মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ

প্রকাশ : 2021-10-27 18:35:17১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দূর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ

বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামাল হোসেন মুফতি‘র বিরুদ্ধে দূর্নীতি, অনিয়ম, ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যু ও স্থানীয়দের হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এসব অন্যায়ের বিচারের দাবিতে এমকে রতন নামের এক ব্যবসায়ী বুধবার দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে  সংবাদ সম্মেলন করেছেন। 

লিখিত বক্তব্যে মোরেলগঞ্জ উপজেলার মেসার্স সিআর এন্টারপ্রাইজের স্বত্তাধীকারী এমকে রতন বলেন, মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পথ্য, স্টেশনারী ও ধোলাই সরবরাহের জন্য সকল শর্ত মেনে আমি দরপত্র দাখিল করি। কিন্তু দরপত্রের শর্ত অনুযায়ী বাজার দরের সাথে সামঞ্জস্য থাকা স্বত্তেও আমাকে কাজ না দিয়ে সর্বনিম্ন দরদাতা রাজধানীর মহাখালীস্থ মেসার্স আরিয়া ট্রেডার্সকে কাজ দিয়েছেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামাল হোসেন মুফতি। এই প্রতিষ্ঠানের সরবরাহকৃত ঠিকানায় খোজ নিয়ে জানা যায় উক্ত ঠিকানায় এই নামে কোন প্রতিষ্ঠান নেই। এছাড়া দরপত্রের ১৮ নম্বর শর্তে উল্লেখছিল সর্বনিম্ন দরদাতাকে কাজ দেওয়া যাবে না। ডা. কামাল হোসেন মুফতি আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য কাল্পনিক ওই প্রতিষ্ঠানকে কাজ দিয়েছেন। ধোলাই ও পথ্য দুটি কাজ ডা. কামাল হোসেন মুফতি তার নিজস্ব লোক গাবতলা কমিনিউটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মোঃ ফারুক হোসেনকে দিয়ে পরিচালনা করেন। 

২০২০-২১ অর্থ বছরে এমএসআর ক্রয়ের দরপত্রের শর্ত ভঙ্গ করে এবং পেশাদার সরবরাহকারীদের বি ত করে মোরেলগঞ্জ উপজেলার নুরুজ্জামান মেডিসিন হাউজকে কাজ দেয়।এই ক্ষেত্রেও নুরুজ্জামান মেডিসিন হাউজের শুধু নাম ব্যবহার করা হয়েছে। মূলত সকল পন্য সরবরাহ করেছেন  ডা. কামাল হোসেন মুফতির অনিয়মের সহযোগী কমিনিউটি ক্লিনিকের সিএইচসিপি মোঃ ফারুক হোসেন। এসব কাজের বিলও উত্তোলন করেছেন সিএইচসিপি মোঃ ফারুক হোসেন।বেশিরভাগ বিলের পিছনে ফারুক হোসেনের স্বাক্ষর রয়েছে। শুধু এই দুটি দরপত্রে নয়, আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার জন্য মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বেশিরভাগ কাজে নানা রকম অনিয়ম করে থাকেন ডা. কামাল হোসেন মুফতি।

তিনি আরও বলেন, ডা. কামাল হোসেন মুফতি মেডিকেল অফিসার থেকে শুরু করে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা হিসেবে প্রায় ১৭ বছর ধরে মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত রয়েছেন। এই সময়ে তিনি হাসপাতালের কোয়ার্টারে এবং তার অফিস কক্ষে বসে ৩০০ টাকা  ভিজিট নিয়ে রোগী দেখেন। নিয়ম বহির্ভুতভাবে ডরমেটরি ভাড়া দিয়ে সরকারি কোয়ার্টারে থাকেন তিনি। এর ফলে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব হারাচ্ছেন। ভুল চিকিৎসায় রোগী মৃত্যুর কারণে তার বিরুদ্ধে ফৌজদারী মামলাও হয়েছে। তার অনিয়মের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনও তদন্ত শুরু করেছে। 

এসব অনিয়মের বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে আমার নামে একটি মিথ্যা মামলাও দিয়েছেন এক নারীকে দিয়ে। ওই মামলায় ডা. কামাল হোসেন মুফতি ও তার অনিয়েমের সহযোগী সিএইচসিপি মোঃ ফারুক হোসেন স্বাক্ষী রয়েছেন। এর মাধ্যমেই বোঝা যায় যে এটা একটি সাজানো মামলা। অবিলম্বে এই মিথ্যা মামলা প্রত্যহারের জন্য সরকারের উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। মোরেলগঞ্জবাসীর সু-চিকিৎসা নিশ্চিত করতে এবং স্থানীয়দের হয়রানির হাত থেকে বাঁচাতে ডা. কামাল হোসেন মুফতির অপসারণ দাবি করেন তিনি। 

এসব অভিযোগের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কামাল হোসেন মুফতি বলেন, সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকতে পারে। এসব বিষয়ে তদন্ত চলছে, তদন্তের অভিযোগের সত্যতা পেলে, যা হয় হবে।

বাগেরহাটের সিভিল সার্জন ডা. জালাল উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। বিষয়টি আমার জানা নেই। লিখিত অভিযোগ পেলে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন স্বাস্থ্য বিভাগের এই শীর্ষ কর্মকর্তা।