তৃপক্ষের নজরদারীর অভাব, দারিদ্রতা, জ্বালানী সংকট নিরসন, অসচেতনতা, পরিকল্পিত ব্যবস্থাপনার অভাবে রংপুরের কাউনিয়ায় প্রতিবছর হাজার হাজার টন গোবর সার (জৈব সার) গোবরের শলা, গইঠা জালানী হিসেবে তৈরী করে বিক্রয় করছে। ফলে রান্নাঘর হোটেলসহ বিভিন্ন চুঁলোয় পুড়ে নষ্ট হচ্ছে হাজার হাজার টন জৈব সার।
প্রাকৃতিক উপায়ে পাওয় গবর সার ব্যবহার ও বাজারজাত করনের তেমন কোন উদ্যোগ না থাকায় কৃষি কাজে রাসায়নিক সারের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে সরকারকে বিদেশ থেকে সার আমদানী করতে গিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশ চলে যাচ্ছে। গোবর সার ব্যবহারে কৃষি বিভাগ বা সরকারী ভাবে জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য তেমন কোন জোড়ালো পদক্ষেপ লক্ষ করা যাচ্ছে না। উপজেলার ঢুসমারা চরে গরুর গোবর থেকে বায়গ্যাস প্লান্ট ও বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রকল্প তৎকালিন বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ড. আতিউর রহমান উদ্বোধন করলেও সেই প্রকল্প আর দৃশ্যত নেই। দেশে বেশ কয়েকটি এনজিও ক্লাইমেট চেইঞ্জ এর উপরে কাজ করছে কিন্তু সহজ লভ্য এই জৈব সার নিয়ে তেমন কোন উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে পরিবেশের যে পরিমান ক্ষতি সাধিত হচ্ছে সেই বিষয়টি বিবেচনায় নিলে সরকারের ভুর্তকি দিয়ে হলেও জৈব সার ব্যবহারে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা প্রয়োজন।
রাসায়নিক যুক্ত খাদ্য খেয়ে চিকিৎসা যে লক্ষ লক্ষ টাকা ব্যয় করছে তা থেকে রক্ষা পাওয়ারও উপায় বের করা দরকার। এ বিষতস এনজিও কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান বছরের পর বছর আমরা ওই সব বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির চেষ্টা করে আসছি। কিন্তু বাস্তবতাটা ভিন্ন। উপজেলার প্রায় ৩শ’ গরুর খামারসহ প্রতিটি গ্রামের গৃহস্থত বাড়ীতেই জৈব সার গোবর বাঁশ বা পাট কাঠির সাহায্যে গোবরের শলা বানিয়ে রান্নার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। আবার অনেক দরিদ্র পরিবার গোবর সংগ্রহ করে শলা আকারে তৈরী করে বিক্রয় করে জীবিকা নির্বাহ করছে। উপজেলার বিভিন্ন বাড়ী ও হোটেল গুলোতে চলছে জৈব সার গোবর পোঁড়ানোর মহাউৎসব। গোবর সার এখন আর জমিতে দিতে দেখা যায় না। কালে-ভাদ্রে শুধু আলু চাষের সময় কিছুটা ব্যবহার হতে দেখা যায়। আলু চাষ না হলে সেই জমিতে জৈব সার গোবর আর প্রয়োগ করে না। তারা অধিক দাম দিয়ে রাসায়নিক সার ক্রয় করে জমিতে প্রয়োগ করলেও তার নিজ বাড়ীতে সঞ্চিত গোবর জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করে আসছে। এ ব্যাপারে তাদের ধারনা পাল্টানোর জন্য তেমন কোন উদ্যোগ নেই।
এলাকার বয়স্ক কৃষক ইদ্রিস ফকির ও শহিদার রহমান বলেন এক সময় গোবর সার দিয়ে তারা আবাদ করেছেন কিন্তু এখন রাসায়নিক সার সহজে পাওয়ায় গোবর সার আর ব্যবহার তেমন হয়না। তিনি জানান কৃষিবিদরা কত রকমের রাসায়নিক সার ব্যবহারের কথা বলে থাকেন।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহানাজ পারভীন জানান জমিতে গোবর সার ব্যবহারের বিকল্প কিছুই নেই। কৃষক পর্যায়ে আমরা এ বিষয়ে সচেতনা বৃদ্ধি ও সহযোগিতা করেছি এবং এ প্রক্রিয়া অব্যাহত রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কৃষি ভিত্তিক গবেষনা প্রয়োজন বলে বিজ্ঞ মহল মনে করছেন।