মুন্সীগঞ্জে ট্রিপল মার্ডারের মামলায় আসামী ২৭, গ্রেফতার ৬, আতঙ্কে এলাকাবাসী

প্রকাশ : 2021-03-26 21:33:26১ |  অনলাইন সংস্করণ

  নিউজ ডেস্ক   

মুন্সীগঞ্জে ট্রিপল মার্ডারের মামলায় আসামী ২৭, গ্রেফতার ৬, আতঙ্কে এলাকাবাসী

মুন্সীগঞ্জ শহরের উত্তর ইসলামপুর এলাকায় কিশোর গ্যাংয়ের সালিশ বৈঠকে  ছুরিকাঘাতে ত্রিপল মার্ডারের ঘটনায় ২৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ৬ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- সৌরভের বাবা মো. জামাল হোসেন, তাঁর স্ত্রী নাসরিন বেগম, মো.জাহাঙ্গীর হোসেন, মো.রনি, মো.ইমরান হোসেন ও রাহুল প্রধান।

অন্যদিকে এ ঘটনার পর থেকে ওই এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। উত্তর ইসলামপুর এলাকার বিভিন্ন সড়কে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
স্থানীয়রা বলেন, এলাকার কিশোর-তরুণেরা কয়েকটি দলে বিভক্ত। আধিপত্য নিয়ে পক্ষগুলো প্রায়ই ঝামেলায় জড়ায়। ঘটে মারামারির ঘটনাও। হত্যাকাণ্ডের ঘটনার পর থেকে এ গ্রামের প্রতিটি ঘরে মানুষের চোখে-মুখে আতঙ্কের আবহ লক্ষ্য করা গেছে।

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাজীব খান জানান, নিহত মিন্টু প্রধানের স্ত্রী খালেদা আক্তার বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে মামলাটি করেন। মামলায় ১২ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও ১০ থেকে ১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে এজহারনামীয় ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামীদের গ্রেফতারে  পুলিশের অভিযান চলছে।

উল্লখ্য,  গত ২৪ মার্চ বুধবার বিকেলে উত্তর ইসলামপুর বালুুর মাঠে কিশোর গ্যাং সৌরভ ও অভি গ্রুপের সঙ্গে অপরপক্ষ শুভ, ইমন ও সাকিব গ্রুপের কথা-কাটাকাটি হয়। এ সময় উভয় পক্ষ হাতাহাতি-মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে ওইদিন রাত ৯টার দিকে সালিশ বৈঠকের মাধ্যমে বিষয়টি মিমাংশার চেষ্টা চালায় দুই পক্ষই। এলাকাবাসী জানায়, এই প্রক্রিয়ায় শুভ, ইমন ও সাকিবের পক্ষে ক্রীড়া সংগঠক আওলাদ হোসেন মিন্টু এবং অপরপক্ষে সৌরভের বাবা জামাল মিয়া দুই গ্রুপের মধ্যে আপোষ মিমাংসা নিয়ে কথা বলেন। এ সময় আওলাদ হোসেন মিন্টু ২৫ মার্চ বৃহস্পতিবার বিষয়টি শুভ, ইমন ও সাকিবকে ডেকে মিমাংশা করে দেওয়ার কথা জানান মিন্টু। কিন্তু এতে সম্মতি না দিয়ে এখনই শুভ, ইমন ও সাকিবদের ডেকে আনতে চাপ প্রয়োগ করেন সৌরভের পিতা জামাল মিয়া। এতে অনেকটা বাধ্য হয়েই মোবাইলে ফোন করে শুভ, ইমন ও সাকিবকে ঘটনাস্থলে ডেকে নেয় আওলাদ হোসেন মিন্টু। তারা তিনজন আসার পর এলাকার বড় ভাই মিন্টু সৌরভদের সঙ্গে মারামারি করার অপরাধে জামাল মিয়ার পা ধরে ক্ষমা চাইতে বলেন আওলাদ হোসেন মিন্টু। তার কথামতো শুভ, ইমন ও সাকিব ক্ষমা চাইতে এগিয়ে যাওয়ার সময়ই কিছু বুঝে ওঠার আগেই ধারালো ছুড়ি নিয়ে প্রস্তুত থাকা শামীম, সিহাব, জনি, সৌরভ ও  অভিসহ অজ্ঞাতনামা ২০ থোকে ২৫ জনের কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা আকস্মিক হামলা চালিয়ে ধারালো ছুরি দিয়ে ইমন ও সাকিবকে আঘাত করতে থাকে। এ দৃশ্য দেখে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন শুভ। এ সময় সাকিব ও ইমনকে বাচাঁতে এগিয়ে গেলে আওলাদ হোসেন মিন্টু প্রধানকেও  ধারালো ছুরি দিয়ে পেটে ও বুকে একাধিক আঘাত করে। এ সময় তাদের চিৎকারে এলাকাবাসী এগিয়ে এসে রাত পৌনে ১২ টার দিকে  তাঁদের উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ইমনকে মৃত ঘোষণা করেন এবং প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে সাকিব ও মিন্টুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। এতে ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান সাকিব। আওলাদ হোসেন মিন্টু প্রধান বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।