মোদিকে দীর্ঘ বার্তা পুতিনের, 'ভারতের জনগণ অপমান সহ্য করবে না'

প্রকাশ : 2025-10-03 16:47:31১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

মোদিকে দীর্ঘ বার্তা পুতিনের, 'ভারতের জনগণ অপমান সহ্য করবে না'

রাশিয়ার সঙ্গে তেল বাণিজ্য বন্ধ করার জন্য ভারতকে চাপ দেওয়ার মার্কিন প্রচেষ্টার তীব্র সমালোচনা করেছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি নরেন্দ্র মোদিকে 'বন্ধু' উল্লেখ করে বলেছেন, 'আমি বিশ্বাস করি, ভারতের মতো দেশের মানুষ রাজনৈতিক নেতৃত্বের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে এবং কখনো কারও সামনে কোনো অপমান সহ্য করবে না।'

শুক্রবার (৩ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এনডিটিভি জানিয়েছে, মস্কোভিত্তিক থিংক ট্যাঙ্ক ভালদাই ডিসকাশন ক্লাবের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে বক্তৃতা দেওয়ার সময় পুতিন নরেন্দ্র মোদিকে 'ভারসাম্যপূর্ণ এবং বিজ্ঞ নেতা' বলে বর্ণন করেছেন। তিনি জোর দিয়েছিলেন, মস্কো এবং নয়াদিল্লির একটি বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে।

তিনি বলেন, ভারতের রাশিয়ান অপরিশোধিত তেল আমদানি একটি সম্পূর্ণ অর্থনৈতিক হিসাব। এখানে কোনো রাজনৈতিক দিক নেই। যদি ভারত আমাদের জ্বালানি সরবরাহ প্রত্যাখ্যান করে, তাহলে তাদের কিছু ক্ষতি হবে। ভিন্ন ভিন্ন অনুমান রয়েছে - কেউ কেউ বলে, এটি (ক্ষতির পরিমাণ) প্রায় ৯-১০ বিলিয়ন ডলার হতে পারে।

পুতিন উল্লেখ করেন, যদি নয়াদিল্লি এটি প্রত্যাখ্যান না করে, তাহলে হয়তো নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে। নিষেধাজ্ঞার ফলে একই ক্ষতি হবে। 'তাহলে কেন প্রত্যাখ্যান করা হবে, যদি এর জন্য অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক খরচও চুকাতে হয়?'

তিনি বলেন, 'অবশ্যই আমার বিশ্বাস, ভারতের মতো দেশের মানুষ রাজনৈতিক নেতৃত্বের নেওয়া সিদ্ধান্তগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করবে এবং কখনো কারও সামনে কোনো অপমান সহ্য করবে না। আমি প্রধানমন্ত্রী মোদিকে জানি; তিনি নিজে কখনো এই ধরণের কোনো পদক্ষেপ নেবেন না... মার্কিন শুল্কের কারণে ভারতের যে ক্ষতি হবে, তা রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল আমদানির মাধ্যমে ভারসাম্যপূর্ণ হবে এবং এটি একটি সার্বভৌম দেশ হিসেবে মর্যাদা অর্জন করবে।'

এনডিটিভির প্রতিবেদন অনুসারে, জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ভাষণের দুই সপ্তাহ পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের এই দীর্ঘ বার্তা এলো। ট্রাম্প তার ভাষণে চীন ও ভারতকে ইউক্রেন যুদ্ধের 'প্রাথমিক অর্থদাতা' বলে বর্ণনা করেছিলেন এবং রাশিয়ার তেল কেনা অব্যাহত রেখে অর্থায়নের অভিযোগ তুলেছিলেন। রাশিয়ার তেল কেনার শাস্তি হিসেবে যুক্তরষ্ট্র ইতোমধ্যে ভারতের ওপর অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। এর ফলে গত আগস্টে ভারতীয় পণ্য রপ্তানির ওপর মোট ৫০ শতাংশ শুল্ক প্রয়োগ হয়েছে।

পুতিন উল্লেখ করেছেন, বাণিজ্যিক অংশীদারদের ওপর উচ্চ শুল্ক বিশ্বব্যাপী পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিতে পারে। এর ফলে মার্কিন ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার উচ্চ রাখতে বাধ্য হতে পারে।

তিনি সোভিয়েত ইউনিয়নের সময় থেকে রাশিয়া-ভারত সম্পর্কের 'বিশেষ' দিক তুলে ধরেন। পুতিন বলেন, 'ভারতে, তারা এগুলো মনে রাখে, তারা জানে এবং তারা এটিকে মূল্য দেয়। আমরা কৃতজ্ঞ যে, ভারত এটি ভুলে যায়নি... ভারতের সঙ্গে আমাদের কখনো কোনো সমস্যা বা উত্তেজনা হয়নি, কখনো নয়।

পুতিন নয়াদিল্লি ও মস্কোর মধ্যে বাণিজ্য ভারসাম্যহীনতার কথা স্বীকার করে বলেছেন, এটি কমাতে ভারত থেকে আরও কৃষি পণ্য কেনা যেতে পারে। ঔষধি পণ্য, ওষুধের জন্য আমাদের পক্ষ থেকে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে... আমাদের সুযোগ এবং সম্ভাব্য সুবিধাগুলো এক করার জন্য বিভিন্ন ধরণের কাজ সমাধান করতে হবে।