মুক্তিযুদ্ধে ব্যবহৃত অস্ত্র বিক্রি-হস্তান্তরে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরও বাড়ল
প্রকাশ : 2021-08-29 16:03:28১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত অস্ত্র বিক্রি ও হস্তান্তর থেকে বিরত রাখতে দেওয়া নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়িয়েছেন হাইকোর্ট বিচারপতি মো. মজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি মো. কামরুল হোসেন মোল্লার সমন্বয়ে গঠিত ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ। আজ রোববার আদেশ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে ৯ সেপ্টেম্বর পরবর্তী শুনানির জন্য দিন রেখেছেন আদালত।
'মুক্তিযুদ্ধের অস্ত্র বেচতে চায় সরকার' শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্রগুলো জাতীয় ঐতিহ্য হিসেবে সংরক্ষণের নির্দেশনা চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জে আই খান পান্না এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষে ১৫ নভেম্বর একটি রিট করা হয়। সেই রিটের ওপর আজ আদেশ দেন হাইকোর্ট।
রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে গত বছরের ২৪ নভেম্বর হাইকোর্ট রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন। একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্রগুলো বিক্রি ও হস্তান্তরের কার্যক্রম কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, এটিসহ কয়েকটি বিষয় রুলে জানতে চাওয়া হয়। প্রতিরক্ষাসচিব, অর্থসচিব, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাণিজ্যসচিবসহ বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত অস্ত্র বিক্রি ও হস্তান্তর থেকে বিরত রাখতে ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্রগুলো জাতীয় ঐতিহ্য হিসেবে সংরক্ষণে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানিয়ে বিবাদীদের ছয় মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় আজ রিটটি শুনানির জন্য ওঠে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শামছ্ উদ্দিন বাবুল ও সৈয়দা নাসরিন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. শাহীনুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী।
ক্রম অনুসারে বিষয়টি উঠলে আইনজীবী সৈয়দা নাসরিন বলেন, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্রগুলো সংরক্ষণে নেওয়া পদক্ষেপ জানিয়ে ছয় মাসের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এখনো কোনো প্রতিবেদন পাইনি।’ রিট আবেদনকারীদের অপর আইনজীবী শামছ্ উদ্দিন বাবুল বলেন, বিষয়টি মনে করিয়ে দিয়ে নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ বাড়িয়ে দিতে পারেন। কেননা ছয় মাসের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল।
আদালত বলেন, বিবাদীরা প্রতিবেদন (নির্দেশনা বাস্তবায়নের অগ্রগতি) দিয়েছেন? নির্ধারিত সময়ে নোটিশ কি দেওয়া হয়েছে? তখন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী বলেন, নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
তখন আদালত বলেন, ‘তাহলে কেন প্রতিবেদন দিলেন না? যেভাবেই থাকুক না কেন, হলফনামা দিয়ে একটি কমপ্লায়েন্স (অগ্রগতি) দিয়ে বলবে তো, কোথায় কী অবস্থায় আছে। ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট একটি রিপোর্ট চাইছি।’
একপর্যায়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নওরোজ মো. রাসেল চৌধুরী বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রতিবেদন দাখিলের বেশির ভাগ সময় বিধিনিষেধে কেটেছে। দুই সপ্তাহ সময় চাইছি। হালনাগাদ তথ্য জানানো হবে।’ পরে আদালত বলেন, বিষয়টি ৯ সেপ্টেম্বর কার্যতালিকায় আসবে। নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ ছয় মাসের জন্য বাড়ানো হলো।