মেঘনা নদীতে গভীর রাতে লঞ্চ থেকে যুবকের ঝাঁপ
প্রকাশ : 2023-04-10 10:46:56১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
রবিবার (৯ এপ্রিল) দিনভর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে বিভিন্ন আইডি থেকে একটি নিখোঁজ সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছিল। সবার আকুতি ছিল বরিশাল নগরীর কালিবাড়ি রোডের ফ্লোরাভিউ ভবনের বাসিন্দা রিফাত মাহামুদের (২৭) সন্ধান দেওয়ার জন্য। সন্ধানদাতাদের জন্য ওই সব পোস্টে বেশ কয়েকটি মোবাইল নম্বরও দেওয়া হয়েছে।
রবিবার বিকালের দিকে ওই সব আইডি থেকে প্রকাশ করা হয় একটি ভিডিও। সেই ভিডিওতে দেখা গেছে, এক যুবক বরিশাল-ঢাকা নৌ রুটে চলাচলকারী শুভরাজ-৯ কেবিনের পাশের বারান্দার রেলিং থেকে নদীতে ঝাঁপ দিচ্ছেন।
এদিকে ভিডিওটি দেখে রিফাতের পরিবার থেকে নিশ্চিত করা হয়, ঝাঁপ দেওয়া যুবক আর কেউ নন, তিনি রিফাতই ছিলেন।
রিফাত কালিবাড়ি রোডের শেখ আসলাম মাহামুদের ছেলে। মরহুম সাবেক কাউন্সিলর কবির উদ্দিন হান্নুর বোনের ছেলে। রিফতা সরকারি বিএম কলেজ থেকে হিসাববিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্স শেষ করেছেন। চাকরির সন্ধানে ছিলেন তিনি।
রিফাতের বাবা শেখ আসলাম জানিয়েছেন, গেল শুক্রবার (৮ এপ্রিল) রাতে শুভরাজ-৯ লঞ্চে বরিশাল থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন রিফাত। ঢাকায় একটি চাকরিতে ইন্টারভিউ ছিল তার। শনিবার সকালে লঞ্চটি সদরঘাটে ভিড়লেও রিফাতের মোবাইল নম্বরটি বন্ধ ছিল। বিভিন্ন মাধ্যম থেকে তার সন্ধান করা হচ্ছিল। কিন্তু কোনোভাবে সন্ধান মিলছিল না।
পরে ১০ থেকে ১২টি ফেসবুক আইডি থেকে নিখোঁজ সংবাদ প্রকাশ করা হয়। কিন্তু কোনোভাবেই সন্ধান পায়নি পরিবার। পরে শুভরাজ লঞ্চের সিসি ক্যামেরা ফুটেজ সংগ্রহ করলে দেখা যায়, শুক্রবার রাত ১টার দিকে রিফাত কেবিনের পাশে বারান্দার রেলিংয়ের কাছে বিমর্ষ দাঁড়িয়ে আছেন। বেশ কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর আকস্মিক সেখান থেকে নদীতে ঝাঁপ দেন। তার ১০ গজ দূরে ৩ ব্যক্তিকে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেলেও তাদের তেমন কোনও উদ্যোগ ছিল না।
রিফাতের ছোট ভাই সংগ্রাম মাহামুদ জানিয়েছেন, মেঘনা নদীতে ঝাঁপ দিয়েছেন তার ভাই। এ কারণে তারা ঝাঁপ দেওয়ার স্থান শনাক্ত করে ৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে সন্ধান চালাচ্ছেন। তাদের ধারণা রিফাত বেঁচে আছেন। কারণ রিফাত সাঁতার জানতেন। হয়তো ঝাঁপ দেওয়ার পর তার ভুল বুঝতে পেরে সাঁতরে তীরে উঠবেন।
রিফাতের বাবা শেখ আসলাম জানিয়েছেন, এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি, যার জন্য রিফাত আত্মহত্যা করবেন।
এ ব্যাপারে কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানিয়েছেন, এ ঘটনায় রবিবার বিকালে রিফাতের বাবা শেখ আসলাম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন। এরপর শুভরাজ লঞ্চ থেকে সিসি ক্যামেরার ফুটেজ এনে তা পর্যালোচনা করে ঝাঁপ দেওয়ার স্থান চিহ্নিত করা হয়েছে। ওই সব স্থানে পুলিশ ও রিফাতের পরিবার ও রিফাতের বন্ধুরা সন্ধান চালাচ্ছে।