মেহেরপুরে লাইসেন্স বিহীন গড়ে উঠেছে ব্যাঙের ছাতারমত ঔষধের দোকান

প্রকাশ : 2022-04-07 19:19:05১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

মেহেরপুরে লাইসেন্স বিহীন গড়ে উঠেছে ব্যাঙের ছাতারমত ঔষধের দোকান

মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন গ্রাম ও শহরের অলিগলিতে বাড়ির ভিতর ও রাস্তার পাশে ব্যাঙের ছাতারমত গড়ে উঠেছে লাইসেন্স বিহীন ঔষধের দোকান এবং চিকিৎসার নামে চলছে অপচিকিৎসা। সামান্য একটু সর্দি-জ্বর কিংবা কাশি হলেই দেওয়া হচ্ছে দামিদামি এন্টিবায়োটিক ঔষধ। যা পরবর্তিতে শরীরের জন্য মারাত্মক ঝুকিপূর্ণ। এমনটি জানিয়েছেন বেশকিছু ডাক্তারগণ। 

মেহেরপুর জেলার সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম উজলপুর, শোলমারি, গাড়াবাড়িয়া, গোভিপুর, যাদবপুর, গাড়াডোব, কোলারমোড়, আমঝুপি, বারাদি বাজার সহ শহরের বড়বাজার থানারোড, কলেজমোড়, পৌর ঈদগাহপাড়া, তাঁতীপাড়া, গোরস্থানপাড়া, শিশুবাগান পাড়া, পুরাতন কাজী অফিসপাড়া এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে ব্যাঙের ছাতার মত গড়ে উঠেছে লাইসেন্সবিহীন অবৈধ ঔষধের দোকান। সদর উপজেলা আমঝুপি বাড়াদি বাজারে সেবা মেডিকেল এন্ড ফার্মেসীতে (ডি.এম.এফ) চিকিৎসক মোমিনুর রহমানের চেম্বার। মুজিবনগর উপজেলা নূরপুর, পিরোজপুর, কোমরপুরপুর বাজারে নিউ লাইফ মেডিকেল হলে (ডি.এম.এফ) চিকিৎসক মোস্তাফিজুর রহমানের চেম্বার। রোগীদের কাছ থেকে দেখা যায়, সর্দি-জ্বর-কাশি হলেই দেওয়া হচ্ছে সেফট্রিয়াক্সনের মত এন্টিবায়োটিক ইনজেকশন সহ বিভিন্ন দামিদামি এন্টিবায়োটিক ঔষধের ব্যবস্থাপত্র এবং সেই সাথে ক্রয়কৃত দামিদামি এন্টিবায়োটিক ঔষধ। আবার বেশ কয়েকটি রোগের ওপর অভিজ্ঞও তারা। আরো দেখা গেছে, মেহেরপুর শহরের বড়বাজার থানারোড ভাইভাই ফার্মেসীতে রেজিঃ ভুক্ত চিকিৎসকের পরামর্শ কিংবা প্রেসক্রিপশন ছাড়ায় দেওয়া হচ্ছে শিশুদের দামিদামি এন্টিবায়োটিক ঔষধ। দারিয়াপুর বাজারে তৌহিদ ফার্মেসীতেও একই অবস্থা। সেই সাথে ড্রাগ লাইসেন্স বিহীন গড়ে ওঠা ঔষধের দোকানগুলোতেও বিক্রি হচ্ছে কমা কোম্পানীর ঔষধ। এবিষয়ে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের আরএমও ডাঃ মকলেছুর রহমান বলেন, রেজিঃ ভুক্ত ডাক্তারের পরামর্শ কিংবা প্রেসক্রিপশন ছাড়া এন্টিবায়োটিক ঔষধ বিক্রি করা যে রকম বেআইনী সে রকম ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়া ঔষধ বিক্রি করা একই রকম অপরাধ।

 কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সহঃ অধ্যাপক শিশু বিশেষজ্ঞ ডাঃ মাহাবুবুল আলম বিপ্লব বলেন- স্বাস্থ্য বিভাগের কোন নিয়ন্ত্রন নাই। এন্টিবায়োটিক এর ডোজ ঠিকমত তারা জানেনা। এন্টিবায়োটিকের ব্যবহার না জানলে এক সময় শরীরে আর কোন এন্টিবায়োটিক কাজ করবে না। অতি মাত্রায় এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে সামনে এমন একটি ভয়াবহ দিন আসছে শরীরে জীবানু থাকলেও জীবানু ধ্বংস করতে তখন আর কোন এন্টিবায়োটিক এ কাজ করবে না। এন্টিবায়োটিক প্রেসক্রিপশন করতে হলে অবশ্যই তাকে এমবিবিএস হতে হবে। মেহেরপুর জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ এ এম জেড সিদ্দিকী বলেন- বিএমডিসি এর নিয়ম অনুযায়ি যারা বিএমডিসি’র রেজিঃ ধারী ডাক্তার কেবলমাত্র তারাই প্রেসক্রিপশন করতে পারবে এবং তারা নামের আগে সামনে ডাঃ লিখতে পারবে। যারা চিকিৎসক সেজে এধরনের কাজগুলো করছে এবং ড্রাগ লাইসেন্স ছাড়াই ঔষধ বিক্রি করছে তাদের ব্যাপারে ঔষধ প্রশাসন ও প্রশাসন বিভাগ আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে। 

ঔষধ প্রশাসন চুয়াডাঙ্গার সহকারী পরিচালক কে, এম মুহসীনিন মাহবুব বলেন, মেহেরপুর ও চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন এলাকার ইতিমধ্যে কিছু তালিকা আমরা পেয়েছি। আমাদের অভিযান অব্যহত রয়েছে। আমরা যখন অভিযানে যায় তখন তারা বন্ধ করে পালিয়ে যায়। আবার আমরা যখন অভিযান শেষ করে চলে আসি খবর পাই সন্ধারপর আবার খুলেছে। বেশ কিছু দোকানে অভিযান করে বন্ধ করা হয়েছে। আমরা অভিযানের ধরন পরিবর্তন করেছি। এধরনের অভিযোগ পেলে আমরা দ্রুত ব্যবস্থা নেব।