মুন্সীগঞ্জে চিকিৎসকদের আইনের বিধান প্রতিপালনে জাস্টিস অব দি পিসের ১৩ দফার নির্দেশ
প্রকাশ : 2025-11-19 12:56:03১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
মুন্সীগঞ্জে আইনের বিধান প্রতিপালনে চিকিৎসা সনদ ও ময়না তদন্ত রিপোর্টের উপর চিকিৎসকদের ১৩ দফা প্রতিপালনের নির্দেশ দিয়েছেন চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ও জাস্টিস অব দি পিস সাব্বির মাহমুদ চৌধুরী।
মঙ্গলবার (১৮ নভেম্বর) বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালতের নাজির মো. আবু হানিফ। এর আগে গেল সোমবার মুন্সীগঞ্জ জাস্টিস অব দি পিসের স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে ১৩ দফার বিষয় উল্লেখ করা হয়।
দফায় বলা হয়েছে ক্রিমিনাল রুলস এন্ড অর্ডার অনুযায়ী জখমির মেডিকেল সনদ ইস্যু করতে হবে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক ২০১১ সালের ২৯ নভেম্বর তারিখের জারীকৃত নির্দেশনা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের চাহিদাপত্র ব্যাতিত জখমী সনদ ইস্যু করা যাবে না।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর কর্তৃক ১৯৯৫ সালের ১০ অক্টোবর তারিখের জারীকৃত পরিপত্রের নির্দেশনা মতে ৩ সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের মাধ্যমে জখমী সনদ ইস্যু করতে হবে। প্রযোজনে আবাসিক মেডিকেল অফিসার, ইমার্জেন্সী মেডিকেল অফিসার এবং যে চিকিৎসক জখমীকে চিকিৎসা দিয়েছে তাদের আবশ্যিক ভাবে মেডিকেল বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত রাখতে হবে।
আদালতে সাক্ষী উপস্থিতি নিশ্চিত করণের লক্ষ্যে জখমী সনদপত্রে সনদ প্রদানকারী মেডিকেল বোর্ডের সদস্যগনের স্বাক্ষরের নিচে আইডি নং নাম ও পদবীসহ সীল ও তারিখ ব্যবহার করতে হবে এবং মোবাইল ফোন নম্বর সহ উল্লেখ করতে হবে।
হাতে লেখা জখমী সনদ প্রদান যতদুর সম্ভব পরিহার করতে হবে। কম্পিউটারে টাইপকৃত জখমী সনদ সরবরাহ করতে হবে।
কম্পিউটারে টাইপ করে ইস্যুকৃত জখমী সনদের লেখা মুছে যাওয়া কিংবা অস্পষ্ট হয়ে যাওয়ার আশংকা থাকায় কম্পিউটারে টাইপকৃত জখমী সনদসমূহে উন্নতমানের প্রিন্টার ও কালি ব্যবহার করতে হবে।
একই ঘটনায় একই ভিকটিমের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও জেলা সদর হাসপাতালের জখমী সনদে আঘাতের বর্ণনার ভিন্নতা থাকার বিষয়ে এবং আঘাতের বর্ণনায় বানান ভুল না হওয়ার বিষয়ে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে এবং তৎবিষয়ে উভয় হাসপাতালের মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে হবে।
অনেক সময় দেখা যায় গুরুতর জখমের দৃশ্যমান প্রমাণ থাকা সত্ত্বেও সাধারণ জখমের চিকিৎসা সনদ প্রদান করা হয়। এর ফলে বিচার প্রার্থী জনগণ ন্যায় বিচার হতে বঞ্চিত হয়। অধিকন্ত এ ধরনের ইচ্ছাকৃত ভুল দি পেনাল কোড ১৮৬০ এর ১৯২ ধারা অনুযায়ী ঋধনৎরপধঃরহম ঋধষংব ঊারফবহপব হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে নির্ভুল সনদ ইস্যুর বিষয় সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা ও আন্তরিকতা প্রদর্শন করতে হবে।
জখমী সনদ প্রদানের ক্ষেত্রে ভিকটিম ও সনাক্তকারীর নাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে এবং সনাক্তকারী পাওয়া না গেলে তার কারণ স্পষ্টভাবে উল্লেখ করতে হবে।
সংশ্লিষ্ট রেজিষ্টার পর্যালোচনা করে জখমী সনদ প্রদানের সুযোগ থাকলেও অপেক্ষাকৃত ত্রুটিমুক্ত ও আঘাত অনুযায়ী জখমী সনদ প্রদানের স্বার্থে জখমী সনদ ইস্যুকারী বোর্ডের সামনে ভিকটিমের উপস্থিতি নিশ্চিত করার চেষ্টা করতে হবে। জরুরী বিভাগের প্রাথমিক চিকিৎসা পরবর্তী জখমীকে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হলে, সেক্ষেত্রে উক্ত ওয়ার্ডে অবস্থান করা রোগীর রেজিস্টার পর্যালোচনা করে জরুরী বিভাগের রেজিস্টার ও ওয়ার্ডে থাকা রেজিস্টারের তথ্যাবলী সমন্বয় করে পরিপূর্ণ জখমী সনদ সরবরাহ করতে হবে।
জখমী সনদ ইস্যুকালে সংশ্লিষ্ট এক্স-রে রিপোর্ট, সিটি ক্যান রিপোর্ট, আল্ট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্ট, ডিসচার্জ সার্টিফিকেট (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), অন্যান্য ডায়াগনস্টিক রিপোর্ট ও আনুসাঙ্গিক কাগজপত্র ও ফিল্ম জখমী সনদের সাথে সংযুক্ত করে দিতে হবে। তাছাড়া উক্ত জখমী সনদের সাথে জখম সংক্রান্ত রেজিস্টারের সংশ্লিষ্ট পৃষ্ঠার সত্যায়িত ছায়াকপি সংযুক্ত করতে হবে।
ধর্ষণ সংক্রান্ত অপরাধের ক্ষেত্রে ভিকটিম/অপরাধের শিকার ব্যক্তিকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা পরীক্ষা করতে হবে, প্রয়োজনে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞা চিকিৎসক কর্তৃক উক্ত রিপোর্ট প্রদানের ব্যবস্থা করতে হবে।
পোস্ট মর্টেম প্রতিবেদন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের স্বাক্ষরের নীচে সীলসহ স্পষ্ট নাম, পদবী, মোবাইল নম্বর ও তারিখ ব্যবহার করতে হবে।
এ ব্যাপারে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নেজারত বিভাগের নাজির মো. আবু হানিফ বলেন, আদালতে মামলায় বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যগতসনদ প্রদানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিধি বিধান অনুসরন করছেনা। এতে আইন আদালতে ব্যহত ও ন্যায় বিচারে ব্যাহত হচ্ছে। এ অবস্থায় ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ও মামলার বিচার কাজে সঠিক সিদ্ধান্ত প্রদানের সুবিধার্থে ক্রিমিনাল প্রসিডিউরের বিধান মতে আমাদের স্যার জাস্টিস অব দি পিস ক্ষমতা মূলে ডাক্তার/ চিকিৎসকদের এই ১৩ দফা প্রতিপালনের নির্দেশ দিয়েছেন।