ম্যাথুজের শতরানে চট্টগ্রামে টেস্টে প্রথম দিন লঙ্কার
প্রকাশ : 2022-05-15 20:51:00১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
সাবেক অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের শতরানে ভর করে বাংলাদেশের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিন শেষে শ্রীলঙ্কার সংগ্রহ দাঁড়িয়েছে চার উইকেটে ২৫৮ রান।
দু’বার জীবন পেয়ে সেঞ্চুরি তুলে ১১৪ রানে অপরাজিত আছেন ম্যাথুজ। আর দুই উইকেটে নিয়ে প্রথম দিন বাংলাদেশের সফল বোলার অফ-স্পিনার নাইম হাসান।
দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথমটি টেস্টে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টস হেরে প্রথমে ফিল্ডিং করতে নামে স্বাগতিক বাংলাদেশ।
সাকিবসহ পাঁচ বোলার নিয়ে একাদশ সাজায় বাংলাদেশ। সাকিবসহ স্পিন বিভাগে আছেন তাইজুল ইসলাম ও নাইম হাসান।
আর পেস বিভাগে আছেন খালেদ আহমেদ ও শরিফুল ইসলাম। একাদশে সুযোগ হয়নি আরেক পেসার এবাদত হোসেনের। বছর শুরুতে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে জয়ের নায়ক ছিলেন এবাদত।
দিনের প্রথম সাত ওভারে বাংলাদেশের দুই পেসার শ্রীলংকার উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গতে না পারলে, অষ্টম ওভারে অফস্পিনার নাইম হাসানকে আক্রমণে আনেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মোমিনুল।
প্রথম চার বলে কোন রান দেননি নাইম। তবে পঞ্চম বলে করুনারতেকে লেগ বিফোর করেন নাইম। রিভিউ নিয়েও উইকেটে টিকতে পারেননি লংকান অধিনায়ক।
দলীয় ২৩ রানে প্রথম উইকেট পতনের পর জুটি বাঁধেন ওশাদা ও কুশল মেন্ডিস। সর্তকতার সাথে খেলে উইকেটে সেটও হয়ে গিয়েছিলেন তারা।
কিন্তু প্রথম সেশন শেষ হবার আগে টাইগারদের দ্বিতীয় সাফল্যও এনে দেন নাইম। তার দারুন এক ডেলিভারিতে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ওশাদা।
বিরতি থেকে ফিরে দলের রানের চাকা ঘুড়ান কুশল ও অভিজ্ঞ অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজ। ৩১তম ওভারে শ্রীলংকার রান ১০০-তে নিয়ে যান তারা।
উইকেটের সাথে মানিয়ে নিয়ে বাংলাদেশের বোলারদের উপর আধিপত্য বিস্তার করে খেলতে থাকেন কুশল ও ম্যাথুজ।
৩৬তম ওভারে বল হাতে আক্রমণে আসেন সাকিব। তবে সফলতা পাননি তিনি। উল্টো ৪৩ তম ওভারে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১৩তম হাফ-সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন কুশল।
এরপর দ্বিতীয় সেশনের শেষ ওভারে ৯৪ ম্যাচের টেস্ট ক্যারিয়ারে ৩৮তম হাফ-সেঞ্চুরি করেন ম্যাথুজ। ১১১ বলে হাফ-সেঞ্চুরিতে পা রাখেন তিনি।
কুশল ও ম্যাথুজের জোড়া হাফ-সেঞ্চুরিতে ৫৬ ওভারে ২ উইকেটে ১৫৮ রান তুলে বিরতিতে যায় শ্রীলংকা। দ্বিতীয় সেশনে কোন উইকেট পায়নি বাংলাদেশ।
তবে হতাশার সেশন কাটানোর পরও মুষড়ে পড়েনি বাংলাদেশ। বিরতি থেকে ফিরেই প্রথম ডেলিভারিতে কুশলের বিদায় নিশ্চিত করেন তাইজুল।
তাইজুলের শর্ট ডেলিভারিটি লেগ সাইডে খেলতে গিয়েছিলেন কুশল। কিন্তু ব্যাট-বলের মিলটা ঠিক-ঠাক হয়নি। মিড উইকেটে কুশলের ক্যাচ নেন নাইম।
কুশলকে বিদায়ের পরের ওভারে আবারও উইকেট শিকারে মেতে উঠতে পারতো বাংলাদেশ। কিন্তু খালেদের বলে ম্যাথুজের লেগ সাইডের ক্যাচ নিতে পারেননি উইকেটরক্ষক লিটন।
লিটনের জন্য কঠিন হলেও, মাহমুদুল হাসান জয়কে সহজ ক্যাচ দিয়েছিলেন ম্যাথুজ। ৬৫তম ওভারে তাইজুলের তৃতীয় ডেলিভারিটি বুঝতে পারেননি ম্যাথুজ।
ফলে তার ব্যাটের কানা ছুঁয়ে সেটি স্লিপে চলে যায়। ঝাঁপিয়ে পড়েও ক্যাচ নিতে পারেননি জয়। ফলে ৬৯ রানে জীবন পান ম্যাথুজ।
তবে পরের ওভারে বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন সাকিব। সাকিবের ডেলিভারি ডিফেন্স করতে গিয়েছিলেন নতুন ব্যাটার ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। বল ব্যাটে লেগে প্যাড ছুঁয়ে ক্যাচ উঠে।
তখন প্রথম স্লিপে ছিলেন জয়। প্রথম স্লিপ থেকে সামান্য সামনের দিকে দৌঁড়ে ড্রাইভ দিয়ে ক্যাচ নেন জয়। এবার আর ভুল করেননি তিনি।
তবে ক্যাচ আউটের আবেদনের সাড়া দেননি আম্পায়ার। তাই রিভিউ নেন মোমিনুল। রিভিউতে বিদায় হয় ডি সিলভার। ৬ রান করেন তিনি। ১১তম ওভারে এসে প্রথম উইকেট পান সাকিব।
ডি সিলভার আউটের পর ক্রিজে ম্যাথুজের সঙ্গী হন দিনেশ চান্ডিমাল। ব্যাট হাতে সতর্ক থাকলেও, বাউন্ডারি ও ওভার বাউন্ডারি ঠিকই আদায় করে নেন দুই সাবেক অধিনায়ক।
৮১তম ওভারে শরিফুলকে মিড উইকেট দিয়ে চার মেরে টেস্ট ক্যারিয়ারের ১২তম সেঞ্চুরিতে পা রাখেন ম্যাথুজ। বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম সেঞ্চুরিতে পেতে ম্যাথুজের লাগলো ১৮৩ বল।
সেঞ্চুরির পর দিন শেষে অপরাজিত থকেন ম্যাথুজ। চান্ডিমালের সাথে অবিচ্ছিন্ন ৭৫ রান যোগ করেন ম্যাথুজ। ১৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ২১৩ বলে অপরাজিত ১১৪ রান করেছেন ম্যাথুজ।
দুই ছক্কায় ৭৭ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত আছেন চান্ডিমাল। অন্যদিকে, বাংলাদেশের নাইম ৭১ রানে দুইটি, তাইজুল-সাকিব একটি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: ২৫৮/৪, ৯০ ওভার (ওশাদা ৩৬, করুনারত্নে ৯, কুশল ৫৪, ম্যাথুজ অপরাজিত ১১৪, ধনাঞ্জয়া ৬, চান্ডিমাল অপরাজিত ৩৪)। নাইম ১৬-২-৭১-২, তাইজুল ৩১-৮-৭৩-১, সাকিব ১৯-৭-২৭-১।