মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ লোহার তার দিয়ে বাধা হেলে পড়া ব্রীজ
প্রকাশ : 2023-08-05 18:04:38১ | অনলাইন সংস্করণ
নিউজ ডেস্ক
মাদারীপুরের ডাসারে ব্রীজের পিলার লোহার তার দিয়ে বেধে রাখা হয়েছে। মারাত্মক ঝুকি নিয়ে কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ যানবাহন পারাপার হচ্ছে। মাদারীপুর জেলার ডাসার উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নে শশিকর বাজারের খালে উপর নির্মিত স্থানীয়দের ব্যবহৃত একটি ব্রিজের পিলার হেলে পড়েছে। পিলারটি লোহার তার দিয়ে বেধে মারাত্মক ঝুকিতে যানবাহন পারাপার হচ্ছে।
প্রতিদিন এ সড়কে দিয়ে শতাধিক ব্যাটারিচালিত রিকশা ও মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যান চলাচল করে। কিন্তু ব্রিজটি হেলে পড়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে যাওয়ার পথে এসব যানবাহন। কিছু কিছু যানবাহন তাদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এই ব্রিজটি দিয়ে পার হয়। এছাড়া রয়েছে ব্রিজের দুই পাশে স্কুল ও কলেজ। এই ব্রিজ দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই এই ব্রিজ দিয়ে পার হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাসহ স্কুল, কলেজ মাদরাসার শিক্ষার্থীরা, বাজারে আসা লোকজন এবং পথচারীরা। এদিকে খালের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বেড়েছে আতঙ্ক। স্হানীয়দের দাবি দ্রুত এই সেতুটি সংস্করণ
করে দেওয়ার জন্য।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এলজিইডি ৩০ বছর আগে নবগ্রাম শশিকর খালের ওপর ব্রিজটি নির্মাণ করে। দীর্ঘদিন ব্রিজটি সংস্কার না হওয়ায় কয়েক বছর আগে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়ে। ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়েই প্রতিদিন ৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রছাত্রীসহ কয়েক হাজার মানুষ চলাচল করে আসছে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে শশিকর বালিকা বিদ্যালয়, শশিকর মাধ্যমিক বিদ্যালয়, শশিকর মহাবিদ্যালয়, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় | দীর্ঘ ছয় বছর আগে যখন ব্রিজের প্রথম পিলার আস্তে আস্তে হেলে পরে তখন স্থানীয়রা মিলে পাইলিং থেকে পিলার পযর্ন্ত লোহার তার দিয়ে বেঁধে দেয়। দীর্ঘদিন ধরে পুরানো এই ব্রিজটি নড়বড়ে হয়ে মরণফাঁদে পরিণত হয়েছে। স্থানীয় ভুদেব হালদার বলেন, আমাদের এই ব্রিজ দিয়ে
যাতায়াতে অনেক ভয় করে। পান্নু বাড়ৈ বলেন, এই সেতু দিয়ে আমাদের ছেলেমেয়েরা স্কুলে যেতে এখন অনেক ভয় পায়। সেতুতে উঠতে তারা ভয় পায় কখন ওই যে পিলারের সাথে যে লোহার তার দিয়ে বাধানো তা যদি ছিড়ে ভেঙ্গে যায় এই ভয়ে তারা ব্রিজে পার হতে চায় না। এ কারণে তারা এখন স্কুলেও যেতে চাচ্ছে না। সৌরভ হালদার নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, এই ব্রীজটি এতোই ভাঙা যে এটি দিয়ে স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা চলাফেরা করতে অনেক ভয় পায়। কখন যেন ভেঙে পড়ে যায়। এলাকাবাসী মিলে কোন মতে একটা লোহার তার দিয়ে বেঁধে রেখেছি। কখন পিলার থেকে মাটি সরে একেবারে ব্রিজটি তলে পড়ে যাবে। তাই আমরা আতঙ্কে থাকি। সরকার যেন তাড়াতাড়ি এটা মেরামাত করে দেয়। তাহলে আমরা এখান দিয়ে শান্তিতে চলাফেরা করতে পারব। শশিকর উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শুনিল কুমার হালদার বলেন, সেতু হেলে পড়ায় শুধু জনসাধারণের চলাচলে দুর্ভোগই নয় প্রতিষ্ঠানের ৬০০ শিক্ষার্থীকে বহুপথ ঘুরে বিদ্যালয়ে আসতে হচ্ছে। এছাড়া এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র হওয়ায় চলাচলে আরো দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। নবগ্রাম ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান দুলাল তালুকদার সেতু ঢলে পড়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সেতুটি এলজিইডির আওতাধীন শশিকর খালের ওপর ৩০ বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছিল। প্রথমে এটির পিলার হেলে পরে। এলাকাবাসী মিলে ওই হেলে পরা পিলারটাকে লোহার তার দিয়ে বেঁধে দিয়েছে। এখন ব্রিজটি দিয়ে মানুষ আতঙ্কে পারাপার হচ্ছে।
এ বিষয়ে কালকিনি এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী রেজাউল করিম সেতু হেলে জনদুর্ভোগের কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি আমাকে চেয়ারম্যান অবগত করেছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে সংস্কারের ব্যবস্থা নেওয়া হবে।