যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন কবরী আপা: শাকিব খান
প্রকাশ : 2021-04-17 08:54:19১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন বাংলা সিনেমার মিষ্টি মেয়ে খ্যাত কিংবদন্তি অভিনেত্রী সারাহ বেগম কবরী। তার মৃত্যুতে শোকগ্রস্ত সিনেমা পাড়া। এ অভিনেত্রীর মৃত্যুতে শোকে মূহ্যমান ঢাকাই সিনেমার সুপারস্টার শাকিব খান।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে এক স্ট্যাটাসে করবীর সোনালি অতীতের স্মৃতিচারণ করেন। তুলে ধরেন বাংলা সিনেমায় সদ্য পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করা কিংবদন্তি এ অভিনেত্রীর অবদানের কথা।
শাকিব লেখেন, ‘চলচ্চিত্রের যারা পথপ্রদর্শক তারা একে একে চলে যাচ্ছেন। সেই পথে পাড়ি দিলেন আমাদের চলচ্চিত্রের কিংবদন্তি অভিনেত্রী কবরী সারোয়ার আপা। তিনি আর নেই (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।’
‘চলচ্চিত্রের প্রাজ্ঞজনের একজন ছিলেন কবরী আপা। তিনি সোনালি অতীতের সমুজ্জ্বল সাক্ষী ছিলেন। সুতরাং, হীরামন, ময়নামতি, চোরাবালি, পারুলের সংসার, বিনিময়, আগন্তুক, সুজন সখী, তিতাস একটি নদীর নাম, নীল আকাশের নিচেসহ অসংখ্য জনপ্রিয় চলচ্চিত্রের নায়িকা ছিলেন কবরী আপা।’
এ সুপারস্টার লেখেন, ‘অভিনেত্রী পরিচয়ের বাইরে পরিচালনাতেও সুনাম অর্জন করেছিলেন তিনি। পর্দার মিষ্টি মেয়ে হিসেবে খ্যাতি পেলেও ব্যক্তি জীবনে কবরী আপা ছিলেন অত্যন্ত ব্যক্তিত্ববান একজন মানুষ। কিংবদন্তি এই মানুষটির সঙ্গে আমার অসংখ্য স্মৃতি। যখনই দেখা হতো আমাকে স্নেহ করতেন। তার সময়কার বিভিন্ন স্মৃতি শেয়ার করতেন। কবরী আপার মৃত্যুতে প্রিয় অভিনেত্রী হারানোর পাশাপাশি একজন অভিভাবক হারানোর শোক অনুভব করছি। যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন কবরী আপা।’
এর আগে শুক্রবার রাত ১২টা ২০মিনিটে রাজধানীর শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন সারাহ বেগম কবরী।
গত ৫ এপ্রিল কবরীর করোনা রিপোর্ট পজিটিভ এলে তাকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে দরকার হয় আইসিইউর। কুর্মিটোলা হাসপাতালে আইসিইউ খালি না থাকায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সহযোগিতায় গত ৮ এপ্রিল তাকে শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
আইসিইউতে প্রায় এক সপ্তাহ চিকিৎসাধীন থাকার পর বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। নেওয়া হয় লাইফ সাপোর্টে। সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন দেশের জনপ্রিয় এ অভিনেত্রী।
১৯৬৪ সালে সুভাষ দত্তের পরিচালনায় ‘সুতরাং’ সিনেমায় অভিনয়ের মধ্য দিয়ে ক্যারিয়ার শুরুর ‘নীল আকাশের নিচে’, ‘ময়নামতি’, ‘ঢেউয়ের পর ঢেউ’, ‘পরিচয়’, ‘দেবদাস’, ‘অধিকার’, ‘বেঈমান’, ‘অবাক পৃথিবী’, ‘সোনালী আকাশ’, ‘দীপ নেভে নাই’-এর মতো দর্শকপ্রিয় চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন কবরী।
২০০৬ সালে তার পরিচালিত প্রথম চলচ্চিত্র ‘আয়না’ মুক্তি পায়। ‘এই তুমি সেই তুমি’ নামে দ্বিতীয় চলচ্চিত্র নির্মাণ করছেন কবরী।
এরপর রাজনীতিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তিনি। ২০০৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। যুক্ত হয়েছেন অসংখ্য নারী অধিকার ও সমাজসেবামূলক সংগঠনের সঙ্গে। অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৭-তে প্রকাশিত হয়েছে তাঁর আত্মজীবনীমূলক বই ‘স্মৃতিটুকু থাক’।
১৯৫০ সালের ১৯ জুলাই চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে জন্মগ্রহণ করেন কবরী। তার আসল নাম ছিল মিনা পাল। বাবা শ্রীকৃষ্ণদাস পাল এবং মা লাবণ্য প্রভা পাল। ১৯৬৩ সালে মাত্র ১৩ বছর বয়সে নৃত্যশিল্পী হিসেবে মঞ্চে উঠেছিলেন তিনি। তারপর টেলিভিশন ও সবশেষে সিনেমায়। কবরী বিয়ে করেন চিত্ত চৌধুরীকে। সম্পর্ক বিচ্ছেদের পর ১৯৭৮ সালে তিনি বিয়ে করেন সফিউদ্দীন সরোয়ারকে। ২০০৮ সালে তাদেরও বিচ্ছেদ হয়ে যায়। কবরী পাঁচ সন্তানের মা।